গণঅভ্যুত্থানের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ আবারও তার পরিচিত সেই টি-শার্টে মঞ্চে হাজির হয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি টি-শার্ট পরেই তিনি পরিচিত ছিলেন, এমনকি অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ অনুষ্ঠানেও তিনি একই পোশাক পরেছিলেন।
আজ শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে সেই চিরচেনা টি-শার্ট পরেই তিনি মঞ্চে ওঠেন। বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ স্লোগানে মুখরিত ছিল, এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে তরুণ নেতারা মঞ্চে উঠে অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেখানে ছিলেন হাসনাত আব্দুল্লাহকে। ওই সেই পুরনো 'ঐতিহাসিক' জার্সিতে। বক্তব্যও দিয়েছেন তিনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, আমরা ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের কবর রচনা করেছি।
সংসদ ভবনে কে যাবে সেটি নির্ধারণ করবে বাংলাদেশ, ভারত থেকে নির্ধারণ হবে না। আমরা একটা সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না।
জার্সিটা শুধু কাপড় নয়, এটা এক অধ্যায়ের সাক্ষী। ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই রক্তঝরা বিকেল। হল ছাড়ার নির্দেশ আর পুলিশের হুমকির মুখে হাসনাত বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, এটা আমার ক্যাম্পাস, আপনি চলে যান।
ইতিহাসের পাতায় লেখা হয়ে যায় তার সেই সাহসী উচ্চারণ।
তারপর ৮ আগস্ট, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে আবারও সেই জার্সি গায়ে চাপিয়ে হাজির হন হাসনাত। সেদিন তার পোশাক শুধু এক ব্যক্তির পরিচয় বহন করেনি, বহন করেছিল এক পুরো প্রজন্মের প্রতিরোধের গল্প।
সময়ের আবর্তে সেই জার্সিটাই হয়ে ওঠে প্রতীক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা ভালোবাসায় বানিয়ে ফেলে একই নকশার কয়েকশো জার্সি। লাল-সবুজের এই দেশে আকাশি রঙের সেই পোশাক হয়ে ওঠে প্রতিবাদের, প্রতিরোধের আর পরিবর্তনের প্রতীক।
আজ নতুন দলের আত্মপ্রকাশের দিনও হাসনাত সেই একই জার্সি পরে দাঁড়িয়ে আছেন। ইতিহাস কি নিজেকে আবারও নতুন করে লিখছে? জনতার চোখে জল চিকচিক করছে, কণ্ঠে অদম্য প্রত্যয়—পরিবর্তন আসবেই!
জানা গেছে, জাতীয় নাগরিক পার্টির সংগঠক হিসেবে দক্ষিণাঞ্চলের দায়িত্ব নিচ্ছেন হাসনাত আবদুল্লাহ। তার নেতৃত্বে নতুন এই দল কীভাবে সামনের দিনগুলোতে পথচলা শুরু করবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে নানা আলোচনা।