৪০০ সিনেমার অফার পেয়েছিলেন আমির!

আমির খানকে সবসময়ই মিস্টার পারফেকশনিস্ট বলা হয়। কিন্তু তার ক্যারিয়ার সবসময় পারফেক্ট ছিল না। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় পর্যায়ে এসে তিনি বিবিধ চরিত্রে অভিনয় করেছেন। নিজেকে নিয়ে গেছেন অন্য মাত্রায়। কিন্তু প্রথম পর্যায়েও বেশকিছু ভালো সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন তিনি। নিজেকে নিয়ে নিরীক্ষাও করেছেন। ক্যারিয়ারের প্রথম পর্যায়ে তিনি ‘কায়ামত সে কায়ামত তাক’ দিয়েই সুপারস্টার হওয়ার ধাপ অতিক্রম করেছিলেন। এরপর তিনি অনেক দিন তেমন কোনো হিট সিনেমা দিতে পারেননি। কিন্তু ওই সিনেমার পর তিনি প্রায় ৪০০ সিনেমার প্রস্তাব পেয়েছিলেন।

আমির খান সম্প্রতি তার সিনেমাযাত্রা ও কায়ামত সে কায়ামত তাকের পরের সময়ের কথা প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে তিনি নিজের সিনেমা বাছাই নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন। নিজের সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজেই খুশি ছিলেন না। তবে সে সময় তার কাছে প্রচুর সিনেমার অফার আসছিল। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘কায়ামত সে কায়ামত তাক আমাকে একটা বড় সুযোগ দিয়েছিল। এ সিনেমা মুক্তির পর আমি প্রায় ৩০০-৪০০ সিনেমার অফার পাই।’

আমির খান মূলত পর্দার পেছনে কাজ করতেন। তিনি বলেন, ‘আমি সে সময় পর্যন্ত নাসির হুসেন ও মনসুর খানের সহকারী হিসেবে কাজ করেছি কেবল। কিন্তু প্রথম সিনেমা সফল হওয়ার পর প্রচুর অফার পেতে শুরু করি। নানা জায়গা থেকে প্রযোজকরা এসে আমার সঙ্গে দেখা করতে শুরু করেন। আমি তখন নতুন। বুঝতে পারতাম না যে একটা সিনেমা মানে একটা দায়িত্ব।’

সম্প্রতি আমির খানের সিনেমা নিয়ে একটি উৎসবের আয়োজন হলো। ‘আমির খান: সিনেমা কা জাদুকর’ নামের এ উৎসবেই জাভেদ আখতারের সঙ্গে কথোপকথনে বসেছিলেন আমির। সেখানেই এসব কথা বলেন।
আমির খান ছিলেন মনসুর খানের ভাতিজা। সিনেমার সঙ্গে আমিরের সংযুক্তি বহু পুরাতন। তিনি সিনেমার ভেতর বাহিরের নানা খবর রাখতেন। আমির বলেন, ‘সে সময় অভিনেতারা ৩০-৫০টা সিনেমায়ও একই সময় কাজ করতেন। অনীল কাপুর সম্ভবত কম করতেন। তাও ৩৩টা সিনেমা একসঙ্গে নিয়েছিলেন হাতে। সে অবস্থা দেখে আমিও একবারে ৯-১০টা সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়ে যাই।’
আমির খানের কাছে সে সময় এত সিনেমা এসেছিল যে তার পক্ষে বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা করার মতো অবসরই ছিল না। তার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের নির্মাতার কাছ থেকে প্রস্তাব পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু যাদের সঙ্গে কাজ করার স্বপ্ন দেখতেন, তারা তাকে কাজের প্রস্তাব দেননি। আমির বলেন, ‘আমি যে নির্মাতাদের সঙ্গে কাজ করতে চাইতাম, তাদের কারো কাছ থেকে সিনেমার প্রস্তাব আসেনি। আমি যা পেয়েছি, তাই করেছি। এরপর একাধিক শিফটে অভিনয় করতে গিয়ে বুঝেছি, কত বড় ভুল করেছি। দিনে তিন শিফটেও কাজ করতে হয়েছে। আমি একদমই খুশি ছিলাম না।’

আমির খানের ‘লাভ লাভ লাভ’, ‘আউয়াল নাম্বার’ ও ‘তুম মেরে হো’ খুব বাজেভাবে ফ্লপ করেছিল। তার হিট ক্যারিয়ারকে প্রায় তলানির দিকেই নিয়ে গিয়েছিল সিনেমাগুলো। সে সময়ের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘এ সময় থেকে মিডিয়া আমাকে ‘‘ওয়ান ফিল্ম ওয়ান্ডার’’ বলতে শুরু করে আর আমিও বুঝতে পারি, শুধু এ তিন সিনেমা ব্যর্থ হওয়ায়ই বিষয়টা থামবে না। সামনে থাকা আরো ছয়টা সিনেমাও ব্যর্থ হবে। কারণ সিনেমাগুলো তো ভালো ছিল না। আমি আমার ক্যারিয়ারের পড়তি দশা দেখতে পাচ্ছিলাম।’

আমির খানের ক্যারিয়ারের মোড় ফেরে ইন্দ্র কুমার পরিচালিত ‘দিল’ দিয়ে। সম্প্রতি আমির খানের ক্যারিয়ার আবারো তলানির দিকে। ‘থাগস অব হিন্দোস্তান’, ‘লাল সিং চাড্ডা’র পর তার এখন প্রয়োজন এমন একটি সিনেমা, যা তার ক্যারিয়ারের মোড় ফেরাবে।

এফপি/ টিএ 

Share this news on: