দেশের উত্তরে পুড়ছে, পূর্বে ডুবছে

একদিকে গ্রীষ্মের খরতাপে পুড়ছে বাংলাদেশের উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। বৃষ্টি হলে হয়তো গরম কিছুটা কমবে। তাই শুক্রবার জুমার নামাজে বিভিন্ন মসজিদে বিশেষ মোনাজাত করা হয়েছে। অন্যদিকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় কয়েকটি গ্রামে বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে।

শুক্রবার বিকেল তিনটায় পঞ্চগড়ে সর্বোচ্চ ৩৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস। বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র গরম আর দাবদাহে জনজীবনে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে।

ক’দিন ধরে টানা গরমের কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন রিকশা, ভ্যানচালক আর খেটে খাওয়া মানুষ। দাবদাহ থেকে বাঁচতে শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের ছাতা নিয়ে রাস্তায় চলাচল করতে দেখা গেছে। গরমের কারণে আধুনিক সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্রে নানা রোগে আক্রান্তদের ভর্তি হতে দেখা গেছে।

দিনে শহরের রাস্তাঘাট ও হাঁট বাজারে মানুষজনের চলাচল কমে গেছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না।

জেলা শহরের রামের ডাংগা মহল্লার ভাংরি ব্যবসায়ী হানিফ মোল্লা বলেন, ‘এমন তীব্র গরম এর আগে বোঝা যায়নি। তাই বৃষ্টির জন্য শুক্রবার জুমার নামাজে বিভিন্ন মসজিদে বিশেষ মোনাজাত করা হয়েছে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পূর্বাভাস কেন্দ্রের তথ্যমতে, কয়েক দিন ধরে জেলায় সর্বোচ্চ ৩৫ থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে তাপমাত্রা বিরাজ করছে।

এদিকে ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের কারণে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় কয়েকটি গ্রামে বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে।

উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডর নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র চক্রবর্তী জানান, ধলই নদের পানি বিপদসীমার ১৩৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

ঘোড়ামারা গ্রামের পানিবন্দি মনিপুরী থিয়েটারের নির্বাহী প্রধান সুভাশীস সিনহা বলেন, টানা বৃষ্টিতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ঘোড়ামারা ও নাজাত কোণা গ্রাম নিমজ্জিত হয়েছে।

ইতিমধ্যেই ঘোড়ামারা গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মণিপুরী থিয়েটার স্টুডিও নটমণ্ডপ, বাড়িঘর, গ্রামের রাস্তা ও ফসলি জমি নিমজ্জিত হয়ে গেছে। পানির গতি এত বেশি যে রাতে আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

পশ্চিম ঘোড়ামারা গ্রামের ১৫টি বসতঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ওই গ্রামের হোসেন আলীর মেয়ে কলেজছাত্রী রওশন আরা।

উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, ঘোড়ামারা গ্রামের প্রতিরক্ষা বাঁধের ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে তাগাদা দিয়েছেন।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on: