সদ্য প্রয়াত মিশরের প্রেসিডেন্ট ড. মোহাম্মদ মুরসিকে নিয়ে নতুন তথ্য দিলেন পাকিস্তানের প্রখ্যাত পরমাণু বিজ্ঞানী ড. আব্দুল কাদির খান। ২০১৩ সালে তার বিরুদ্ধে মিশরে যে অভ্যুত্থান ঘটেছিলো তার নেপথ্যের কথাই তুলে ধরা হয়েছে ওই তথ্যে। ওই অভ্যুত্থানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল ছাড়াও অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দাদের গুরুত্বপূর্ণ সম্পৃক্ততা ছিলো। সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যের জনপ্রিয় পত্রিকা মিডল ইস্ট মনিটর এমন খবর প্রকাশ করেছে।
আব্দুল কাদির খান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একটি পোস্টে বলেন, ক্ষমতায় আসার পর প্রেসিডেন্ট মুরসি রাশিয়া, ভারত ও পাকিস্তান সফরে গিয়েছিলেন। কিন্তু অনেকেই জানেন না যে, মুরসি ইউরোনিয়াম সমৃদ্ধ মিসরীয় পরমাণু চুল্লি ফের চালু করতে রাশিয়ার সঙ্গে একমত হয়েছিলেন। এ চুল্লি দিয়ে মিসর বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা চিন্তা করছিলো।এছাড়া তিনি আরও একটি পরমাণু চুল্লি স্থাপনের ব্যাপারেও একমত হয়েছিলেন।যেটি বছর তিনেক পর মিশর শুরু করতে চেয়েছিলো।
পাক পরমাণু বিজ্ঞানের জনক আব্দুল কাদির খান আরো বলেন,মিশর নিয়ে কথা না বলাই আমার জন্য ভালো ছিল। কিন্তু প্রেসিডেন্ট মুরসির ভাগ্য নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আসল সত্যটি মিশরীয়দের জানা উচিত।
কাদির খানের মন্তব্য-‘মিশরীয়রা কি জানেন,তাদের সাবেক প্রেসিডেন্টের ওই সফর পশ্চিমাদের জন্য বড় আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল?’
পাক এ বিজ্ঞানীর মতে, মিশরের বৈদ্যুতিক সঙ্কটের একটা স্থায়ী সমাধান হওয়া জরুরি ছিল। পাশাপাশি আফ্রিকা মহাদেশ আলোকিত করতে যথেষ্ট বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে পারতো দেশটি।
মিশরীয়দের জানা উচিত, প্রেসিডেন্ট মুরসির শাসনকালে জার্মানির কাছ থেকে দুটি ডুবোজাহাজ পেয়েছিল মিশর। কিন্তু এ ধরনের ডুবোজাহাজ প্রতিবেশী দেশে হস্তান্তরে জার্মানিকে নিবৃত্ত করতে চেয়েছিল ইসরাইল।কারণ মিশরের কাছে সঠিক ক্ষেপণাস্ত্র থাকলে এই ডুবোজাহাজ দিয়ে রণতরীতে আঘাত হানা সম্ভব।
গত মার্চে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হয়েছে।ইসরাইলী প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু স্বীকার করেছেন, তিনি জার্মানি ও মিসরের মধ্যে এই ক্রয়চুক্তিকে অনুমোদন দিয়েছিলেন। কিন্তু কেন তিনি সেটা করেছেন, তা গোপন রাখলেন। তার দাবি, এটা রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা।
আবদুল কাদির খানের ব্যাখ্যা- মিশরের একটি সামরিক উপগ্রহের মালিক হওয়া জরুরি।যদিও তার গুরুত্ব দেশটির বহু নাগরিক অনুধাবন করতে পারছেন না।অথচ এমন উপগ্রহ দিয়ে ইসরাইলে ব্যাপক নজরদারি চালানো সম্ভব।প্রেসিডেন্ট মুরসি ‘ভারতীয় বিজ্ঞানীদের সঙ্গে এ বিষয়ে একমত পোষণ করেছিলেন।কাজেই যদি ২০১৩ সালের অভ্যুত্থান না ঘটতো তাহলে ইতোমধ্যে এমন একটি উপগ্রহের মালিক হয়ে যেতেন মিশরীয়রা।
আব্দুল কাদির খান বলেন, এ কথা অনেকেই জানেন না যে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে মুরসি বলেছিলেন, মিশরের ক্ষেপণাস্ত্র প্রয়োজন।এজন্য একটি চুক্তি সইয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজিও হয়েছিল রাশিয়া।এ বিষয়ে আলোচনা করতে আল-তারাজ নামের এক মেজর জেনারেলকে পাঠিয়েছিলেন মুরসি। তবে দেশটির সেনাবাহিনীর ওপর ক্রমাগত মার্কিন চাপে শেষতক তা আর আলোর মুখ দেখেনি।
টাইমস/এমএস