ভোটার তালিকা থেকেই বাদ পড়তে পারেন আ.লীগের শীর্ষ নেতারা

আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী দলগুলোর শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) বিচারপ্রক্রিয়া চলমান। মানবতাবিরোধী অপরাধে এদের কারো সাজা হলে তিনি আজীবন নির্বাচনে অযোগ্য হবেন। এছাড়া অপরাধী সাব্যস্ত হলে ভোটার তালিকা থেকেও তাঁদের নাম বাদ পড়তে পারে। ভোটার না হলে কেউ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন না।

সম্প্রতি আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, জুলাই হত্যাকান্ডসংক্রান্ত মামলায় অক্টোবরের মধ্যে তিন-চারটি মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। এসব মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতা এবং শীর্ষস্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা আসামি হিসেবে রয়েছেন। 

এদিকে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন আইসিটিতে বিচারের রায় হওয়ার আগে অভিযোগ গ্রহণের দিন থেকেই তাঁদের নির্বাচনে অযোগ্য করার পক্ষে। এই সংস্কার কমিশন এ বিষয়ে বিভিন্ন যুক্তি ও বাস্তবতা উল্লেখ করে আইন সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছে।

কমিশনের এসব প্রস্তাব নিয়ে গতকাল শনিবার থেকেই রাজনৈতিক দলসহ অংশীজনদের সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা শুরু হয়েছে।

অন্যদিকে গত ৫ ফেব্রুয়ারির পর থেকে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা আবারও আওয়ামী লীগের বিচার ও দলটি নিষিদ্ধ করার জোর দাবি জানিয়ে আসছেন। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশও গত বুধবার একই দাবি জানিয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে’।

পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া গত ৭ ফেব্রুয়ারি বাসসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে বর্তমান সরকার শিগগিরই পদক্ষেপ নেবে।

গত ১৫ বছরের শেখ হাসিনা সরকারের আমলে বাংলাদেশে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনাকে ‘নৃশংস ইতিহাস’ আখ্যায়িত করেছে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। কমিশন বলছে, ‘ভয়াবহ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে যাদের বিরুদ্ধে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযোগপত্র গৃহীত হয়েছে (বা হবে), একটি দুর্বৃত্তমুক্ত বাংলাদেশ সৃষ্টির স্বার্থে তাদেরকে নির্বাচনী অঙ্গন থেকে দূরে রাখার কোনো বিকল্প নেই। বস্তুত এসব ভয়াবহ অপরাধীদেরকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হলে পুরো জাতির, বিশেষত যাঁরা জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে চরম আত্মত্যাগ করেছেন, তাঁদের রক্তের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতার সমতুল্য হবে বলে আমরা মনে করি।’

কমিশন আরো বলেছে, ‘গত ১৫ বছরের শেখ হাসিনা সরকারের আমলে বাংলাদেশে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের নৃশংস ইতিহাস আমাদের সামনে আরেকটি নতুন দ্বিধাদ্বন্দ্বমূলক ইস্যু সৃষ্টি করেছে।

এই সময়ে, বিশেষত গত ১০ বছরে বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, অমানবিক নির্যাতন, সাংবাদিক-মানবাধিকারকর্মীদের ওপর হামলা ইত্যাদির মতো গুরুতর মানবতাবিরোধী অপরাধ কর্মকাণ্ড ঘটেছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের মাধ্যমে তাঁদের বিচারের আওতায় আনার চেষ্টা হচ্ছে এবং এঁদের মধ্যে যাঁরা আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত হবেন, তাঁরা অব্যশ্যই সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অযোগ্য হবেন। 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ট্রাকের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু Mar 17, 2025
img
২৩৯ বিডিআর সদস্যের জামিন আদেশ আজ Mar 17, 2025
img
‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ কাঠামো প্রত্যাখ্যান তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের Mar 17, 2025
ছেলের কথা মনে করে কা'ঠগ'ড়ায় কাঁ'দলে'ন শাজাহান খান Mar 17, 2025
"১০০ ক্যামেরাম্যান মোবাইল নিয়া দাড়াইয়া থাকে, কাস্টমার কই?" Mar 17, 2025
img
এবার শাহরুখ খানের সঙ্গে জুটি বাঁধছেন ‘পুষ্পা’ নির্মাতা সুকুমার! Mar 17, 2025
ঐকমত্য কমিশনে মতামত দিয়েছে ১৩ টি দল, বাকি দলগুলোর ব্যাপারে কি বললেন আলী রীয়াজ Mar 17, 2025
দেশের বাজারে স্বর্ণের দামে রেকর্ড Mar 17, 2025
img
২০১৪ সালে আ.লীগ ও বিএনপি-জামায়াতের কী সমঝোতা হয়েছিল, জানালেন সাবেক সেনাপ্রধান Mar 17, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্রের কাছে স্ট্যাচু অব লিবার্টি ফেরত চাইলেন ফরাসি এমপি Mar 17, 2025