চেরনোবিল: বিপর্যয় জানা থেকে সেলফি তুলতে বেশি আগ্রহী পর্যটকরা

ইউক্রেনের চেরনোবিল পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রে ১৯৮৬ সালে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। যা ‘চেরনোবিল বিপর্যয়’ নামে খ্যাত। সম্প্রতি এইচবিও’র চ্যানেলে ‘চেরনোবিল’ নামে টিভি সিরিজ প্রচার করে। যা ব্যাপক দর্শকপ্রিয়তা লাভ করে। এর পর থেকে পর্যটকদের মধ্যে ধ্বংসপ্রাপ্ত স্থানটি নিয়ে সাড়া ফেলে।

প্রতিবছরই বাড়ছে পর্যটকের সংখ্যা। তবে পর্যটকরা ইতিহাসের ভয়ঙ্কর এই পরমাণু দুর্ঘটনা সম্পর্কে জানার চেয়ে সেলফি তুলতে আগ্রহী বলে বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান স্থানীয় গাইডরা।

পরমাণু প্রকল্প এলাকার অফিসিয়াল গাইড ইয়েভগেন গোনচারেঙ্কো বলেন, পর্যটকরা এইচবিও টিভি চ্যানেলের ‘চেরনোবিল’ সিরিজের ফিকশনাল সাইটগুলো দেখতে চায়। চেরনোবিল দুর্ঘটনা সম্পর্কে জানতে চায় না, তারা চায় সেলফি তুলতে।

চেরনোবিলের পরিত্যক্ত এলাকা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ‘ডার্ক ট্যুরিজম’ স্পটে পরিণত হয়েছে। ইউক্রেনিয়ান ট্রাভেল এজেন্সিগুলো ‘চেরনোবিল সিরিজ’ এলাকায় আরো পর্যটক আকর্ষণে বিশেষ ট্রিপের অফার করছে। এমনকি দুর্ঘটনা এলাকার কাছে কায়াকিং নদীতে ভ্রমণ ও ফাস্টফুড জোনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এই বিদ্যুৎকেন্দ্রেই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে

ইউক্রেনিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জিলেনেস্কি পর্যটক আকর্ষণে এলাকাটির আরো উন্নয়নে একটি আদেশেও (ডিক্রী) সাক্ষর করেছেন।

গত বছর ৭২ হাজার পর্যটক চেরনোবিল সাইটে এসেছে। ট্যুর অপারেটররা আশা করছে এ বছর এ সংখ্যা ১লাখ ছাড়িয়ে যাবে।

১৯৮৬ সালের ২৬ এপ্রিল স্থানীয় সময় অনুযায়ী রাত ১টা ২৩ মিনিটে ইউক্রেন ও বেলারুশ সীমান্তে অবস্থিত পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির চতুর্থ পারমাণবিক চুল্লী থেকে দুর্ঘটনার সূত্রপাত হয়। এতে লাগা আগুন ১০ দিন পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। প্রকল্পের ৩০ কিলোমিটার এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। পারমাণবিক বিক্রিয়ায় তৈরি পদার্থ পরিবেশে প্রায় ১ কিলোমিটার উঁচু অবধি ছড়িয়ে পড়েছিল এবং প্রচুর পারমাণবিক ধুলো পরিবেশের ব্যাপক দূষণ ঘটিয়েছিল।

পরিবেশে যে পরিমাণে পারমাণবিক পদার্থ নিক্ষিপ্ত হয়েছিল তা ১৯৪৫ সালে জাপানের হিরোশিমায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক নিক্ষিপ্ত প্রায় পাঁচশটি পারমাণবিক বোমার সমান। এই দুর্ঘটনার ফলে উদ্ভূত পারমাণবিক ভাবে সক্রিয় মেঘটি ইউক্রেন, বেলোরাশিয়া, রাশিয়া ও পূর্ব ইউরোপের ওপর দিয়ে উড়ে গিয়ে স্ক্যান্ডিনেভিয়াতে, গ্রেট ব্রিটেনে এমন কি পূর্ব আমেরিকার ওপর পর্যন্ত ছড়িয়ে গিয়েছিল।

 

টাইমস/এএইচ/এসআই

Share this news on: