জাপা চেয়ারম্যান হওয়ার ব্যাখ্যা দিলেন জি এম কাদের

জাতীয় পার্টির(জাপা) বৃহস্পতিবার সকালে গুলশানে রওশন এরশাদকে দলের পাল্টা চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন তার অনুসারী নেতাকর্মীরা। এরপর দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে  দলের চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় নেতা হওয়ার বিষয়ে ‘যুক্তি’ তুলে ধরলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।

গঠনতন্ত্র ও প্রয়াত চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের সাংগঠনিক নির্দেশেই চেয়ারম্যানের দায়িত্বপালন করছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান জি এম কাদের। দলের ২৫ জন সাংসদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ ১৩ সাংসদের তাকে বিরোধী দলীয় নেতা করার সিদ্ধান্তে সম্মতি আছে বলেও তিনি বলেন। আর এর পরিপ্রেক্ষিতেই তিনি সংসদের স্পিকারের কাছে বিরোধী দলীয় নেতা হওয়ার প্রস্তাব পাঠিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার সকালে সংবাদ সম্মেলন করে রওশন এরশাদকে দলের চেয়ারম্যান ঘোষণা দেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।

আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘গঠনতন্ত্রে বলা আছে, যদি চেয়ারম্যানের মৃত্যু হয়, তাহলে সিনিয়র কো–চেয়ারম্যান–১ নম্বর, চেয়ারম্যান ২ নম্বর। এখানে রওশন এরশাদ সিনিয়র। এটা ২০–এর উপধারা ২(ক)–এ আছে। সুতরাং আজকে সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করছি, রওশন এরশাদ দলের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন। আগামী ছয় মাসের মধ্যে কাউন্সিল করে গণতান্ত্রিক উপায়ে স্থায়ী চেয়ারম্যান ঠিক করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্র ভেঙে জি এম কাদের চেয়ারম্যান হয়েছেন। জি এম কাদেরকে কো-চেয়ারম্যানের সম্মান দেবেন রওশন এরশাদ।’

রওশন এরশাদের সংবাদ সম্মেলন শেষ হওয়ার ঘণ্টা দুয়েক পর জি এম কাদের পাল্টা সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।

সেখানে তিনি ২০১৬ সালের সর্বশেষ সংশোধিত গঠনতন্ত্রের ২২ নম্বর ধারা উল্লেখ করে বলেন, পার্টির চেয়ারম্যান পার্লামেন্টারি পার্টির আস্থাভাজন ব্যক্তিদের মধ্যে পার্লামেন্টারি পার্টির নেতা নির্বাচিত হবেন। পার্লামেন্টারি পার্টির নেতা যিনি হবেন তিনিই আমাদের বিরোধী দলীয় নেতা হবেন, এটাই স্বাভাবিক। এখানে পার্লামেন্টারি পার্টির কোনো মিটিং (সভা) করার বিষয় উল্লেখ করা হয়নি। চেয়ারম্যান যাকে আস্থাভাজন বলে মনে করবেন তিনিই হবেন। আমি আমার প্রতি আস্থা কাদের আছে তা জানার জন্য সাংসদদের সঙ্গে কথা বলেছি। ১৫ জন আমার প্রতি আস্থা রেখেছেন। আমি শুধু অনুভব করিনি। আমি হাতে পেয়েছি যে ১৫ জন আমার প্রতি আস্থা স্থাপন করেছেন। তারা বলেছেন যে, গোলাম মোহাম্মদ কাদেরকে আমরা বিরোধী দলীয় নেতা দেখতে চাই। তখনই আমি এই পত্রটি স্পিকারের কাছে পাঠিয়েছি। এটা গঠনতন্ত্র মোতাবেক হয়েছে। সেখানে কোথাও পার্লামেন্টারি পার্টির সভা করা বা সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা বলা হয়নি।’

জি এম কাদের বলেন, আগেও এইচ এম এরশাদ এ পদ্ধতিতেও জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের নেতা, বিরোধী দলের উপনেতা নির্বাচিত করে গেছেন। কোনো বিষয়েই পার্লামেন্টারি পার্টির মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হওয়া প্রশ্নে কাদের বলেন, গঠনতন্ত্রের ২০ ধারা (ক) বলা আছে, চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টির যেকোনো পদে যেকোনো ব্যক্তিকে নিয়োগ, অপসারণ বা যেকোনো ব্যক্তিকে তার স্থলাভিষিক্ত করতে পারবেন।

তিনি বলেন, এরশাদের মৃত্যুর পর গত ২২ জুন, ৪ জুলাই ও ১৭ আগস্ট এই তিন দিন প্রেসিডিয়ামের তিনটি সভা হয়। প্রথম সভায় তাকে সর্বসম্মতভাবে চেয়ারম্যান হিসেবে অভিনন্দন জানানো হয় বলে জানান কাদের। সর্বশেষ ১৭ আগস্ট তাকে সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা করার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয় বলেও জানান কাদের।

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: