সিম-বদলের প্রতারণা থেকে সাবধান

সিম-বদল প্রতারণা হলো- মোবাইল নাম্বার গ্রাহকের অনুমতি ছাড়াই প্রতারকদের সিমকার্ডে হস্তান্তর করে নেয়া। এই পদ্ধতিতে খুব সহজেই প্রতারকচক্র আপনার নাম্বারে থাকা মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট (বিকাশ ও ইউক্যাশ) থেকে টাকা হাতিয়ে নিতে পারবে। এছাড়াও হ্যাক করে ফেলতে পারবে নাম্বারটির সঙ্গে যুক্ত অনলাইন অ্যাকাউন্ট সমূহ।

সম্প্রতি টুইটারের সিইও জ্যাক ডোরসি এই রকম সিম-বদল প্রতারণার শিকার হয়েছিলেন, ফলে বিষয়টি বিশ্বজুড়ে আলোচনায় উঠে এসেছে। সিম-বদলের পর প্রতারক চক্র ডোরসির টুইটার অ্যাকাউন্টটি হ্যাক করে নেয়। টুইটার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে- এ বিষয়ে তারা বিস্তারিত তদন্তে নেমেছে। খবর: ফক্স নিউজ।

সে সময় টুইটার কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানায়, “অ্যাকাউন্টের সঙ্গে সংযুক্ত মোবাইল নাম্বারটি সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা জনিত ত্রুটির কারণে হ্যাক হয়ে গিয়েছিল। ফলে অযাচিত ব্যক্তিরা টেক্সট ম্যাসেজিংয়ের মাধ্যমে ডোরসির অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করতে সক্ষম হয়। তবে, এই সমস্যাটির সমাধান হয়ে গেছে।”

‘চ্যানেল আইল্যান্ড’ ভিত্তিক একটি ব্রিটিশ মোবাইল সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান জেটি’র মতে, সিম-বদল বর্তমানে সব থেকে দ্রুত বেড়ে চলা প্রতারণাগুলোর মধ্যে একটি।

প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই সিম-বদল পদ্ধতি চালু করা হয়েছিল মূলত গ্রাহকদের জন্য, যাতে তারা তাদের সিমকার্ড পরিবর্তন করতে পারে। গ্রাহকদের সিমকার্ড নষ্ট হলে বা হারিয়ে গেলে, সাধারণত এই পদ্ধতিতে সিমকার্ড বদলে দেয়া হয়।

এটি বেশ তথ্য সংবেদনশীল প্রক্রিয়া হলেও গ্রাহককে স্বশরীরে সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হতে হয় না। এক্ষেত্রে সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর এবং অ্যাকাউন্টের তথ্য দিয়ে তা ভেরিফাই করতে হয়।

এই সুযোগটাই প্রতারক চক্র গ্রহণ করে। তারা প্রথমে গ্রাহকের প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে এবং মোবাইল সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিজেদেরকে ব্যবহারকারী পরিচয় দিয়ে সিম বদলের অনুরোধ করে। তারপর সিম-বদল হয়ে গেলে তারা ব্যবহারকারীর বিভিন্ন অনলাইন একাউন্টের পাসওয়ার্ড রিসেট করে নেয়।

কোনোভাবে যদি প্রতারক চক্র আপনার সিম-বদল করে ফেলতে সক্ষম হয়, তাহলে সেই নাম্বারের সঙ্গে যুক্ত অনলাইন অ্যাকাউন্টগুলো খুব সহজেই তারা হ্যাক করতে সক্ষম হয়। ওই নাম্বারে থাকা মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট থেকে সব টাকা তুলে ফেলাও তাদের কাছে তখন শুধু সময়ের ব্যাপার।

এই প্রতারণা থেকে বাঁচার উপায় কী?

শুরু থেকেই এ ধরনের প্রতারণা থেকে বাঁচতে মোবাইল অ্যাকাউন্ট লক করার একটি পদ্ধতি সিম কার্ডে দেয়া থাকে, আর তা হলো পিনকোড লক পদ্ধতি। সিম-বদল প্রতারণা থেকে বাঁচার সব থেকে কার্যকর উপায় হলো সিম কার্ডটিতে পিনলক অন করে রাখা। তাহলে প্রতারকচক্রের পিনকোড না জানা থাকলে সিম-বদলে সক্ষম হবে না।

সাধারণত সিম-বদলের আগে অনলাইন থেকেই বিভিন্ন প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্যগুলো হাতিয়ে নেয়া হয়। তাই যে কোনো ওয়েবসাইটে ফর্ম ফিলাপ করার আগে আমাদেরকে আরও সতর্ক হতে হবে। তাছাড়া অনলাইনে এমন কোনো ব্যক্তিগত তথ্য উন্মুক্ত করে রাখা যাবে না, যা দিয়ে সিম-বদল ঘটিয়ে ফেলা সম্ভব।

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on: