ট্রাম্পকে কোনো বার্তা দেবে না ইরান: আয়াতুল্লাহ খামেনি

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি বজায় রাখার জন্য গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে ইরানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র ও তেহরানের মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনা নিরসনের লক্ষ্যে ইরান সফরকালে তিনি এ আহ্বান জানান। ইরানে এটি হচ্ছে তার একটি বিরল কূটনৈতিক মিশন। খবর এএফপির।

বৃহস্পতিবার ইরানের রাজধানী তেহরানে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির সঙ্গে বৈঠক করেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে।

বৈঠকে শিনজো আবে বলেন, আমি আপনার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষ থেকে বার্তা নিয়ে এসেছি।

জবাবে আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেন, আপনার সদিচ্ছা ও আন্তরিকতার বিষয়ে আমাদের কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু আপনি মার্কিন প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে যা তুলে ধরেছেন সে বিষয়ে বলব আমি ব্যক্তি ট্রাম্পকে বার্তা বিনিময়ের যোগ্য বলে মনে করি না। তার জন্য আমার পক্ষ থেকে কোনো জবাব নেই। আমি তাকে কোনো উত্তর দেব না।

আমেরিকার প্রতি ইরানের কোনো ধরনের আস্থা নেই উল্লেখ করে সর্বোচ্চ নেতা আরও বলেন, পরমাণু সমঝোতা ইস্যুতে আমেরিকার সঙ্গে আলোচনার যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে তার পুনরাবৃত্তি আর আমরা করব না। কারণ কোনো স্বাধীনচেতা ও বিজ্ঞ জাতিই চাপের মুখে আলোচনাকে মেনে নিতে পারে না।

আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেন, ট্রাম্প ইরানে সরকার পরিবর্তন করতে চান না বলে যে দাবি করেছেন তা সত্য নয়। তবে আমেরিকার সঙ্গে আমাদের সমস্যা সরকার পরিবর্তন নয়। কারণ তাদের এ ধরনের ইচ্ছা থাকলেও তারা তা বাস্তবায়নের ক্ষমতা রাখে না। যেমন করে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টরা গত ৪০ বছর ধরে ইরানকে ধ্বংসের চেষ্টা করেছে কিন্তু সফল হতে পারেনি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত রাখতে চান বলে জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে যে বক্তব্য দিয়েছেন তার প্রতি ইঙ্গিত করে সর্বোচ্চ নেতা বলেন, আমরা পরমাণু অস্ত্রের বিরোধী। পরমাণু অস্ত্র হারাম ঘোষণা করে আমার ফতোয়া রয়েছে। কিন্তু এটা জেনে রাখুন আমরা যদি পরমাণু অস্ত্র বানাতে চাইতাম তাহলে আমেরিকা কিছুই করতে পারতো না। আমেরিকার বিরোধিতা আমাদের জন্য কোনো বাধা সৃষ্টি করতে পারতো না।

আমেরিকার গুদামে কয়েক হাজার পরমাণু বোমা আছে- এমন তথ্য দিয়ে আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেন, তাদের এ কথা বলার অধিকার নেই যে, কোন দেশের পরমাণু অস্ত্র থাকবে আর কোন দেশের থাকবে না। আমরা বলতে পারি কারণ আমরা পরমাণু অস্ত্রের বিরোধী।

আমেরিকার সঙ্গে আলোচনায় বসলে ইরানের উন্নতি হবে বলে ট্রাম্প যে দাবি করেছেন তার প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আল্লাহর রহমতে আমেরিকার সঙ্গে আলোচনায় না বসেই তাদের নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকার পরও ইরান উন্নতি করবে।

ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে জাপানি প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে সর্বোচ্চ নেতা বলেন, জাপান এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ। সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে আগ্রহ থাকলে জাপানকে দৃঢ় ইচ্ছা ও মনোবলের পরিচয় দিতে হবে। যেমনিভাবে কোনো কোনো গুরুত্বপূর্ণ দেশ এ ধরনের মনোবল প্রদর্শন করেছে।

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: