পুতিনের সহযোগী ইউরোপীয় নেতাদের ‘আদুরে কুকুরছানা’ বললেন

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক সহকারী ইউরি উশাকভ ইউরোপীয় নেতাদের ‘আদুরে কুকুরছানা’ সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘তারা (ইউরোপীয় নেতারা) কত দ্রুত ইউক্রেন সংঘাতে যুদ্ধবিরতির জন্য মার্কিন চাপকে সমর্থন করতে তাদের অবস্থান থেকে সরে এসেছেন!’

গত মাসে পুতিন অনুমান করেছিলেন, ইউরোপীয় রাজনীতিবিদরা, বিশেষ করে যারা জো বাইডেনের অধীনে 'ওয়াশিংটনের যে কোনো আদেশ আনন্দের সাথে পালন করেছিলেন', তারা শিগগিরই মার্কিন নীতির পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মেলাবেন।

পুতিন বলেন, ট্রাম্পের 'চরিত্র এবং অধ্যবসায়' দেখে তারা (ইউরোপীয় নেতারা) সকলেই শিগগিরই 'প্রভুর পায়ের কাছে দাঁড়াবেন এবং আলতো করে লেজ নাড়বেন'।

রাশিয়া-১ টিভির সাংবাদিক পাভেল জারুবিনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে পুতিনের সহযোগী উশাকভ বলেন, পুতিন যেভাবে বিষয়টি 'স্পষ্টভাবে' চিত্রিত করেছেন, সবকিছু ঠিক তেমনই ঘটছে। তিনি এটিকে এমনভাবে বর্ণনা করেছিলেন, যেন তারা তাদের প্রভুর পায়ের কাছে 'আদুরে কুকুরের' মতো হবে। এখন এটিই ঘটছে বলে আনুমানিকভাবে দেখা যাচ্ছে।

গত শুক্রবার ইউরোপীয় নেতাদের ভার্চুয়াল বৈঠকের পর ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্য উভয়ই দাবি করেছে, রাশিয়া যেন সপ্তাহের শুরুতে সৌদি আরবে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার সময় ইউক্রেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্মত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি মেনে নেয়।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এক্স-পোস্টে লিখেছেন, 'রাশিয়াকে এখন যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে নিতে হবে।'

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি গণমাধ্যমকে বলেছেন, মস্কোকে কোনো শর্ত ছাড়াই যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে হবে। ইউক্রেন তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে। এখন রাশিয়ার এটি মেনে নেওয়া উচিত।

তবে প্রাক্তন রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ পশ্চিমা এই আল্টিমেটামের ধারণা প্রত্যাখান করে দিয়েছেন।

২০২২ সালে ইউক্রেন সংঘাত তীব্র হওয়ার পরপরই যুক্তরাষ্ট্র এবং তার ইউরোপীয় মিত্ররা রাশিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। 'যতদিন সময় লাগে' কিয়েভকে আর্থিক ও সামরিক সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। মস্কো দীর্ঘদিন ধরে এই সংঘাতকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে 'পশ্চিমা প্রক্সি যুদ্ধ' হিসাবে চিহ্নিত করে আসছে।

ট্রাম্প তার পুনর্নির্বাচনের প্রচারণার সময় বারবার কূটনৈতিকভাবে এই সংঘাত বন্ধ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। পুতিন এবং ট্রাম্পের মধ্যে ৯০ মিনিটের একটি ফোনালাপের পর ওয়াশিংটন এবং মস্কোর মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে শুরু করে। এরপর গত মাসে রিয়াদে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা হয়। এছাড়া গত শুক্রবার মস্কোয় ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। তার মাধ্যমে মস্কো থেকে ওয়াশিংটনে একটি বার্তাও পাঠানো হয়েছে।

এতকিছুর মাঝেও গত মাসে পুতিন বলেছিলেন, মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নকারী ইউরোপীয় নেতারা যখন ইচ্ছা কূটনৈতিক যোগাযোগ পুনঃস্থাপন করতে পারেন। যদিও তিনি উল্লেখ করেন, ইউরোপীয়রা কিয়েভের শাসনের সাথে গভীরভাবে জড়িয়ে পড়েছেন। মানসিকভাবে পরাজিত না হয়ে তাদের পক্ষে পিছিয়ে আসা খুব কঠিন বা প্রায় অসম্ভব।

এসএম/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ড্রোনের সঙ্গে সংঘর্ষে দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক হেলিকপ্টার ধ্বংস Mar 17, 2025
img
কাশ্মীরে বন্দুকযুদ্ধ, নিহত ১ Mar 17, 2025
img
স্বাধীনতা দিবসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেসব কর্মসূচি পালন করতে হবে Mar 17, 2025
img
তিতাসের অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন, জরিমানা দেড় লাখ টাকা Mar 17, 2025
img
নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে রাত ১১টা থেকে সকাল ৭টা সেচপাম্প চালানোর অনুরোধ Mar 17, 2025
img
বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে নিহত যুবক Mar 17, 2025
img
চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের ৩৬ নেতাকর্মী গ্রেফতার Mar 17, 2025
img
হঠাৎ বন্ধ বাংলাদেশিদের ওমরা ভিসা, কারণ জানে না এজেন্সি ও মন্ত্রণালয় Mar 17, 2025
img
গাড়িতে জব্দ সেই ৩৭ লাখ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা Mar 17, 2025
img
‘বিনোদিনী’ চরিত্র নিয়ে রুক্মিণীর সঙ্গে তুলনা, ক্ষোভ প্রকাশ শুভশ্রীর Mar 17, 2025