কলকাতার সিন্ডিকেট: পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা

পেঁয়াজের দাম লাগামহীন বৃদ্ধির আসল কারণ বেরিয়ে এসেছে  বাংলাদেশের প্রশাসনের তদন্তে। তারা অনুসন্ধান করে জানতে পেরেছেন, পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার কয়েকটি সিন্ডিকেট বাংলাদেশে পেঁয়াজ সরবরাহের নামে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা।

সিন্ডিকেটটি ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি করতো, আর একইভাবে বাংলাদেশের সাতক্ষীরার ভোমরা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনা মসজিদ এবং দিনাজপুরের হিলি স্থল বন্দরে ক্রেতা হিসেবে তাদেরই এজেন্ট থাকতো। ৬২ টাকা দরে ভারত থেকে রপ্তানি করা পেঁয়াজ বাংলাদেশের বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। এমনকি মিয়ানমারের ৪২ টাকার পেঁয়াজের বিক্রয় মূল্য ৯০ টাকা। দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে সিন্ডিকেটগুলোর একক আধিপত্য।

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সময় টিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসনের তদন্তে দেখা যায়, সাতক্ষীরার মেসার্স দীপা এন্টারপ্রাইজ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের মেসার্স টাটা এন্টারপ্রাইজের দু’টি আমদানি ইনভয়েস তাদের হাতে পৌঁছায়। তাতে দেখা যায়,  প্রতি কেজি পেঁয়াজের রপ্তানি মূল্য ধরা হয়েছে ৫৫ সেন্ট(১০০ সেন্ট= এক ডলার)। সে অনুযায়ী এসব পেঁয়াজের বিক্রয় মূল্য হওয়ার কথা সর্বোচ্চ ৬০ টাকা। কিন্তু বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা দরে।

শুধু তাই নয়, মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান চৌধুরী এন্টারপ্রাইজের ইনভয়েসে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ধরা হয়েছে ৫০ সেন্ট। সর্বোচ্চ ৫০ টাকার পেঁয়াজ বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা দরে।

চট্টগ্রামের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ যারা জরুরি ভিত্তিতে পেঁয়াজ আমদানি করেছে তার মূল্য ছিল ৪২ টাকা। কিন্তু তারা তা বিক্রি করছে ৯০ টাকা।’

জানা গেছে, বাংলাদেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে প্রায় ৩০ লাখ টন। এর মধ্যে ৪০ শতাংশ বাংলাদেশের কৃষকরা উৎপাদন করলেও বাকিটা আমদানি হয় প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে। মূলত ভোমরা, সোনা মসজিদ এবং হিলি স্থল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন দেড়শ’র বেশি ট্রাক দিয়ে এসব পেঁয়াজ দেশে আনা হয়। আর এতেই চলে কলকাতাভিত্তিক সিন্ডিকেটের কারসাজি।

এদিকে সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর প্রমাণ পেয়েছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। শেষ পর্যন্ত বাড়তি দামে পেঁয়াজ বিক্রি না করার অঙ্গীকার করেছে খাতুনগঞ্জের কয়েকজন ব্যবসায়ী।

ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার সাবেরী বলছে, আমদানিকারক না থাকার সুযোগ নিয়েছে চক্রটি।

দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে সংকট দেখা দেয়ায় ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারত। এ অবস্থায় সংকট মোকাবিলায় মিয়ানমার, চীন, তুরস্ক এবং মিশর থেকে পেঁয়াজ আমদানি করছে বাংলাদেশ।

 

টাইমস/এসআই

 

 

 

Share this news on: