রংপুরের বদরগঞ্জ থানার সামনে এক সাংবাদিককে বেধড়ক পিটিয়েছে পুলিশের ৪ সদস্য। গুরুতর আহত হয়ে ওই সাংবাদিক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে থানার ওসির দাবি, এটি ‘ভুল বোঝাবুঝি’ ছিল। সমাধানও হয়েছে।বুধবার (১৯ মার্চ) দুপুর ২টার দিকে বদরগঞ্জ থানার সামনে এ ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশের মারধরের শিকার সাংবাদিকের নাম এম এ সালাম বিশ্বাস। তিনি আমার দেশ পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত।আহত ওই সাংবাদিক বর্তমানে বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি ঠিকমতো উঠে দাঁড়াতে পারছেন না।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী সাংবাদিক সূত্রে জানা গেছে, থানার সামনের একটি চায়ের দোকানের বেঞ্চে বসে ওই সাংবাদিক একটি সংবাদ লিখছিলেন। এ সময় তার পাশেই পৌরসভার গেটে একটি পুলিশের গাড়িতে পুলিশ সদস্যদের মধ্যে তুমুল হইচই ও বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। ঘটনাস্থলে গেলে কনস্টেবল আল আমিন তার ওপর চড়াও হন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। পরে মোবাইলের ক্যামেরা চালু করে তাকে গালাগালির কারণ জিজ্ঞেস করতেই তাকে ঘুষি মারেন।
এ সময় এএসআই রবিউলসহ আরও তিন পুলিশ সদস্য মিলে তাকে বেধড়ক পেটায়। পরে তাকে চ্যাংদোলা করে থানার ভেতরে নিয়ে যাওয়া হলে ওসি বের হন। তখন তারা তাকে ওসির সামনে আছাড় দেন। এ সময় ওসি ওই পুলিশ সদস্যদের তাকে না জানিয়ে একজনের সাথে এমন আচরণের কারণ জানতে চান। স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক মিলে এ ঘটনা মীমাংসার চেষ্টা করেন।
পুলিশের মারধরের শিকার ওই সাংবাদিক বলেন, হামলাকারী পুলিশ সদস্যরা মাফ চেয়ে থানায় তিন ঘণ্টা ধরে সমঝোতার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় তিনি ন্যায়বিচার দাবি করেছেন।
এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়ন-আরপিইউজে, রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাবসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন ও গণমাধ্যম কর্মীরা।
রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়ন-আরপিইউজের সাধারণ সম্পাদক সরকার মাজহারুল মান্নান বলেন, এটি একটি জঘন্যতম ঘটনা। গণমাধ্যমের কণ্ঠ চেপে ধরতে সাংবাদিকের ওপর হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
বদরগঞ্জ থানার ওসি আতিকুর রহমান বলেন, পুলিশ লাইন থেকে আসা পুলিশ ফোর্স চলে যাওয়ার সময় থানার গেটের বাইরে দুই সদস্যের মধ্যে ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়ে রাগারাগি-হট্টগোল হয়। এ সময় ওই সাংবাদিক ভিডিও করার জন্য তার সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা হয়। তবে ভুল-বোঝাবুঝির সমাধান হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার মো. আবু সাইম কালবেলাকে বলেন, আমরা শুনেছি ওখানে মারামারি হয়নি, ভুল-বোঝাবুঝি হয়েছে। বিষয়টি সমাধান হয়েছে। তবে ওই সাংবাদিক অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এমআর/এসএন