নোয়াখালীতে বিচার চাওয়ায় নারীকে পেটালেন ইউপি চেয়ারম্যান

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে বিচারপ্রার্থী এক নারীকে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।

রোববার উপজেলার চর কাঁকড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের নাম হাজি সফি উল্যাহ।

নির্যাতনের শিকার নারীর নাম সাবিনা ইয়াসমিন রিমা। এ ঘটনায় তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।

নির্যাতনের শিকার সাবিনা ইয়াসমিন রিমা জানান, তার স্বামী রিয়াদ হোসেন চর কাঁকড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের তথ্য সেবা কেন্দ্রে চাকরি করে। পরিবারের অমতে রিয়াদের সঙ্গে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে তার বিয়ে হয়। পরে রিয়াদ তাকে তার বাড়িতে তুলে নিতে অস্বীকার করলে তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন তিনি। ওই মামলা এখনও চলমান।

রিমা অভিযোগ করেন, গত আগস্ট মাসে জন্ম নিবন্ধনের কার্ড করতে চর কাঁকড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে যান। সেখানে গেলে বোর্ড অফিসের তথ্য সেবা কর্মকর্তা ও তার স্বামী রিয়াদ তার ওপর হামলা চালায়। এ হামলার বিচারের দাবি করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়।

রোববার সকালে ওই অভিযোগ পত্রে হামলার সত্যতার পক্ষে স্বাক্ষর নিতে ইউপি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে গেলে চেয়ারম্যান তার স্বামী রিয়াদের পক্ষ নিয়ে প্রথমে তাকে এবং তার মাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে, পরে মোটা একটি লাঠি দিয়ে তার চোখে আঘাত করে। এরপর চৌকিদার আবদুর রবসহ অজ্ঞাত এক যুবককে তার ওপর লেলিয়ে দেয়। চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে চৌকিদার আবদুর রব ও অজ্ঞাত এক যুবক ওই নারীকে বেধড়ক মারধর করে। এমনকি পরে তাকে এবং তার মাকে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে আটকে প্রায় ৪ ঘণ্টা রাখা হয় বলেও জানান তিনি।

ওই নারীর অভিযোগ, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তথ্য সেবা কর্মকর্তার পক্ষ নিয়ে চেয়ারম্যান ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে আটকে রেখে এ নির্যাতন চালিয়েছে।

লাঠি দিয়ে আঘাত করার কথা স্বীকার করে অভিযুক্ত চরকাঁকড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাজি সফি উল্যাহ বলেন, আমি তার সন্তানের জন্মনিবন্ধন করতে বার বার বলার পরও সে সন্তানের বাবার নাম দিয়ে তা করতে অস্বীকৃতি জানায়। এ নিয়ে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে সন্তান হিসেবে একটু শাসন করেছি।

জনপ্রতিনিধি হিসেবে তিনি শাসন করতেই পারেন দাবি করেন বলেন, বোর্ড অফিসের লোকজন তাকে টানা হেঁচড়া করে বের করে নিয়ে যাওয়ার সময় তার শরীরের বিভিন্নস্থানে জখম হয়।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মো. আরিফুর রহমান জানান, সন্ধ্যায় নির্যাতিতা নারী থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশে পাঠিয়েছি। ঘটনার সত্যতা জেনে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: