যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার আগে ইরানের ইউরেনিয়াম ও পরমাণবিক সরঞ্জাম স্থানান্তরের বিষয়ে মার্কিন গোয়েন্দাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) মার্কিন বিমান বাহিনীর প্রধান জেনারেল ড্যান কেইনের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এ মন্তব্য করেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্র থেকে ইউরেনিয়াম স্থানান্তরিত করা হয়েছে নাকি সেখানেই ছিল সে বিষয়ে পিট হেগসেথ কোনো গোয়েন্দা তথ্য সম্পর্কে অবগত নন। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এ মন্তব্য থেকে বিষয়টি স্পষ্ট যে, ইরানের ইউরেনিয়াম সরানো নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছেন মার্কিন গোয়েন্দারাও।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইরানের পামাণবিক কেন্দ্র ফোরদোয় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর অনেকে বলেছেন যে, সেখান থেকে ইউরেনিয়াম অজ্ঞাত কোনো স্থানে স্থানান্তরিত হয়েছে। এমন পরিমাণ ইউরেনিয়াম সরানো হয়েছে যা দিয়ে একাধিক পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারবে ইরান।
এক্ষেত্রে ইরানের এমন কোনো জায়গা থাকতে পারে যা যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল বা জাতিসংঘের নজরে নেই। ফোরদোয় মার্কিন হামলার পর বেশ কয়েকটি স্যাটেলাইট ছবি প্রকাশিত হয়। সেখানে দেখা যায় ফোরদোর বাইরে বেশ কিছু ট্রাক অপেক্ষা করছে।
ইরানের এক কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে জানান, যুক্তরাষ্ট্রের হামলার আগেই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা যায় এমন ৬০ শতাংশ ইউরেনিয়াম অজ্ঞাত কোনো স্থানে সরিয়ে নিয়েছে ইরান।
সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য ফাঁস হওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপিত হলে মার্কিন হামলার সাফল্যকে অবমূল্যায়ন করার অভিযোগ করেন হেগসেথ।
এর আগে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রের তেমন ক্ষতি হয়নি, তারা কয়েক মাস পিছিয়ে গেছে মাত্র। তবে হেগসেথ বলেন, ওই (গোয়েন্দা) তথ্য কম বিশ্বাসযোগ্য।
সিআইএ পরিচালক জন র্যাটক্লিফের মন্তব্য উদ্ধৃত করে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, মার্কিন হামলায় ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোর যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা স্পষ্টত গোয়েন্দা তথ্য ছাপিয়ে গেছে। কেননা এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ইরানের বছরের পর বছর লাগবে।
তিনি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে মার্কিন হামলাকে ‘ঐতিহাসিক সাফল্য’ হিসেবেও অভিহিত করেন। আমেরিকার নাগরিকদের এই সাফল্য উদযাপন করা উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন হেগসেথ।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা ‘ধ্বংস’ করেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প ইতিহাসের সবচেয়ে জটিল এবং গোপন সামরিক অভিযানের নেতৃত্ব দিয়ে মহান সাফল্য অর্জন করেছেন।
কেএন/টিকে