ষড়যন্ত্রের কথা আমরা অনেক শুনি, কিন্তু ষড়যন্ত্রের কথা বলে সবকিছু জায়েজ করে দিয়েন না বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। সরকারকে উদ্দেশ্যে করে তিনি আরও বলেন, এখানে প্রশাসন আছে, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা আছে, যার লোকবল আছে; এর মধ্যে অনেক দোসর যারা বড় বড় পদে ছিল, তারা এখনও বহাল তবিয়তে আছে।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সন্ধ্যায় বরিশাল নগরের সদর রোডস্থ কীর্তনখোলা মিলনায়তনে গণসংহতি আন্দোলন বরিশাল জেলা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত ‘সংবিধান সংস্কার পরিষদের নির্বাচন ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও ইফতার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জোনায়েদ সাকি বলেন, নারীর ওপর যখন নিপীড়ন হয়, কোনো মাজারে হামলা কিংবা কোনো ব্যক্তির ওপর মব আক্রমণ হয় তখন মানুষ উত্তেজিত তো হবেই। এটা কি অভ্যুত্থানের চেতনা, অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা? অভ্যুত্থানের পর বলা হয়েছে, প্রত্যেকের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে, প্রত্যেক ধর্ম-গোষ্ঠীর ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে।
তিনি বলেন, এই সরকার যতদিন দায়িত্বে আছে দেশটা ভালোভাবে চালানো তাদেরই দায়িত্ব। প্রতিষ্ঠানগুলো ভেঙে পড়ায় পুলিশ ভেঙে পড়েছে, প্রশাসন ঠিকভাবে কাজ করে না বিধায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে। দ্রব্যমূল্যের অবস্থা খুব খারাপ ছিল, বারবার আমরা আওয়াজ তুলেছি, সরকার কিছুটা পদক্ষেপ নিয়েছে ফলে আমরা দেখছি রমজান মাসে অনেকগুলো পণ্য সহনশীল জায়গাতে আছে। তাহলে সরকার যদি উদ্যোগ নেয় কিছু কাজ হয়।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বলেন, সময় কিছুটা লাগে, তবে আমরা কিন্তু ৭ মাস শেষে ৮ মাসে পা রেখেছি। এখন যদি বলেন, পুলিশ ঠিকভাবে কাজ করছে তখন কিন্তু মানুষ শুনতে চাইবে না। জবাবদিহিতা মানুষ চায়। কোথায় পুলিশ শোনে না, কারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেনি, কি ব্যবস্থা নিয়েছেন আপনি এ বিষয়গুলো মানুষ জানতে চায়। কোথায় কোন প্রশাসন অবহেলা করছে, দীর্ঘসূত্রিতা করছে, মানুষকে ঘোরাচ্ছে আর এসবের বিষয়ে সরকার কি ব্যবস্থা নিয়েছে মানুষ তা জানতে চায়।
তিনি আরও বলেন, জুলাই আন্দোলনে বাংলাদেশের সব ধর্ম, জাতি ও বর্ণের মানুষের অংশগ্রহণ ছিল। যারা শাহাদত বরণ করেছে, ৩০ হাজারের ওপরে গুরুতর আহত হয়েছে, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন অসংখ্য মানুষ, কয়েক হাজার মানুষের চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ৫ শত মানুষ পুরোপুরি অন্ধ হয়ে গেছে। কত লাখ কোটি মানুষ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিল তা আহত ও শাহাদত বরণকারীদের সংখ্যা দেখেই বোঝা যায়। আমরা প্রথম থেকেই বলেছিলাম প্রত্যেকের দায়িত্ব নিতে হবে সরকার-রাষ্ট্রকে। যারা শাহাদাত বরণ করেছে তাদের শহিদের মর্যাদায়, জাতীয় বীরের মর্যাদায় ভূষিত করতে হবে এবং যারা আহত হয়েছেন তাদের জীবনের দায়িত্ব নিতে হবে। কিন্তু সেই কাজেও নানান দুর্বলতা, অভিযোগ আমরা দেখেছি, কিন্তু আমরাও বার বার কথাটা ভুলে যাচ্ছি।
গণসংহতি আন্দোলনের বরিশাল জেলা সমন্বয়কারী দেওয়ান আবদুর রশিদ নীলুর সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ডসহ প্রমুখ।
এসএম/টিএ