আবরারের জানাজায় অংশ না নেওয়া বিষয়ে যা বললেন বুয়েট ভিসি

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার প্রথম দুদিন ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলামকে। এমনকি সোমবার রাতে ক্যাম্পাসে আরবারের জানাজায়ও তিনি ছিলেন না।

এ নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার বিকাল ৫ টার মধ্যে তাকে সশরীরে হাজির হয়ে এ বিষয়ে জবাবদিহি করতে আল্টিমেটাম দেন। ওইদিন শিক্ষার্থীরা ভিসির কার্যালয়, একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবনেও তালা লাগিয়ে দেন। এরপর তারা ভিসি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন।

শিক্ষার্থীরা সেখানে ‘হইহই রইরই ভিসি স্যার গেল কই’ বলে স্লোগান দেন। শিক্ষার্থীরা যখন ভিসির কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিচ্ছিলেন, তখন ভিসি ওই কার্যালয়ের ভেতরে অন্য শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন। বৈঠক শেষে শিক্ষার্থীদের সামনে আসেন ভিসি সাইফুল ইসলাম।

এসময় বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের মুখোমুখি হন ভিসি। তার মধ্যে অন্যতম ছিল, তিনি কেন সন্তানের (আবরার) জানাজায় হাজির হননি।

জবাবে ভিসি সাইফুল ইসলাম বলেন, সে সময় তিনি মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ছিলেন।

শিক্ষার্থীরা পাল্টা প্রশ্ন করেন, জানাজা পড়তে পাঁচ মিনিটের বেশি সময় লাগে না।

জবাবে তিনি বলেন, গতকাল(সোমবার) সন্ধ্যার দিকে ক্যাম্পাস থেকে পুলিশকে সরানোসহ নানা কাজে তাকে ব্যস্ত থাকতে হয়েছিল।

শিক্ষার্থীদের আট দফা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্য বলেন, তোমরা আলটিমেটাম দিয়ো না, বাবা! আমি তো বলেছি, তোমাদের দাবির সঙ্গে ইন প্রিন্সিপাল আমি একমত।

আবরার হত্যার পরদিন সোমবার উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম তার কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি শিক্ষকদের সঙ্গে একটি সভায়ও অংশ নেন। তবে যেখানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, সেই শের-ই বাংলা হলে তিনি যাননি, এমনকি প্রকাশ্যেও দেখা যায়নি তাকে। তার প্রকাশ্যে না আসার বিষয়ে শিক্ষার্থীরা চরম ক্ষুব্ধ। তার অনুপস্থিতিতে বিস্মিত হয়েছেন শিক্ষার্থীরা। দুদিন ধরে সবার একটাই প্রশ্ন ছিল, ‘ভিসি কোথায়?’

ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র খুন হওয়া এবং এরপর উত্তাল ক্যাম্পাসে প্রশাসনের সর্বোচ্চ ব্যক্তির অনুপস্থিতি তাদের অবাক করেছে। এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার বিক্ষোভ মিছিলে ভিসির বিরুদ্ধেও স্লোগান দেন তারা।

আবরার হত্যায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তিসহ ৭ দফা দাবিতে মঙ্গলবার সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। হত্যার ঘটনায় বিক্ষুব্ধ ও মর্মাহত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছেন বুয়েট শিক্ষক সমিতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান।

মঙ্গলবার বিকাল পাঁচটার মধ্যে উপাচার্য সশরীরে এসে এ বিষয়ে জবাবদিহি না করলে কঠোর কর্মসূচি দেয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা। এরপরই সন্ধ্যা ছয়টার পর উপাচার্য শিক্ষার্থীদের সামনে আসেন।

 

ছেলের জানাজা পড়ার ৫ মিনিট সময় পেলেন না: ভিসিকে বুয়েট শিক্ষার্থীরা

আবরার হত্যা: আরও ৩ বুয়েট ছাত্র গ্রেপ্তার

চিরনিদ্রায় শায়িত আবরার

 

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: