ইথিওপিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় তাইগ্রে অঞ্চলে প্রতিদ্বন্দ্বী উপদলীয় গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা বাড়ছে। ফলে সেখানে ভ্রমণের ওপর সতর্কতা জারি করেছে ফ্রান্স।
২০২০ থেকে ২০২২ সালে তাইগ্রে অঞ্চলে ভয়াবহ যুদ্ধ সংঘটিত হয়, যা চলতি শতাব্দীর ধ্বংসাত্মক যুদ্ধগুলোর মধ্যে একটি। এতে প্রায় ৬ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে বলে ধারণা করা হয়। আঞ্চলিক বাহিনীগুলোর সঙ্গে দেশটির ফেডারেল সরকার ও তার মিত্র মিলিশিয়া বাহিনীর মধ্যে লড়াই শুরু হয়। পরে এই সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে প্রতিবেশী ইরিত্রিয়ার সেনাবাহিনীও।
২০২২ সালের নভেম্বরে একটি শান্তি চুক্তি হলেও এই অঞ্চল এখনো স্থিতিশীলতা আসেনি। গত কয়েক মাস ধরে প্রতিদ্বন্দ্বী উপদলীয় গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে বিরোধ তীব্র হচ্ছে।
ফেডারেল সরকার তাইগ্রের প্রবীণ রাজনীতিবিদ গেটাচিউ রেদাকে আঞ্চলিক প্রশাসনের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। তবে তার সাবেক মিত্র তাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের প্রধান দেব্রেৎসিয়ন গ্যাব্রিমাইকেল সেখানে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
মঙ্গলবার দেব্রেৎসিয়নের অনুগত বাহিনী তাইগ্রে অঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আদিগ্রাতের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা এএফপি’কে বলেছেন, শহরটিতে নতুন করে উত্তেজনা বিরাজ করছে। জনগণ যুদ্ধের খারাপ দিনগুলোতে ফিরে যাওয়ার আশঙ্কা করছে।
গেটাচিউ তাইগ্রাই প্রতিরক্ষা বাহিনীর তিন জেনারেলকে বরখাস্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তাইগ্রাই গণমাধ্যম সংস্থার এক সাক্ষাৎকারে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী দলটি ‘পুরো তাইগ্রে অঞ্চল দখলের’ চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন।
বুধবার ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে তাইগ্রে অঞ্চলে ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করেছে। বিশেষ করে আদিগ্রাত ও আঞ্চলিক রাজধানী মেকেলেতে চলমান অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে তাইগ্রের সমস্ত অঞ্চলজুড়ে ভ্রমণে সতর্কতা জারি করেছে দেশটি।
দেশটি তাইগ্রেতে অবস্থানরত ফরাসি নাগরিকদের ‘জরুরি সরবরাহ (খাবার,পানি, ওষুধ ও সম্ভবত জ্বালানি) মজুত রাখতে এবং সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে আহ্বান জানিয়েছে।
বুধবার গেটাচিউয়ের প্রশাসন ইথিওপিয়ার ফেডারেল সরকারকে ‘প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান’ করতে অনুরোধ করেছে। তবে তাদের কী সহায়তা প্রয়োজন, তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি।
এ বিষয়ে রাজধানী আদ্দিস আবাবার ফেডারেল কর্তৃপক্ষ এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।
ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ দুঃখ প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘তাইগ্রায়ানরা যুদ্ধের গুজবে এখনো ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে বাস করছে।’
‘হর্ন অব আফ্রিকা’ হিসেবে পরিচিত প্রতিবেশী দুই দেশ ইরিত্রিয়া ও ইথিওপিয়ার মধ্যে যখন চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে, তখন ইরিত্রিয়ার সীমান্তবর্তী উত্তর আফার অঞ্চলেও ‘সব ধরনের অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়িয়ে চলার’ আহ্বান জানিয়েছে ফ্রান্স।
এসএম