অধ্যক্ষকে ‘সাইজ’ করতে গিয়ে শ্রীঘরে কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি

‘চাকরি করতে চাইলে আমাদের কথা শুনতে হবে, না হলে সাইজ করে দেব’ এমন হুমকির পর তিন দফা হামলা হয় সাতক্ষীরার আশাশুনি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মিজানুর রহমানের ওপর। তাকে কিল-ঘুষি দিয়ে ফেলে দেওয়া হয় মাটিতে। এর প্রতিকারে থানায় মামলা করার পর অবশেষে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আশরাফুজ্জামান তাজ ও তার আরেক সহযোগিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

জানা যায়, কলেজের অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান শনিবার সন্ধ্যায় নিজ কার্যালয়ে কয়েকজন সহকর্মীকে নিয়ে দাপ্তরিক কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এমন সময় একজন যুবক এসে তাকে সালাম দিয়ে বাইরে আসার অনুরোধ করেন। তিনি বাইরে আসার পরপরই তার সামনে এক ছেলেকে তারা বেদম পেটাতে থাকে।

ঘটনার কারণ জানতে চাইলে তারা জানায়-ছেলেটি সাতক্ষীরা থেকে একটি মেয়েকে এনে কলেজ ক্যাম্পাসের মধ্যে ঢুকে অনৈতিক আচরণ করেছে। অধ্যক্ষ ছেলেটিকে মারধর না করে তার কাছে দিতে বলেন। 

এ সময় অধ্যক্ষ ওই ছেলের অভিভাবকদের ফোন করে ডেকে আনেন। একই সময়ে সেখানে পুলিশও পৌঁছায়। পরে পুলিশ থানায় এনে মুচলেকা নিয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ছেলেটিকে ছেড়ে দেয়।

অধ্যক্ষ জানান, ছেলেটিকে তাদের হাতে কেনো দেয়া হলো না এই কৈফিয়ত তলব করে তার ওপর হামলা করে কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি আশরাফুজ্জামান তাজ ও তার সহযোগী শাওন, আল মামুন ও সাইফুল্লাহসহ ৭/৮ জন ছাত্রলীগ ক্যাডার। এ সময় তারা ভাংচুর করে তার কক্ষ, জানালার গ্লাস, চেয়ার টেবিল। ইটপাটকেল ছুড়ে তাণ্ডব চালায় তারা। এরপর তারা তিন দফা তার ওপর হামলা চালায়।

এ ঘটনায় অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান বাদি হয়ে আশাশুনি থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে ছাত্রলীগ সভাপতি আশরাফুজ্জামান তাজসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

অধ্যক্ষ জানান, তার ওপরে হামলার সময় অন্যান্য শিক্ষকরা এগিয়ে এলেও তাদের ওপরও ছাত্রলীগের ক্যাডাররা হামলা করে।

আশাশুনি থানার ওসি আবদুস সালাম জানান, অধ্যক্ষ মামলা দেয়ার পর আশরাফুজ্জামান তাজ ও তার সহযোগী ছাত্রলীগ নেতা আল মামুনকে সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ওসি আবদুস সালাম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। মামলার পর সোমবার রাতেই আশরাফুজ্জামান তাজ ও আল মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এদিকে এ হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমান জানান ‘তাজ ও অন্যদের বিরদ্ধে অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত হলেই তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে’।

 

টাইমস/এমএস

 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ট্রাম্পের শুল্ক চিঠির তালিকায় আরও ৬ দেশ Jul 10, 2025
img
সব বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্রুত ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেওয়া হোক: নাহিদ ইসলাম Jul 10, 2025
img
রংপুরে বাস দুর্ঘটনায় নিহত ৩ ও আহত ২৫ Jul 10, 2025
img
বিনিয়োগ খুঁজতে চীন সফরে যাচ্ছেন বিডার চেয়ারম্যান Jul 10, 2025
img
রাজনীতিবিদরা সামনে বড় বড় কথা বলেন, ভিতরে ভিতরে চলে বোঝাপড়া: সারজিস আলম Jul 10, 2025
img
বিচার-সংস্কার নয়, সরকার যেন নির্বাচন নিয়েই আগ্রহী: নাহিদ ইসলাম Jul 10, 2025
img
সকালের মধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ৬০ কি.মি. বেগে ঝড়, অতিবৃষ্টির শঙ্কা Jul 10, 2025
img
বাংলাদেশের আকাশে আজ কালো মেঘের ঘনঘটা: হাসনাত আব্দুল্লাহ Jul 10, 2025
img
এনসিপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ফের ককটেল বিস্ফোরণ Jul 10, 2025
img
শাপলা যদি প্রতীক না হতে পারে তাহলে ধানের শীষও পারবে না: সারজিস আলম Jul 10, 2025
img
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দীর্ঘ যানজট Jul 10, 2025
img
আমাদের আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেটারের সংকট আছে: লিপু Jul 10, 2025
img
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা সীমান্তে ৯ কেজি রুপা জব্দ Jul 10, 2025
img
১৫ বছর আগের থেকে অনেক বেশি যোগ্য ও পরিবর্তিত তারেক রহমান: মান্না Jul 10, 2025
img
সুন্দরবনকে অপরাধমুক্ত রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে পরিবেশ উপদেষ্টার নির্দেশ Jul 10, 2025
img
১৮ জুলাই বিনামূল্যে ১ জিবি ইন্টারনেট দিচ্ছে সরকার Jul 09, 2025
img
টি-টোয়েন্টি দলে সাইফউদ্দিনকে নেওয়ার কারণ জানালেন অধিনায়ক লিটন Jul 09, 2025
img
বিশ্ববাজারে পোশাক রপ্তানিতে দ্বিতীয় শীর্ষ স্থানে বাংলাদেশ Jul 09, 2025
img
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ডিসি-এসপি পদে রদবদল হবে Jul 09, 2025
img
ইলন মাস্কের এক্সের প্রধান নির্বাহীর পদত্যাগের ঘোষণা Jul 09, 2025