আগুন-সংঘর্ষে জ্বলছে দিল্লি: নিহত ২৩, গুলিবিদ্ধ ৭০

ভারতের বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) বিরোধী বিক্ষোভ চরম আকার ধারণ করেছে। মঙ্গলবার সিএএ বিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে এক পুলিশ সদস্য নিহতের পরে দিল্লিতে মুসলিম বিরোধী দাঙ্গা শুরু হয়েছে। পুলিশ ও হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর কর্মীদের যৌথ হামলায় এরই মধ্যে অন্তত ২৩ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আরও ৭০ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যম জানিয়েছে, সিএএ বিরোধী বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশ ও হিন্দুত্ববাদী কয়েকটি সংগঠনের হামলায় বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী আহত হন। এরপর বিক্ষোভ আরও জোরদার হলে পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যায়। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের যানবাহনসহ বেশকিছু রাষ্ট্রীয় সম্পত্তিতে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর চালায়।

সময় যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দিল্লিতে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গায় রূপ নেয় সিএএ বিরোধী বিক্ষোভ ও সহিংসতা। এরই মধ্যে বেশ কিছু গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ভারতের রাজধানী দিল্লিতে কয়েকটি মসজিদে ভাংচুর চালিয়েছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের কর্মীরা।

দিল্লির উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় বেছে বেছে মুসলিমদের ওপর হামলা চালাচ্ছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের কর্মীরা। অনেক বাড়ি ঘরে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও মুসলিমদের ওপর কঠোর নির্যাতন করা হচ্ছে। দিল্লি পরিস্থিতিকে ভারতীয় অনেক গণমাধ্যমে গুজরাট স্টাইল বলে আখ্যা দেয়া হচ্ছে।

হামলার পর ওইসব মসজিদের মিনারে ক্ষমতাসীন বিজেপি’র পতাকা (গেরুয়া) টানিয়ে দেয়া হয়েছে। এসব ঘটনার ছবি ও ভিডিও গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দিল্লিতে সহিংসতা আরও বেড়ে যায়।

এসব ঘটনার পরে ভারতীয় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল ও পুলিশ কর্মকর্তারা বিভিন্ন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এনডিটিভি জানিয়েছে, দিল্লির শাহিনবাগে দুই মাস ধরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন সিএএ বিরোধী আন্দোলনকারীরা। মঙ্গলবার সিএএ বিরোধী বিক্ষোভের পাল্টা হিসেবে দিল্লির মৌজপুর চকে সিএএ সমর্থকদের জড়ো হওয়ার আহ্বান জানিয়ে টুইট করেন দিল্লির বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র। হিন্দুত্ববাদী কপিলের সেই উসকানির পর সহিংসতা নতুন মাত্রা পায়। এরপরই হিন্দুত্ববাদীদের তাণ্ডব চলে মসজিদসহ মুসলিমদের দোকান ও বাড়িতে। এতে বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন।

এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আর কোনও উসকানিমূলক বক্তব্য না দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সূত্র: বিবিসি, টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া

 

টাইমস/এসএন/এইচইউ

Share this news on: