মায়ের দুঃসময়ে কেন পাশে ছিলেন না রানু মণ্ডলের মেয়ে?

পশ্চিমবঙ্গের রানাঘাট রেলস্টেশনে ‘এক প্যায়ার কা নাগমা হ্যায়' গান গেয়ে রাতারাতি সেলিব্রেটি বনে যায় রানু মণ্ডল। অভিযোগ ছিল ভিক্ষা করত বলে গত চার বছর ধরে তার কোন খোঁজ খবর রাখেনা মেয়ে এলিজাবেথ সাথী রায়। প্রতিদিনই মেয়ে আসবে বলে পথ চেয়ে বসে থাকতেন তিনি।

তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে মেয়ে এলিজাবেথ। মাকে তিনি তার বাড়িতে নিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন তবে মা যেতে চায়নি। তাই মাঝে মাঝে তাকে সাধ্য অনুযায়ী অর্থকড়ি দিয়ে সাহায্য করতেন বলে জানান তিনি।

ভারতীয় নিউজ এজেন্সি আইএএনএসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকার মঙ্গলবার প্রকাশ করে এনডিটিভি।

সাক্ষাৎকারে এলিজাবেথ বলেছেন , ‘আমি জানতাম না যে মা রেলস্টেশনে গান করতেন কারণ আমি নিয়মিত মাকে দেখতে যেতাম না। কয়েকমাস আগে আমি ধর্মতলায় গিয়েছিলাম এবং মাকে একটি বাসস্ট্যান্ডে বসে থাকতে দেখি। আমি মাকে বলি, এক্ষুণি বাড়ি যাও এবং ২০০ টাকাও দিই। আমি মামার অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে যথাসম্ভব ৫০০ টাকা করে পাঠাতাম মাকে। আমি বিবাহবিচ্ছিন্না এবং সিউড়িতে একটি ছোট মুদি দোকান চালাই।’

‘আমি একজন সিঙ্গল মাদার, আমার ছোট ছেলের দেখাশোনা করি। আমার নিজেরও লড়াই রয়েছে। তবুও আমি যতটুকু পারি মাকে দেখাশোনা করার চেষ্টা করি। আমি বেশ কয়েকবার মাকে বলেছি আমাদের সঙ্গে থাকো, তবে আমার মা আমাদের সঙ্গে থাকতে চান না। তবুও লোকেরা আমায় দোষ দিচ্ছে। জনসাধারণ আমার বিরুদ্ধে। আমি এখন কার কাছে যাব?’ বলেন এলিজাবেথ সাথী রায়।

এলিজাবেথ সাথী রায় বলেন, রানাঘাটের ‘আমরা সবাই শয়তান’ ক্লাব তার মায়ের দেখাশোনা করত। এই ক্লাবের সদস্যরা রানু মণ্ডলের কাছ থেকে দূরে থাকতে তাকে হুমকি দিয়েছে ।

মনে হচ্ছে যেন অতীন্দ্র চক্রবর্তী এবং তপন দাশ (ক্লাব সদস্য) আমার মায়ের নিজের ছেলে। তারা এবং ক্লাবের অন্যান্য সদস্যরা আমাকে মায়ের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করলে আমার পা ভেঙে ফেলে দেবে বলে হুমকি দিয়েছে। ওরা আমাকে ফোনেও মার সঙ্গে কথা বলতে দেয় না।

ওরা আমার বিরুদ্ধে মার মগজধোলাই করছে। আমি অসহায় বোধ করি... তপন ও অতীন্দ্র খ্যাতি চায়, তাই ওরা আমাকে সরাচ্ছে... তপন আমার মায়ের কাছ থেকে টাকা নেয় রোজকারের জিনিস কিনে দেওয়ার অজুহাতে। ওরা মার অ্যাকাউন্ট থেকে ১০,০০০ টাকা নিয়েছে আর মায়ের জন্য কেবল একটা স্যুটকেস এবং কয়েকটা নাইটি কিনে দিয়েছে।

যদিও সবাই আমাকে দোষ দিচ্ছে, তবুও আমি মায়ের পাশেই থাকব। আমি মাকে অনুরোধ করব আমার সঙ্গে সিউড়িতে থাকতে, তবে আমি কখনই জোর করব না... তিনি জীবনের অনেকটা সময় পার করেছেন এবং অবশেষে স্বীকৃতি পাচ্ছেন তার ঈশ্বরপ্রদত্ত কণ্ঠের জন্য। আমি তার মেয়ে হিসাবে গর্বিত, বলেন এলিজাবেথ সাথী রায়।

 

টাইমস/এএইচ/এসআই

Share this news on: