হামজাকে ভালোবেসে ধর্ম ত্যাগ করেন অলিভিয়া

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইংলিশ লিগের শেফিল্ড ইউনাইটেডের ফুটবলার হামজা দেওয়ান চৌধুরী খুব কম বয়সেই বিয়ে করেছেন। পারিবারিক সূত্রে জানা যায় আঠারো বছর বয়স পেরোতেই হামজার বিয়ে দেন বাবা মোরশেদ চৌধুরী। ২০১৭ সালে বিয়ে হয় হামজা-অলিভিয়ার।

এর আগে দুজনের মধ্যে ভালোবাসা ছিল। তখনো ফুটবলে হামজার নাম খ্যাতি ছড়ায়নি। দুজনের সম্পর্কের কথা জানতে পারেন বাবা মোরশেদ চৌধুরী। 'হামজা, মেয়েটাকে আমার কাছে নিয়ে আসো' অলিভিয়াকে বাসায় ডেকে আনলেন হামজা। ব্রিটিশ কন্যা অলিভিয়াকে জানানো হয় 'আমরা বাঙালি এবং মুসলমান, হামজাকে যদি পছন্দ করো তাহলে বিয়ে করতে হবে। আর হামজাকে বিয়ে করতে হলে তোমাকে মুসলমান হতে হবে।' শর্তটা শুনেই আকাশ ভেঙে পড়ে ব্রিটিশ কন্যার।

অলিভিয়া প্রথমে তার পরিবারের আপত্তির কথা তুললেন। ভয়ভীতি ছিল। মুসলমানদের প্রতি ভুল ধারণা ছিল, সত্য প্রকাশে সেগুলো ভেঙে দেওয়া হয়েছে। হামজার পরিবার থেকে মুসলিম ধর্মের নিয়ম-কানুনগুলো সহজেই বুঝাতে পেরেছিলেন অলিভিয়াকে। তাতে সন্তুষ্ট হলেও ইতস্ত করছিলেন অলিভিয়া, মা বাবাকে জানানো যাবে না।' সবকিছু জেনে শুনে অলিভিয়া তার পরিবারকে না জানিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং মোরশেদ চৌধুরীর বাসায় ঘরোয়া অনুষ্ঠানে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করা হয়। মোরশেদ চৌধুরী-রাফিয়া চৌধুরীকে অনেকেই নাকি বলেছেন, 'এত ছোট (হামজা) একটা ছেলেকে বিয়ে দিচ্ছে, মোরশেদ করতেছে কী, আমি কারো কথা শুনিনি।' লেস্টার সেন্ট্রাল মসিজিদের ঈমামকে দিয়ে বিয়ে পড়ানো হয়।

এক বছর এক সঙ্গে ছিলেন সবাই। হামজা টাকা কামাতে শুরু করলেন। পরিবার বড় হতে লাগল। হামজা আলাদা বাসায় উঠলেন। প্রায় আট বছর হতে চলল হামজার সঙ্গে অলিভিয়ার বিয়ে হয়েছে। সে কি এখনো ইসলাম ধর্ম পালন করছে? মোরশেদ চৌধুরী জানালেন মেয়েটা এখন নামাজ পড়ে, রোজা রাখে। মিলাদ পড়ে। আমার বাসায় সপ্তাহে একদিন মিলাদ হয়। তারা চলে আসে। পাশ্চত্যের পোশাক পরিবর্তন করেছে।' পরবর্তী সময়ে অলিভিয়ার পরিবার তার বিয়ে মেনে নিয়েছে। তিনি বলেন, 'অলিভিয়ার মাধ্যমে তার পরিবার হারাম-হালাল খাদ্য সম্পর্কে জেনেছে। সেটি মেনেও চলে, আলহামদুল্লিাহ।'

হামজা-অলিভিয়ার ঘরে তিন সন্তান। এক কন্যা দুই পুত্র। কন্যা দেওয়ান এনায়া হুসাইন চৌধুরী, দেওয়ান ঈসা হুসাইন চৌধুরী এবং দেওয়ান ইউনুস হুসাইন চৌধুরী। হামজা নিজেই নবির নামে সন্তানদের নাম রেখেছেন কথাগুলো বলতে বলতে মোরশেদ চৌধুরী ঘর থেকে বেরিয়ে পুরো বাড়িটা ঘুরে দেখালেন। বাড়ির ভেতরেই এক তলা মসিজদের দেওয়ালঘেঁয়ে মোরশেদ চৌধুরীর বাবা দেওয়ান আব্দুল খালেক চৌধুরী এবং দাদা দেওয়ান আব্দুল গনি চৌধুরী ও তার মা কাজী শফিকুন নেসা চৌধুরীর কবর। নারীদের নামাজ পড়ার আলাদা ব্যবস্থা। বাড়ির ভেতরে নিয়ে দেখালেন। এতিমখানা করা হয়েছে। হামজার স্ত্রী অলিভিয়া এতিমখানার জন্য টাকা পাঠায়। বাড়ির গেটে লেখা রয়েছে দেওয়ান ঈসা হুসাইন হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা, ২০২২ সালে চালু করা হয়।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
যুক্তরাষ্ট্রের কাছে স্ট্যাচু অব লিবার্টি ফেরত চাইলেন ফরাসি এমপি Mar 17, 2025
img
ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতি ছাড়লেন এসি মিজান Mar 17, 2025
img
৯৫ দিন ধরে সাগরে ভাসছিলেন, অবশেষে উদ্ধার Mar 17, 2025
img
ভারতে বিশ্ববিদ্যালয়ের খোলা জায়গায় নামাজ পড়ায় শিক্ষার্থী গ্রেফতার Mar 17, 2025
ঈদ যাত্রায় রাস্তায় ডা'কা'ত''দের নিয়ে যা বললেন হাইওয়ে পুলিশ কর্মকর্তা Mar 17, 2025
ডিবি হারুনের সম্পদের খোঁজে দুদক কর্মকর্তাদের নাভিশ্বাস Mar 17, 2025
হাসিমুখে আদালতে শাহজাহান খান Mar 17, 2025
যে গ্রামে ছয় কোটি টাকার সেতুতে উঠতে হয় কাঠের মই বেয়ে Mar 17, 2025
দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতকে অর্থনৈতিক পরাশক্তি হতে দিচ্ছে না চীন! Mar 17, 2025
হাই বাজেট ‘কৃষ ৪’ নির্মাণে সাহস পাচ্ছেননা প্রযোজকরা Mar 17, 2025