রোহিঙ্গা ও ইউএসএআইডি নিয়ে গোপন পরিকল্পনা ফাঁস করল রয়টার্স!

বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তা বন্ধ করতে চেয়েছিল ইউ/এস/এ/আই/ডি। বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা ও লেবাননের জন্য প্রস্তাবিত সব কার্যক্রম গুটিয়ে আনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন সংস্থাটির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা পিটার মারক্কো। এমন দাবি করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের অর্থায়নে পরিচালিত হয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় বৈদেশিক সহায়তা সংস্থা ইউ/এস/এ/আই/ডি। ডনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়ার পর এ দাতব্য সংস্থার ব্যয়কে অপচয় উল্লেখ করে বিশ্বব্যাপী সব প্রকল্প স্থগিত কিংবা বাতিল করেন। ইউ/এস/এ/আই/ডি গুটিয়ে আনার কার্যক্রম তদারকির দায়িত্ব দেন ঘনিষ্ঠ ও আস্থাভাজন প্রভাবশালী কর্মকর্তা পিটার মারক্কোকে।

পিটার ইউ/এস/এ/আই/ডি’র ভারপ্রাপ্ত উপপ্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পান। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি এক ইমেইলে তিনি বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এবং লেবাননের জন্য দাতব্য সহায়তা পর্যাক্রমে বন্ধ করে দেয়ার প্রস্তাব দেন। একই ইমেইলে তিনি মার্কিন সাহায্যের জন্য রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ও লেবাননের কাছ থেকে কৃতজ্ঞতার প্রকাশও দেখতে চেয়েছিলেন বলে দাবি করেছে রয়টার্স।

ইমেইলটির সত্যতা যাচাই করে রয়টার্স জানিয়েছে, মারক্কো ওই ইমেইলে ইউ/এস/এ/আই/ডি’র মানবিক সহায়তা কার্যক্রম বিষয়ক ব্যুরোর প্রধান টিম মেইজবার্গারকে একটি ‘অ্যাকশন মেমোর’ খসড়া করতে বলেছিলেন। এর মাধ্যমে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশ ও আশেপাশের দেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী ও লেবাননের মার্কিন সাহায্যের ওপর ‘অস্বাভাবিক নির্ভরতার’ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর নজর কাড়ার চেষ্টা করা হয়।

মারক্কোর পরিকল্পনা ও আকাঙ্ক্ষা সম্পর্কে অবগত একটি সূত্র রয়টার্সকে ইমেইলটির সত্যতা নিশ্চিত করে। তারা জানান, ট্রাম্প প্রশাসনের নিয়োগ দেয়া ইউ/এস/এ/আই/ডি’র এ করমকর্তা রোহিঙ্গাদের জন্য বরাদ্দ সহায়তা ধীরে ধীরে তুলে নিতে চেয়েছিলেন।

অবশ্য মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। ইমেইলটির প্রেরক ও প্রাপক, মারক্কো ও মেইজবার্গারের কাছে মন্তব্য চাইলেও তাৎক্ষণিকভাবে তাদের দিক থেকে সাড়া পায়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। এমনকি মারক্কো যে মেমোটি বানাতে বলেছিলেন, মেইজবার্গ সেটি রুবিওকে পাঠিয়েছেন কি না সেটিও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এদিকে ডনাল্ড ট্রাম্প তার প্রশাসনের ফেডারেল ব্যয় কমানোর অংশ হিসেবে নতুন এক বিভাগ গঠন করে তার দায়িত্ব তুলে দেন ধনকুবের ইলন মাস্কের হাতে। ট্রাম্পের এই ঘনিষ্ঠ সহযোগী ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সির দায়িত্ব নিয়েই ইউ/এস/এ/আই/ডি’কে যত সম্ভব ছোট করে আনার উদ্যোগ নেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সংস্থাটির হাজারো কর্মী ও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্তদের বরখাস্ত করা হয়। অবশিষ্টাংশকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে জুড়ে দেন ইলন মাস্ক। 

ট্রাম্প শপথ নেয়ার পরই এক নির্বাহী আদেশে ৯০ দিনের জন্য বিশ্বজুড়ে দাতব্য সংস্থাটির প্রায় সব সহায়তা স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন। এই সময়ের মধ্যে ইউ/এস/এ/আই/ডি’র সহায়তা কর্মসূচিগুলো ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন। অবশ্য রোহিঙ্গা সংকট, লেবাননের খাদ্য সংকট ও ফিলিস্তিনের গাজায় মানবিক বিপর্যয় বিবেচনায় ২৪ জানুয়ারি এই স্থগিতাদেশে ছাড় দেন রুবিও।

এসএম/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

দেশের বাজারে স্বর্ণের দামে রেকর্ড Mar 17, 2025
img
২০১৪ সালে আ.লীগ ও বিএনপি-জামায়াতের কী সমঝোতা হয়েছিল, জানালেন সাবেক সেনাপ্রধান Mar 17, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্রের কাছে স্ট্যাচু অব লিবার্টি ফেরত চাইলেন ফরাসি এমপি Mar 17, 2025
img
ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতি ছাড়লেন এসি মিজান Mar 17, 2025
img
৯৫ দিন ধরে সাগরে ভাসছিলেন, অবশেষে উদ্ধার Mar 17, 2025
img
ভারতে বিশ্ববিদ্যালয়ের খোলা জায়গায় নামাজ পড়ায় শিক্ষার্থী গ্রেফতার Mar 17, 2025
ঈদ যাত্রায় রাস্তায় ডা'কা'ত''দের নিয়ে যা বললেন হাইওয়ে পুলিশ কর্মকর্তা Mar 17, 2025
ডিবি হারুনের সম্পদের খোঁজে দুদক কর্মকর্তাদের নাভিশ্বাস Mar 17, 2025
হাসিমুখে আদালতে শাহজাহান খান Mar 17, 2025
যে গ্রামে ছয় কোটি টাকার সেতুতে উঠতে হয় কাঠের মই বেয়ে Mar 17, 2025