ইউক্রেইনের জ্বালানি স্থাপনাগুলোকে রুশ হামলার হাত থেকে সুরক্ষিত রাখতে এবার সেগুলো যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানায় নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের পরদিন বুধবার ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গেও ট্রাম্পের ফোনালাপ হওয়ার সময় এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ।
হোয়াইট হাউজের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফোনালাপকালে জেলেনস্কিকে ট্রাম্প বলেছেন, নিরাপত্তার স্বার্থে ইউক্রেইনের জ্বালানিক্ষেত্রের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। তবে জেলেনস্কি এসময় বলেন, এমনটি কেবল রাশিয়ার নিয়ন্ত্র থাকা জাপোরিঝিয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষেত্রেই ঘটতে পারে।
জেলেনস্কির সঙ্গে এই আলাপের আগে মঙ্গলবার রাতে ট্রাম্পের সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন ফোন আলাপকালে ৩০ দিনের পূর্ণ যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। তবে ইউক্রেইনের জ্বালানিক্ষেত্র ও অবকাঠামোয় আগামী ৩০ দিন হামলা না চালানোর প্রতিশ্রুতি দেন পুতিন।
কিন্তু এই প্রতিশ্রুতি পুতিন ভঙ্গ করে ইউক্রেইনের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা চালিয়েছেন বলে জেলেনস্কি এরই মধ্যে অভিযোগ করেছেন। আবার রাশিয়াও তাদের তেলের ডিপোতে ইউক্রেইনের হামলা চালানোর পাল্টা অভিযোগ করেছে।
বুধবার ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথোপকথনের সময় জেলেনস্কি বলেছেন, জ্বালানিক্ষেত্র, রেল ও বন্দর সংশ্লিষ্ট স্থাপনাগুলোতে হামলা বন্ধ করে আংশিক যুদ্ধবিরতি করতে তিনিও রাজি। তবে মস্কো যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করলে ইউক্রেইনও পাল্টা প্রতিশোধ নেবে বলে জেলেনস্কি হঁশিয়ার করেছেন।
ইউক্রেইনের জ্বালানিক্ষেত্রে রুশ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়ে জেলেনস্কি বলেন, "আমার মনে হয় যতক্ষণ না আমরা (রাশিয়ার সঙ্গে) একমত হচ্ছি এবং যতক্ষণ না এমনকি আংশিক যুদ্ধবিরতির বিষয়েও একটি সমমনা দলিল না হচ্ছে, ততক্ষণ সব প্রচেষ্টাই বিফলে যাবে।”
নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, “ইউক্রেইন ও রাশিয়াকে একটা সমান সমান অবস্থানে নিয়ে আসার চেষ্টা ছিল এই ফোনকল। দুই পক্ষের অনুরোধ ও প্রয়োজনের প্রেক্ষাপটে এই উদ্যোগ এবং যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা সঠিক পথেই চলছে।”
গত মাসের শুরুতে হোয়াইট হাউজে জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের বাদানুবাদের বৈঠক ঘিরে যে অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল, তারপর বুধবারের ফোনালাপ-পরবর্তী পরিস্থিতি অনেকটাই ভিন্ন বলে মনে করা হচ্ছে।
ওভাল অফিসের সেই উত্তপ্ত বৈঠকের পর বুধবারই প্রথমবারের মতো দুই প্রেসিডেন্ট সরাসরি কথা বলেন। যদিও এর আগে সৌদি আরবে বৈঠক করেছে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউক্রেইনের প্রতিনিধি দল এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ইউক্রেইন রাজিও হয়।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, ট্রাম্প ইউক্রেইনকে, বিশেষ করে ইউরোপে অতিরিক্ত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বিষয়ে সহায়তা করতে সম্মত হয়েছেন।
দুই নেতা তাদের প্রতিরক্ষা কর্মীদের মধ্যে ঘনিষ্ঠভাবে তথ্য বিনিময়ের বিষয়েও সম্মত হয়েছেন বলে রুবিও জানান।
রু
বিওর বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ট্রাম্প ও জেলেনস্কি "ইউক্রেইনের বৈদ্যুতিক সরবরাহ এবং পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র" নিয়ে আলোচনা করেছেন। ট্রাম্প এ সময় বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের বিদ্যুৎ এবং ইউটিলিটি দক্ষতা কাজে লাগিয়ে ইউক্রেইনের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো আরও ভালোভাব চালাতে খুবই সহায়ক হতে পারে।“যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানা এই বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর জন্য সবচেয়ে ভাল রক্ষাকবচ হবে এবং ইউক্রেইনের জ্বালানি অবকাঠামোর জন্য সহায়ক হবে।"
জেলেনস্কি বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিষয়টি আলোচনায় উঠে এসেছে, কিন্তু তারা কেবল জাপোরিঝিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের কথাই উল্লেখ করেছেন।
এমআর/এসএন