ঢাবি শিক্ষার্থীদের ছাত্রলীগের মারধর

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজধানীর সাত সরকারি কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে বুধবার চতুর্থ দিনের মতো ভবনগুলোয় তালা ঝোলানোর চেষ্টা করেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তবে ছাত্রলীগের মারমুখী আচরণের কারণে তা সম্ভব হয়নি।

টানা তিন দিনের অচলাবস্থার পর বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু কিছু বিভাগে ক্লাস চললেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল কম। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবারও কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন।

মঙ্গলবার পর্যন্ত টানা তিন দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন একদল শিক্ষার্থী।

সাত কলেজ সংকটের স্থায়ী সমাধানের দাবিতে মঙ্গলবার উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেয় ছাত্রলীগ।

স্মারকলিপি দেয়ার আগে দুপুরে অপরাজেয় বাংলায় এক সমাবেশে ক্লাস-পরীক্ষায় বাধা সৃষ্টিকারীদের ‘দাঁতভাঙা জবাব’ দেয়ার ঘোষণা দেন সংগঠনের নেতারা। আর আন্দোলনকারীরা তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ ও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন।

ঘোষণা অনুযায়ী, ভোর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তাদের অবস্থানের কারণে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ও একাডেমিক কোনো ভবনে তালা ঝোলাতে পারেননি।

আন্দোলনকারীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০টির বেশি বিভাগের শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছেন আজ।

ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার ভোর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন এলাকা, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ এলাকা, রেজিস্ট্রার ভবন, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, উপাচার্য কার্যালয় এলাকা, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ এলাকা, বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার এলাকা, আইন অনুষদ এলাকা, কার্জন হল এলাকা, এ এফ মুজিবুর রহমান গণিত ভবন এলাকা এবং মোকাররম ভবন এলাকায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অবস্থান নেন।

ছাত্রলীগের এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ভাইয়ের নির্দেশে আমরা সকাল ছয়টা থেকে অবস্থান নিই।’

সকালে কর্মসূচিতে অংশ নিতে দোয়েল চত্বর থেকে টিএসসি অভিমুখী সড়কে আহনাফ তাহমিদ নামের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী রিকশায় করে যাচ্ছিলেন। ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের কাছে গিয়ে ঘটনা জানতে চাইলে তাকে আন্দোলনকারী ভেবে ব্যাপক মারধর করা হয়। এতে তার চোখের কর্নিয়া আঘাতপ্রাপ্ত হয়।

মারধরকারী হিসেবে সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শাখা ছাত্রলীগের কর্মী ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাবিল হায়দারকে শনাক্ত করেছেন আন্দোলনকারীরা।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের সামনে সংবাদ সম্মেলন করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

সেখানে আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী শাকিল মিয়া বলেন, ‘সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বারবার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে আসছে। তাই শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি চলতে থাকবে।’

 

টাইমস/এসআই

 

 

Share this news on: