দুই প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল, ২৫টির স্থগিত

নিম্নমানের ৫২টি খাদ্যপণ্যের মধ্যে আরও দুটি পণ্যের উৎপাদক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করেছে জাতীয় মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বিএসটিআই। লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে ২৫টি পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের। বৃহস্পতিবার বিএসটিআইয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এ নিয়ে ওই ৫২ পণ্যের মধ্যে ১১টি পণ্যের উৎপাদক নয়টি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল এবং ৪৫টির লাইসেন্স স্থগিত করা হলো।

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের এস এস কনজ্যুমার প্রোডাক্টের ‘পিওর হাটহাজারী’ ব্রান্ডের মরিচের গুড়া এবং নওগাঁর কিরণ ট্রেডার্সের ‘কিরণ’ ব্রান্ডের লাচ্ছা সেমাইয়ের লাইসেন্স বাতিলের ঘোষণা আসে।

বিএসটিআইয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ওই সব পণ্যের মানোন্নয়ন করে আবার অনুমোদন না নেয়ার আগ পর্যন্ত উৎপাদনকারী, সরবরাহকারী, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের এসব পণ্য বিক্রি-বিতরণ, সংরক্ষণ ও বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন প্রচার থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট উৎপাদনকারীদের বিক্রীত মালামাল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ২৪ (চব্বিশ) ঘণ্টার মধ্যে বাজার থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ভোক্তাদেরও ওই সব পণ্য ক্রয় না করার অনুরোধ করা হয়েছে।

লাইসেন্স স্থগিত করা পণ্যগুলো হলো- বাঘাবাড়ী স্পেশাল ঘি, নিশিতা সুজি, মঞ্জিল হলুদের গুঁড়া, গ্রিন ল্যান্ডস মধু, শান হলুদের গুঁড়া, মধুমতি আয়োডিনযুক্ত লবণ, জেদ্দা লাচ্ছা সেমাই, নূর স্পেশাল আয়োডিনযুক্ত লবণ, অমৃত লাচ্ছা সেমাই, দাদা সুপার আয়োডিনযুক্ত লবণ, তিন তীর আয়োডিনযুক্ত লবণ, মদিনা-স্টারশিপ আয়োডিনযুক্ত লবণ, তাজ আয়োডিনযুক্ত লবণ, ডলফিন মরিচের গুঁড়া, ডলফিন হলুদের গুঁড়া, সূর্য মরিচের গুঁড়া, মধুফুল লাচ্ছা সেমাই, মিঠাই লাচ্ছা সেমাই, কিং ময়দা, ওয়েল ফুডের লাচ্ছা সেমাই, রূপসা ফারমেন্টেড মিল্ক, মেহেদী বিস্কুট, মিষ্টি মেলা লাচ্ছা সেমাই, মক্কা চানাচুর ও মধুবন লাচ্ছা সেমাই।

বুধবার লাইসেন্স বাতিল করা হয়- আল সাফি ড্রিংকিং ওয়াটার, নারজান ড্রিংকিং ওয়াটার, মর্ণ ডিউ পিওর ড্রিংকিং ওয়াটার, আর আর ডিউ ড্রিংকিং ওয়াটার, শান্ত ফুড প্রডাক্টস (পণ্য-টেস্টি, তানি ও তাসকিয়া), প্রিয়া ব্র্যান্ডের সফট ড্রিংক পাউডার ও বনলতা ঘি।

বুধবার লাইসেন্স স্থগিত করা ১৮টি পণ্য হলো- সরিষার তেলে সিটি ওয়েল মিল-গাজীপুর (তীর), গ্রিন ব্লিসিং ভেজিটেবল ওয়েল-নারায়ণগঞ্জ (জিবি), শবনম ভেজিটেবল ওয়েল-নারায়ণগঞ্জ (পুষ্টি), বাংলাদেশ এডিবল ওয়েল-নারায়ণগঞ্জ (রূপচাঁদা); সুপেয় পানির মধ্যে আররা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ (আররা), ডানকান প্রোডাক্ট (ডানকান), দীঘি ড্রিংকিং ওয়াটার (দীঘি); প্রাণ এগ্রো লিমিটেডের প্রাণ ব্র্যান্ডের লাচ্ছা সেমাই; হলুদের গুঁড়ার মধ্যে ড্যানিশ, প্রাণ ও ফ্রেশ। কারি পাউডারের মধ্যে প্রাণ ও ড্যানিশ; আয়োডিনযুক্ত লবণের মধ্যে এসিআই ও মোল্লা সল্ট; ধনিয়া গুঁড়ার মধ্যে এসিআই পিওর, নুডলসের মধ্যে নিউজিল্যান্ড ডেইরির নুডলস এবং চিপসের মধ্যে কাশেম ফুডের সান ব্র্যান্ড।

এর আগে ১২ মে বিএসটিআইয়ের পরীক্ষায় নিম্নমান প্রমাণিত হওয়ায় ৫২টি খাদ্যপণ্য অবিলম্বে বাজার থেকে প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এসব খাদ্যপণ্য বিক্রি ও সরবরাহে জড়িত লোকজনের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেয়া হয়। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতি এই নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রুলসহ এ আদেশ দেন। যতক্ষণ পর্যন্ত ওই ৫২ পণ্য বিএসটিআইয়ের পরীক্ষায় পুনরায় উত্তীর্ণ না হচ্ছে, ততক্ষণ এসব পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেয়া হয়। মাদকবিরোধী অভিযানের মতো খাদ্যে ভেজাল মেশানোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: