রোহিঙ্গাকন্যার কান ফোঁড়ানো অনুষ্ঠানে ১ কেজি স্বর্ণ ও ৪৫ লাখ টাকা উপহার

কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গা নেতার মেয়ের কান ফোঁড়ানো অনুষ্ঠানে ১ কেজি স্বর্ণালংকার ও নগদ ৪৫ লাখ টাকাসহ বিভিন্ন উপহার দিয়েছে অতিথিরা। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ইউএনবি।

সম্প্রতি টেকনাফের রোহিঙ্গা নেতা নূর মোহাম্মদের কিশোরী মেয়ের কান ফোঁড়ানো অনুষ্ঠানে এমন ঘটনা ঘটেছে।

অনুষ্ঠানে অতিথিদের কেউ এনেছে স্বর্ণালংকার, কেউ এনেছে রুপা। অনেকে নগদ টাকা, এমনকি ছাগল নিয়েও এসেছে। অতিথিদের দেয়া এমন উপহারে ধীরে ধীরে আয়োজকের বাড়ি স্বর্ণালংকারের স্তূপে পরিণত হয়। একইভাবে টাকায় বস্তা ভর্তি হয়ে যায়।

ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ জানান, নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা, ডাকাতি, অপহরণসহ অনেক মামলা রয়েছে এবং তিনি মোস্ট ওয়ান্টেড আসামি।

ওসি জানান, নূর মোহাম্মদের মেয়ের কান ফোঁড়ানোর অনুষ্ঠানে এমন উপহারসামগ্রীর বিষয়টি এলাকাবাসীর কাছ থেকে জেনেছি। এ ঘটনার পর থেকে রোহিঙ্গা নূর মোহাম্মদকে ধরার জন্য কয়েক দফা অভিযান চালানো হয়েছে। কিন্তু ঘটনার পর থেকে সে আত্মগোপনে থাকায় তাকে ধরা যাচ্ছে না।

ওসি আরও জানান, রোহিঙ্গা নূর মোহাম্মদের বাংলাদেশে ৪টি বাড়ি রয়েছে। তার মধ্যে একটি পাকা ভবন, একটি দু’তলা, একটি টিনের ঘর এবং অপরটি বাগান বাড়ি। রোহিঙ্গারাই তাদের ‘ওস্তাদের’ কন্যার কান ফোঁড়ানোর অনুষ্ঠানে এক কেজির মত স্বর্ণালংকার এবং সেই সঙ্গে নগদ টাকাসহ রীতিমত প্রতিযোগিতা করে উপহার সামগ্রী দিয়েছে। যে কারণেই এরকম অস্বাভাবিক পরিমাণে উপহার উঠেছে।

টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানান, গত ২২ আগস্ট রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের দিনই রোহিঙ্গা নূর মোহাম্মদ তার কন্যার কান ফোঁড়ানোর অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন। এতে গরু-ছাগল জবাই করে আয়োজন করা হয় বড় ভোজ অনুষ্ঠানের। আমন্ত্রিতদের অধিকাংশই রোহিঙ্গা ডাকাত, সন্ত্রাসী ও রোহিঙ্গা ইয়াবা চোরাকারবারির দল।

তিনি বলেন, ১৯৯২ সালে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা নূর মোহাম্মদ হ্নীলা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের জাদিমুরা এলাকায় এসে প্রথমে বাসা ভাড়া নিয়ে ছিলেন। ধীরে ধীরে সেখানেই জমি কিনে বাড়ির মালিক হন। এ পাড়ে আশ্রয় নেওয়ার পর ওপারের রোহিঙ্গাদের নিয়ে তিনি সীমান্তের বিশাল ডাকাত বাহিনী গড়ে তুলেন।

সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি জানান, এ রকম রাজকীয় অনুষ্ঠান আয়োজন করা রোহিঙ্গাদের জন্য কোনো ব্যাপার না। এখানে সবাই এখন ধনাঢ্য। অনেক রোহিঙ্গাই এবার ঈদুল আজহায় আড়াই লাখ টাকার বেশি মূল্যের গরু কোরবানিও দিয়েছে। এছাড়া কান ফোঁড়ানোর অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার জন্য স্বনামধন্য শিল্পীদেরও মোটা অংকের টাকা দিয়ে আনা হয় বলেও জানান তিনি।

টাইমস/এইচইউ