পপুলারে চিকিৎসার নামে ড্যাফোডিলের ছাত্রীকে চুমু, স্পর্শকাতর স্থানে হাত

রাজধানীর ধানমণ্ডিতে পপুলার হাসপাতালের এক ডাক্তারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এক ছাত্রী।

অভিযুক্ত ওই ডাক্তারের নাম মো. শওকত হায়দার। তিনি পপুলার হাসপাতালের চর্ম ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ এবং লেজার কসমেটিক সার্জন।

ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর অভিযোগ, ব্রণের ইনফেকশন আছে কিনা দেখার ছলে ওই ডাক্তার তার গালে চুমু দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, কোমরে ইনজেকশনের নাম করে তার শরীরে স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়েছেন তিনি।

ওই তরুণী আরও জানান, ঘটনার পর বাসায় ফিরে ডাক্তারের কাছে ফোন করে তার কৃতকর্মের কারণ জানতে চাইলে ডা. শওকত বলেন, ‘ওটা কিছু না, ইনফেকশন আছে কিনা দেখছিলাম।’

পরে তরুণী বলেন, ‘এমন তো আমি কখনো দেখিনি, ইনফেকশন আছে কিনা সেটা কোনো ডাক্তার কি ঠোঁট দিয়ে চেক করে?’ এসময় ডাক্তার শওকত হায়দার ওই তরুণীকে বলেন, তিনি দুঃখিত।

ঘটনার বিবরণে ওই তরুণী জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ত্বকে ব্রণের সমস্যা নিয়ে পরিচিত একজনের রেফারেন্সে প্রথমবার পপুলার হাসপাতালের ওই ডাক্তারের কাছে যান তিনি। পরবর্তীতে চিকিৎসার প্রয়োজনে আরো কয়েকবার প্রায় বাবার বয়সী ডাক্তারের কাছে যান তিনি।

সর্বশেষ গত শনিবার ১৫ জুন দুপুরে ওই তরুণী ডা. শওকতকে জানান তার ত্বকের সমস্যা আবার বেড়েছে, রাতে তিনি চেম্বারে বসবেন কিনা? এসময় ওই ডাক্তার চেম্বারেই আছেন জানিয়ে মেয়েটিকে তখনই যেতে বলেন।

পরে ডাক্তারের চেম্বারে গিয়ে ওই তরুণী জানতে চান তার সমস্যার কোনো স্থায়ী সমাধান আছে কিনা। এসময় সেই ডা. শওকত বলেন, যদি সে চায় তবে একটা ইনজেকশন দেয়া যেতে পারে। তবে ইনজেকশনটি কোমরে দিতে হবে। মেয়েটির ইতস্ততভাব দেখে ওই ডাক্তার তাকে বলেন, কাপড়ের উপর দিয়েই ইনজেকশন দেয়া যাবে।

মেয়েটি তার অভিযোগে জানায়, ইনজেকশন দিতে রাজি হয়ে পেসেন্ট টেবিলে শুলে ওই ডাক্তার মেয়েটির বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিতে থাকেন। মেয়েটি প্রতিবাদ করলে তিনি বলেন, কোথায় ইনজেকশন দিলে ভালো হয় তা চেক করে দেখছিলেন তিনি।

পরে ওই তরুণী সেই ইনজেকশন হাতেই দিতে বলেন। ওই তরুণী অভিযোগ করেন, ডাক্তার ইনজেকশন দেবার পর তুলা দিয়ে চেপে না ধরে তার জামার ভেতর হাত ঢুকিয়ে দেন। এ অবস্থায় মেয়েটি তাড়াতাড়ি সরে এসে ডাক্তারের ফিস দিয়ে চেম্বার থেকে বেরিয়ে আসতে চায়। এসময় সেই ডাক্তার আরেকবার তার গালের ইনফেকশনটি দেখতে চান। গাল দেখার ছলে ডা. শওকত ওই তরুণীকে চুমু দেন।

ঘটনার পরই পপুলার হাসপাতালের মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের প্রধান অচিন্ত্যকুমার নাগের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই তরুণী। এসময় তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে ডাক্তার শওকত হায়দার বলেন, অভিযোগ সত্য নয়। শুধুমাত্র এলার্জিজনিত রোগের কারণে তার হাতে ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে। শরীরের আর কোথাও স্পর্শ করা হয়নি। চুমু খাওয়ার ঘটনা একদম সত্য নয়। 

 

টাইমস/জেডটি

Share this news on: