আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ফোনে কথা বলেছেন। প্রায় দু’ঘণ্টা তাঁদের মধ্যে আলোচনা চলে। কিন্তু কয়েকটি সংবাদমাধ্যম সূত্র উল্লেখ করে দাবি করেছে, ফোন ধরার আগে ট্রাম্পকে অন্তত এক ঘণ্টা অপেক্ষা করিয়েছেন পুতিন। নির্ধারিত সময়ে তিনি ফোন ধরেননি। তার জন্য কোনও তাড়াহুড়োও করেননি। ওই সময়ে তিনি মস্কোয় রাশিয়ান শিল্পপতিদের সঙ্গে বৈঠকে ব্যস্ত ছিলেন।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং যুদ্ধবিরতি প্রসঙ্গে আলোচনার জন্য ট্রাম্পের সঙ্গে পুতিনের টেলিফোনে আলোচনা হবে বলে ঠিক হয়। আগেই তার দিনক্ষণ জানানো হয়েছিল। ভারতীয় সময় অনুযায়ী, দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে আলোচনার সময় নির্ধারিত হয়েছিল মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত। রাশিয়ার সময়ের হিসাবে তা বিকেল ৪টে থেকে সন্ধ্যা ৬টা। কিন্তু রাশিয়ার ঘড়িতে ৪টে বেজে যাওয়ার পরেও পুতিন বৈঠক ছেড়ে বেরোননি। শিল্পপতিদের কনফারেন্সে হালকা মেজাজে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।
কনফারেন্সে উপস্থিত রাশিয়ার আধিকারিকেরা পুতিনকে তাড়া দিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরেও তিনি বৈঠক শেষ করার বিষয়ে তাড়াহুড়ো করেননি বলে দাবি। পুতিনের সঙ্গেই ছিলেন রুশ শিল্পপতিদের ইউনিয়নের প্রধান আলেকজ়ান্ডার শখিন। তিনি প্রেসিডেন্টকে সময় মনে করিয়ে দিয়েছিলেন। শখিন জানান, ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ ঘোষণা করেছেন, মস্কোর সময় অনুযায়ী বিকেল ৪টে বেজে গিয়েছে। ওই সময়ে পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের ফোনে আলোচনা হওয়ার কথা। দেরি হয়ে যাচ্ছে কি না, জানতে চান শখিন।
বৈঠকের ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা গিয়েছে, শখিনের কথা হেসে উড়িয়ে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। কাঁধ ঝাঁকিয়ে বলেছেন, ‘‘ওঁর কথা শুনতে হবে না। ওটাই ওঁর কাজ।’’ এর পর শখিন বলেন, ‘‘এ বিষয়ে ট্রাম্প কী বলেন, তা দেখতে হবে।’’ সঙ্গে সঙ্গেই পুতিন জবাব দেন, ‘‘আমি তো ট্রাম্পের নাম করিনি। আমি পেসকভের কথা বলছিলাম।’’ এই ভিডিয়ো ফুটেজ ভাইরাল হয়েছে।
এর পরেও বেশ কিছুক্ষণ মস্কো ইন্টারন্যাশনাল মিউজ়িক হলে বসেছিলেন পুতিন। রাশিয়ার সময় অনুযায়ী বিকেল ৫টা নাগাদ তিনি সেখান থেকে বেরোন। নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা পরে ক্রেমলিনে ফিরে তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন।
ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের আলোচনা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। দীর্ঘ দিন ধরেই ট্রাম্প দাবি করছেন, পুতিন যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়ে যাবেন বলে তাঁর বিশ্বাস। প্রায় দু’ঘণ্টার ফোনালাপের পর ট্রাম্প বলেন, ‘‘পুতিনের সঙ্গে দারুণ আলোচনা হয়েছে। আমরা অনেক জিনিস নিয়ে কথা বলেছি। শান্তি ফেরানোর বিষয়ে আলোচনা করেছি।’’ ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনার পর ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছেন পুতিন। তবে সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতিতে এখনও তিনি সায় দেননি।
আরএ/এসএন