সাংবাদিক জিল্লুরের 'জঘন্য মিথ্যাচার' নিয়ে ফেসবুকে লিখলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ

সাংবাদিক জিল্লুর রহমানের অভিযোগকে জঘন্য মিথ্যাচার বলে দাবি করেছেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। সম্প্রতি তৃতীয় মাত্রার সঞ্চালক ও সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডির নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমানের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। সেই ভিডিতে হাসনাত আব্দুল্লাহকে ইঙ্গিত করে, অভিযোগ তোলেন ওই সংবাদিক।

৩ মার্চ রাতে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে একটি পোস্ট লেখেন হাসনাত। সেখানে রাজধানীর একটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে ‘ধমকের’ সুরে কথা বলা এবং হাসপাতাল গুঁড়িয়ে দেওয়ার 'হুমকি' দেওয়ার যেই অভিযোগ উঠেছে তা নিয়ে লেখেন, ‘বাস্তবে এই ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। এই অভিযোগ পুরোপুরি অসত্য ও জঘন্য মিথ্যাচারের নামান্তর।’

ঘটনা বর্ণনা করে হাসনাত আব্দুল্লাহ লেখেন, “ঘটনার সূত্রপাত হয় গতকাল সকালে‌। যখন ঢাকাস্থ বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একটি বাচ্চা মারা যায়। মৃত্যুর আগে বাচ্চাটির চিকিৎসা বাবদ দুই লক্ষ বিশ হাজার টাকা টাকা বিল এসেছে বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেখান থেকে এক লক্ষ টাকা পরিশোধ করে নিহতের পরিবার। বকেয়া থাকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা।”

ওই টাকা বকেয়া রেখে মৃত বাচ্চার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এর প্রেক্ষিতে মৃত শিশুর পরিবার হাসনাত আব্দুল্লার সাথে তাদের মোবাইলের মাধ্যমে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলিয়ে দেয়। যখন হাসপাতালের বিল কমানো বা মওকুফ করার অনুরোধ জানানোর চেষ্টা করেন হাসনাত।

সেই অনুরোধেও অস্বীকৃতি জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেসময় ঘটনাস্থলে হাসপাতালের একজন ডেপুটি ডিরেক্টর উপস্থিত থাকলেও তিনিও সহযোগিতা করেননি বলে উল্লেখ করেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি তার স্ট্যাটাসে আরো লেখেন, কুমিল্লায় অবস্থান করায় সেখানে সশরীরে গিয়ে সহযোগিতা করার সুযোগ আমার ছিল না। সেজন্য আমার পরিচিত দুইজন ভাইকে আমি হাসপাতালে যাওয়ার জন্য বলি। এই বিষয়টিকেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ‘আমার কথা না শুনলে লোক পাঠিয়ে হাসপাতাল ভাঙচুর করা হবে’ বলে উপস্থাপন করা হয়। যা স্পষ্টত অন্যায় এবং চরম মিথ্যাচার।

ঘটনার বিস্তারিত জানার জন্য হাসপাতালে হাসনাত আব্দুল্লাহ তার পরিচিত একাধিক সংবাদকর্মীকে ওই হাসপাতালে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন বলেও জানা যায় ওই পোস্টে। গণমাধ্যম কর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদেরকে বাইরে অপেক্ষা করতে বলে। এবং লে পরবর্তীতে আর কেউই তাদের সাথে যোগাযোগ করেনি, কথাও বলেনি!

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে একজন ব্রিগেডিয়ার হাসনাত আব্দুল্লাহকে ফোন করলে তিনি টাকার জন্য একটা বাচ্চা শিশুর লাশ আটকে রাখার ব্যাপারটি কতখানি মানবিক এবং কোন ধরণের পেশাদার আচরণের উদাহরণ সে বিষয়ে প্রশ্ন করেন। ফ্যাসিবাদ পরবর্তী বাংলাদেশে একজন নিহতের অসহায় পরিবারের সাথে এই ধরণের অমানবিক আচরণ আদৌ গ্রহনযোগ্য কিনা? এসব শুনে, উনি নিজে ব্যাপারটি মীমাংসা করবেন বলে হাসনাতকে আশ্বস্ত করেন।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিক জিল্লুর রহমান তার ভিডিওতে যা বলেছেন, তা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন মিথ্যাচার বলে জোর দাবি জানিয়েছেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি লেখেন, ‘নিজের পূর্বপরিচিত চিকিৎসকের মনগড়া গল্প শুনে এবং আমার পক্ষ থেকে কোনো ধরণের স্টেটমেন্ট না নিয়েই তিনি যে একপাক্ষিক বয়ান তৈরি করেছেন তা কোনোভাবেই নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার সংজ্ঞায় পড়ে না।’

ফ্যাসিবাদের বিপক্ষে সরব ও শক্ত অবস্থানে থাকা সাংবাদিক জিল্লুর রহমানের কাছ থেকে একপাক্ষিক, ভিত্তিহীন আর বায়াসড বক্তব্য অপ্রত্যাশিত দাবি করে হাসনাত আব্দুল্লাহ লেখেন, সত্য-মিথ্যা যাচাই না করেই এই ধরণের পক্ষপাতদুষ্ট বক্তব্য সাংবাদিক জিল্লুর রহমানের বস্তুনিষ্ঠতাকে অত্যন্ত বাজেভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে। ভবিষ্যতে তার যেকোনো বক্তব্যকে নৈর্ব্যক্তিকভাবে গ্রহণ করা যাবে কিনা সেটাও এখন প্রশ্নসাপেক্ষ বিষয়।

এমআর/এসএন

Share this news on: