গরুর চামড়া মাংসের মতই স্বাদ, রান্না করবেন যেভাবে...

হাঁস মুরগি ইত্যাদি প্রাণীর চামড়ার মত গরুর চামড়া রান্না করে খাওয়া যায়। তবে খাবারটি এখনো আমাদের দেশে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি। গরুর চামড়া রান্না কোনো জটিল প্রক্রিয়া নয়। খুব সহজেই এটি রান্না করা যায়।

বাংলাদেশের বেশ কিছু জায়গায় গরুর চামড়া রান্না করে খাওয়া হয়। এর মধ্যে গরুর মাথার চামড়ার চাহিদা বেশি।

 আসুন এবার জেনে নেই গরুর চামড়া রান্না প্রক্রিয়া:

প্রথমে গরুর চামড়াটি এক বর্গফুট আকারে ছোট ছোট টুকরা করে কাটতে হবে। এরপর গরম পানি দিয়ে সিদ্ধ করে নিতে হবে। এখন স্টিলের চামচ দিয়ে চামড়ার উপরের লোম ছাড়িয়ে নিতে হবে।

এবার এটি ছোট ছোট টুকরা করে নিন। এই ছোট ছোট টুকরাগুলো গরুর মাংসের সাধারণ রেসিপির মত রান্না করুন। এছাড়াও হালিমে ব্যবহার করতে পারেন। স্বাদের তেমন কোনো তারতম্য হবে না।

দেশে-বিদেশে খাওয়া হয় গরুর চামড়া

ব্লগার গিয়াস উদ্দিন লিটন এক ব্লগে লিখেছেন, সারা পৃথিবীতে চামড়ার এত চাহিদা, আন্তর্জাতিক বাজারে যেখানে প্রতি বর্গফুট চামড়ার মুল্য ১৩৪ টাকা সেখানে আমাদের দেশে চামড়ার মুল্য ৩৫ টাকা কেন? চামড়ার মূল্য কম হলে চামড়াজাত পণ্যের মূল্যও তো কম হওয়ার কথা! অথচ এক জোড়া চামড়ার জুতা কিনতে দেখি ৬/৭ টা গরুর চামড়ার সমান মূল্য দিতে হয়, এর কারণ কি?

ইউরোপে চামড়ার একটি মানিব্যাগ বিক্রি হয় বাংলাদেশি মুদ্রায় ১০ হাজার টাকা। এ চামড়া নিশ্চয় এরা ৩৫ টাকা দরে কিনে এত মুনাফা করে না। চড়া মূল্য দিয়ে চামড়া কিনতে হয় বলেই সে সব দেশে চামড়াজাত দ্রব্যের এত দাম!

বিষয়টা অনেকের জানা থাকার কথা। এক সময় চামড়া এমন দামি বস্তু ছিল যে, চোরেরা গরু জবাই করে শুধু চামড়া নিয়ে যেত। গরুর শিং-এ একটা চিরকুট লিখে যেত, ‘হালালভাবে জবাই করা হয়েছে।’

সিন্ডিকেট করে এখন চামড়ার দাম এত কমানো হয়েছে যে, এখন চোররা চামড়া না নিয়ে মাত্র আধা কেজি গোশত নিয়ে গেলেও চামড়া নেয়ার থেকে বেশি লাভবান হবে।

বিভিন্ন মাধ্যমে দেখেছি সিন্ডিকেটওয়ালাদের জব্দ করতে চামড়া মাটিতে পুঁতে ফেলাসহ অনেকে অনেক প্রস্তাব দিয়েছেন। চামড়া যে খাওয়াও যায় এ বিষয়ে কেউ কিছু বলেননি। চামড়া কিন্তু খাদ্য হিসেবে অতি সুস্বাদু। চামড়ার স্বাদের সাথে আমরা সকলেই পরিচিত। অনেকেই হয়তো চোখ কপালে তুলে বলবেন, ‘আমি আবার চামড়া খেলাম কখন?’

তাদের জ্ঞাতার্থে- চামড়া না খেলেও গরুর পায়ার নেহারি নিশ্চয় সকলের খাওয়া হয়েছে। এই পায়ার খুরের ওপরের অংশটি কিন্তু চামড়াসহ নেয়া হয়। সেদ্ধ করার পর লোম উঠে যায়, এর পরে খুরের সাথে ওই চামড়াটিও রান্না করা হয়, যা খেতে অতি সুস্বাদু। আমাদের এলাকায় কোরবানের গরু যারা কাটাকুটি করে এরা গরুর মাথার চামড়াটি রান্না করে খাওয়ার জন্য নিয়ে যায়, এদের জিজ্ঞেস করে জেনেছি এটা খেতে নাকি খুব টেস্টি।

আফতাব ডেইরিসহ কিছু কিছু স্থানে এবার কোরবানির গরু কেজির মাপে বিক্রি হয়েছে। কেজি ৩৫০ টাকা। গড়ে একটা চামড়ার ওজন হয় ১৫ কেজি। এই দরে একটা চামড়ার দাম পরিশোধ করতে হয়েছে ৫২৫০ টাকা। চামড়ার সর্বোচ্চ ব্যবহার কল্পে সেই চামড়া সিন্ডিকেটওয়ালাদের কাছে ১২০ টাকায় না বেচে খেয়ে ফেলা হবে অধিক লাভজনক। আর একবার যদি বাঙালি এটা খাওয়া শুরু করে তথন মাংস দোকানেই চামড়া কেজি দরে বিক্রি শুরু হয়ে যাবে। ঈদ ম্যাগাজিনে দুই পাতা জুড়ে থাকবে ‘গরুর চামড়ার তিন পদ’ নামের আর্টিকেল আর কেকা ফেরদৌসি টিভি অনুষ্ঠানে নিয়ে আসবেন, ‘গরুর চামড়ার তেহারি’ নামের কোনো মজাদার রেসিপি।

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: