মস্কো এবং কিয়েভের মধ্যে ভবিষ্যতের যুদ্ধবিরতি তদারকির জন্য পশ্চিমা শান্তিরক্ষী বাহিনীর অংশ হিসেবে যুক্তরাজ্য 'বছরের পর বছর' সময়ের জন্য ইউক্রেনে হাজার হাজার সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনা করছে। সূত্রের বরাত দিয়ে রোববার (১৬ মার্চ) ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টাইমস এ খবর জানিয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, ইউক্রেনে কোন কোন ইউরোপীয় দেশ সেনা মোতায়েন করতে চায়, এ নিয়ে শনিবার একটি ভার্চুয়াল বৈঠক হয়েছে। এই বৈঠকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার প্রস্তাবের রূপরেখা তুলে ধরেছেন বলে জানা গেছে।
স্টারমার চলতি মাসের শুরুতে প্রথম ফ্রান্সের সঙ্গে জোটের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিলেন। এর লক্ষ্য ছিল সম্ভাব্য মার্কিন সহায়তা কমানোর উদ্বেগের মধ্যে ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখতে ইচ্ছুক দেশগুলোকে একত্রিত করা।
শনিবারের বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে স্টারমার বলেন, কয়েক ডজন অংশীদার দেশ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের ধারণাকে সমর্থন করে।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা সচিব জন হিলি এই সপ্তাহে লন্ডনে সামরিক প্রধানদের সঙ্গে দেখা করার জন্য সৈন্য সংখ্যা এবং মোতায়েনের সময়সীমাসহ বিশদ আলোচনা করবেন।
দ্য টাইমসের মতে, এই বাহিনীতে ৩০,০০০ পর্যন্ত সৈন্য থাকতে পারে, যার বেশিরভাগই সরবরাহ করবে যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্স।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, বিশেষ করে ব্রিটিশ উন্মুক্তভাবে সেনা মোতায়েনে থাকবে।
স্টারমার উল্লেখ করেছেন, মস্কো এবং কিয়েভ একটি শান্তি চুক্তিতে সম্মত হওয়ার পরেই কেবল সৈন্য পাঠানো হবে, যার লক্ষ্য পর্যবেক্ষণ এবং তা বজায় রাখা।
শান্তিরক্ষী বাহিনীতে রাশিয়ান বাহিনীকে সম্পৃক্ত করার ক্ষমতা থাকবে কি না, সাংবাদিকরা জানতে চাইলে স্টারমার জবাব দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, আগামী দিনে এ বিষয় এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে।
এদিকে, রাশিয়া স্পষ্টভাবে ইউক্রেনে যে কোনো পশ্চিমা সামরিক উপস্থিতি প্রত্যাখ্যান করেছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ গত মাসে বলেছিলেন, নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে পশ্চিমা এই ধারণাটি রাশিয়ার কাছে 'সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য'।
রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের বর্তমান ডেপুটি চেয়ারম্যান ও প্রাক্তন রাশিয়ান রাষ্ট্রপতি দিমিত্রি মেদভেদেভ গতকাল রোববার সতর্ক করে দিয়েছেন যে, শান্তিরক্ষা আদেশের অধীনে ন্যাটোর বাহিনী মোতায়েনের ফলে মস্কো এবং সামরিক ব্লকটির (ন্যাটোর) মধ্যে সরাসরি যুদ্ধ শুরু হবে।
ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করার জন্য মার্কিন-রাশিয়ার প্রচেষ্টার মধ্যে স্টারমারের জোট আলোচনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ইউক্রেন সংঘাতে শান্তি চুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করবেন বলে আশা করছেন।
আরএইচ