আগস্টের সেই উত্থাল দিনগুলোতে গোপনে কোথায় কোথায় রাত্রি যাপন করেছিলেন তারা, এমন তথ্য এবার সামনে আনলেন আব্দুল হান্নান মাসুদ। এমনকি একদিন পাঠাও সিইওর -বাসায় ছিলেন। আরেকদিন দৃক গ্যালারির শহীদুল আলমের বন্ধুর বাসায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। এমনকি চার পাঁচ আগস্ট চূড়ান্ত পতনের রাতে ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধার বাসায়। আরো চমক লাগানো তথ্য -আগস্টের প্রথম দিন সন্ধ্যায় মুশফিকুর ফজল আনসারীর মাধ্যমে ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গেও যোগাযোগ স্থাপন করতে পেরেছিলেন সমন্বয়করা। এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য সামনে আনলেন আব্দুল হান্নান মাসুদ।
পোস্টের শুরুতে তিনি লেখেন, উত্তরার কুয়েত-মৈত্রী হাসপাতাল থেকে গোয়েন্দা বাহিনীর ধাওয়া খেয়ে মুনতাসির রহমানের মাধ্যমে আমরা প্রথমে আশ্রয় নিই বাংলাদেশে প্রভাবশালী একটা আন্তর্জাতিক সংস্থার কার্যালয়ে, যেখান থেকে আমরা প্রথম ভিডিও বার্তা দিই। তারপর দিন আমাদেরকে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেন ধৃক গ্যালারীর প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল আলম ভাই। ওনার বন্ধুর গুলশানের একটি স্বনামধন্য ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে।
জুলাই আগস্টে মাসউদদের জায়গা দিয়েছিলো রাইড শেয়ার কোম্পানির সিইও। এ ব্যাপারে তিনি জানান, ৩দিন শহিদুল আলমের বন্ধুর স্কুলে অবস্থানের পর একদিন তারা থেকেছিলেন জনপ্রিয় রাইড শেয়ার কোম্পানির সিইওর বাসায়।
এরপর সেখান আশ্রয় নেন মিরপুর ডিওএইচএস এর ওয়াহিদ নামে একজন সম্মানিত ব্যক্তির অফিসে। মিরপুরের ওয় অফিসে থাকতে সহায়তা করেছিলেন একটি মানবাধিকার সংস্থার পরিচালক লেনিন নামের এক ব্যক্তি। তবে মিরপুরের ওই অফিসের অভিজ্ঞতা একটু অসন্তোষের জন্ম দেয় বলে জানান মাসউদ। মাসউদ লেখেন সেখান থেকে ৩ তারিখ গিয়ে থাকি গুলশানের এক সাবেক এমপিপুত্রের বাসায়, যিনি এখন কনস্ট্রাকশানের বিজনেস করেন। ওনার ওয়াইফ একজন বিদেশী নাগরিক। মুক্তিযোদ্ধার বাসায় আশ্রয় পাওয়া প্রসঙ্গে তিনি লেখেন, বনানী ডিওএইচএস এ মুক্তিযুদ্ধে বীরউত্তম উপাধী পাওয়া একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার বাসায় ৪ ও ৫ আগস্ট অবস্থান করি।
জুলাই অভ্যুত্থানে শিবিরের প্রসঙ্গ টেনে মাসউদ লেখেন। আচ্ছা ভাই, এখানে কোনটাকে আপনাদের শিবিরের মেস মনে হচ্ছে?? দয়া করে জানাবেন....হুম আন্দোলন চলাকালীন শিবিরের সাথে আমাদের যোগাযোগ ছিলো, বিভিন্নভাবে সহযোগিতাও করেছেন। তাই বলে সকল কর্মসূচি ওনারা ঠিক করে দিয়েছেন, সবকিছু ওনারা অ্যারেঞ্জ করেছেন এসব কেমন কথা! এভাবে ইতিহাস বিকৃতি আর কদ্দিন!
পোস্টের শেষ অংশে আগস্টের শুরুতে ডক্টর ইউনূসের সাথে সমন্বয়কদের যোগাযোগ হয় বলে জানান তিনি। শেষ অংশে লেখেন, আন্দোলনের সময় আমরা বিভিন্নভাবে প্রবাসী সাংবাদিক তাসনিম খলিল, জুলকারনাইন সায়ের, মুশফিক ফজল আনসারী প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ এবং বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ের বিভিন্ন সিনিয়র নাগরিকদের সাথেও যোগাযোগ স্থাপন করি। ওনারাও বিভিন্নভাবে আমাদের সহযোগিতা করেন। আন্দোলন চলাকালীন মুশফিকুল ফজল আনসারী ভাইয়ের মাধ্যমে সর্বপ্রথম পহেলা আগস্ট সন্ধ্যায় ড. মোহাম্মদ ইউনুস স্যারের কাছ থেকে প্রথম মেসেজ পাই।