বায়ু দূষণে বছরে ৬ লাখ শিশুর মৃত্যু

বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর ১৫ বছরের নিচে ছয় লাখ শিশু মারা যায়। সম্প্রতি প্রকাশিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, যেসব শিশু প্রত্যেক্ষ বা পরোক্ষভাবে উচ্চ মাত্রার বায়ু দূষণে ভুগছে, পরবর্তী জীবনে তাদের কার্ডিওভাসকুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

প্রতিবেদনে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ১৫ বছরের নিচে ৯৩ শতাংশ শিশু (১.৮ বিলিয়ন) প্রত্যেক্ষ বা পরোক্ষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ দূষিত বায়ু গ্রহণ করছে। এর মধ্যে ৬৩০ মিলিয়ন শিশুর বয়স পাঁচ বছরের নিচে। এর ফলে কেবল ২০১৬ সালে দূষিত বায়ু দ্বারা সৃষ্ট শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণে প্রায় ছয় লাখ শিশু মারা গেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

ডব্লিউএইচও প্রধান টিড্রোস অ্যাডহাম গেব্রেসাস এক বিবৃতিতে বলেন, “দূষিত বাতাস লাখ লাখ শিশুকে আক্রান্ত করছে এবং তাদের জীবন ধ্বংস করে দিচ্ছে”।

এটা কখনই গ্রহনযোগ্য নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, “প্রত্যেক শিশুর বিশুদ্ধ বাতাসে শ্বাস নেয়ার অধিকার রয়েছে, যাতে তাদের সম্ভাবনার বিকাশ ঘটাতে পারে”।

ডব্লিউএইচও এর তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে প্রতি ১০ জনের মধ্যে নয় জনেরও বেশি লোক বিপজ্জনকভাবে বিষাক্ত বায়ু গ্রহণ করছে। ফলে প্রতি বছর প্রায় ৭০ লাখ (৭ মিলিয়ন) লোকের অকাল মৃত্যু হচ্ছে।

বিশেষ করে শিশুদের জন্য বায়ূ দূষণ খুবই বিপজ্জনক উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতি বছর বিশ্বে মারা যাওয়া শিশুদের প্রতি ১০ জনে এক জন বায়ু দূষণে মারা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দূষিত বায়ুতে থাকা বিষাক্ত সালফেট এবং কালো কার্বন সরাসরি ফুসফুস এবং শ্বসনতন্ত্রে প্রবেশ করে এদের কার্যকারিতা ধ্বংস করে ফেলে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে শিশুরা উন্নত দেশের তুলনায় বেশি বায়ু দূষণ দ্বারা প্রভাবিত হয়। যেখানে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে পাঁচ বছরের নিচে ৯৮ শতাংশ শিশু বায়ু দূষণে ভুগে, সেখানে উন্নত দেশে এ হার ৫২ শতাংশ।

ডব্লিউএইচও এর মতে, বায়ু দূষণের দ্বারা আক্রান্ত গর্ভবর্তী নারীরা অপরিণত এবং কম ওজনের শিশুর জন্ম দেয়। এসব শিশুরা পরবর্তীতে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে বেড়ে ওঠে।

ডব্লিউএইচও এর জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিভাগের প্রধান মারিয়া নিরা সতর্ক করে বলেন, “বায়ু দূষণ শিশুর মানসিক এবং বুদ্ধিভিত্তিক বিকাশকে প্রভাবিত করে। এছাড়া শিশুদের অ্যাজমা এবং ক্যান্সার রোগের জন্য উচ্চমাত্রার বায়ু দূষণ দায়ী”।

বিশুদ্ধ বায়ু নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে মারিয়া নিরা বলেন, “আমাদের যথাসম্ভব জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরশীলতা হ্রাস করতে হবে এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে হবে”।

 

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অবলম্বনে লিখেছেন এনামুল হক।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
সারাদেশে ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট জারি Apr 19, 2024
img
বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালীদের তালিকায় আলিয়া Apr 19, 2024
img
পালিয়ে আসা ২৮৫ জনকে ফেরত নিচ্ছে মিয়ানমার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী Apr 19, 2024
img
গ্রেপ্তারি পরোয়ানার শঙ্কায় নেতানিয়াহু, ইসরায়েলে জরুরি বৈঠক Apr 19, 2024
img
পালিয়ে বাংলাদেশে এলেন আরও ১১ বিজিপি সদস্য Apr 19, 2024
img
কৃষক লীগ নেতাদের গণভবনের শাক-সবজি উপহার দিলেন শেখ হাসিনা Apr 19, 2024
img
প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন : অর্থমন্ত্রী Apr 19, 2024
img
থার্ড টার্মিনালের বাউন্ডারি ভেঙে ঢুকে গেল বাস, প্রাণ গেল প্রকৌশলীর Apr 19, 2024
img
চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট এলার্ট জারি Apr 19, 2024
img
৩টি ড্রোন ধ্বংস করল ইরান, ইসফাহানের পারমাণবিক স্থাপনা নিরাপদ Apr 19, 2024