বায়ু দূষণে গর্ভপাতের ঝুঁকি

ধূমপানের ন্যায় বায়ু দূষণের কারণেও নারীদের গর্ভপাতের ঝুঁকি রয়েছে। সম্প্রতি ‘ফার্টিলিটি অ্যান্ড স্টারিলিটি’ জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণার ফলাফল খুবই হতাশজনক উল্লেখ করে আগামী প্রজন্মের সুরক্ষায় শিগগিরই বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ করার আহবান জানান বিশেষজ্ঞরা।

এর আগেও বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, অপরিণত ও কম ওজনের শিশু জন্মের জন্য বায়ু দূষণের ভূমিকা রয়েছে। সাম্প্রতিক এই গবেষণায় দেখা গেছে যে, বাতাসের নাইট্রোজেন-ডাইঅক্সাইড দূষণের কারণে গর্ভের সন্তান নষ্ট হবার সম্ভাবনা ১৬ শতাংশ।

গবেষণা দলের প্রধান ড. ম্যাথিউ ফুলার বলেন, গর্ভধারণের ওপর পরিবেশের প্রভাব সম্পর্কিত অন্যান্য গবেষণার সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, গর্ভপাতের জন্য ধূমপানের ন্যায় বায়ু দূষণ সমানভাবে দায়ী।

গবেষণাটি যুক্তরাষ্ট্রের সল্ট লেক সিটতে পরিচালিত হয়েছে। তবে লন্ডন বা প্যারিসসহ যেকোনো বড় বড় শহর যেখানে বায়ু দূষন হয়ে থাকে, সেখানে এই ফলাফল প্রয়োগ করা যাবে বলে জানান ড. ফুলার।

তিনি বলেন, গবেষণায় ১৩০০ নারীর তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে, যারা ২০০৭-২০১৫ এই সময়ে জরুরী বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন। আমরা অনেকেই মনে করি বায় দূষণ কেবল আমাদের স্বাস্থ্যকেই প্রভাবিত করে। কিন্তু গবেষণায় দেখা যায়, এটা আমাদের অনাগত শিশুদের উপরও প্রভাব বিস্তার করে, যা খুবই বেদনাদায়ক।

এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. ফারাহ স্টক বলেন, এটা স্পষ্টভাবে বলা যায় যে, বায়ু দূষণ বিশ্বব্যাপী মা, নবজাতক ও শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। তাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা অপরিহার্য।

এদিকে বায়ু দূষণ কীভাবে একটি ভ্রূণের ক্ষতি করে তা এখনও জানা সম্ভব হয়নি। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বায়ু দূষণের কারণে সৃষ্ট অক্সিডেটিভ চাপ ও প্রদাহ থেকে এটা হতে পারে। তাই বছরের যে সময়টাতে দূষণ কম হয়, গর্ভধারণের জন্য সেই সময়টা বেছে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ড. ফুলার।

এছাড়া প্রয়োজনে গর্ভবতী মায়েরা ইনডোর এয়ার ফিল্টার ব্যবহার করতে পারেন। যদিও উন্নয়নশীল দেশের নাগরিকদের জন্য এই ব্যবস্থা অনেকটা ব্যয়বহুল হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

 

টাইমস/এএইচ/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ

img
তারেক রহমানকে নিয়ে তথ্যচিত্র মুক্তি পাবে আগামীকাল Nov 19, 2025
img
শেখ মুজিব দেশকে পাকিস্তানের বদলে ভারত বানিয়েছিল: রাশেদ প্রধান Nov 19, 2025
img
নাসিরুদ্দিনের বক্তব্যে খারাপ লেগেছিল ফারহানের Nov 19, 2025
img
আদানি গ্রুপের সিঙ্গাপুরে সালিশি কার্যক্রমের ওপর হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা Nov 19, 2025
img
সুষ্ঠু নির্বাচনে ইসিকে শক্ত অবস্থানে থাকার আহ্বান মঈন খানের Nov 19, 2025
img
বিশ্ববাজারে বেড়েছে স্বর্ণের দাম Nov 19, 2025
img
টাকা খরচ না করেও কি নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া যায় প্রশ্ন মির্জা গালিবের Nov 19, 2025
img
মডেল-অভিনেত্রী জিনা লিমা আর নেই Nov 19, 2025
img
মুশফিককে শুভেচ্ছা জানালেন কিংবদন্তি রিকি পন্টিং Nov 19, 2025
img
আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস আজ Nov 19, 2025
img
সংস্কারের একক দাবি সংকীর্ণ মানসিকতা, ৩১ দফায় তা চূড়ান্ত হয়েছে: মির্জা ফখরুল Nov 19, 2025
img
‘বাহুবলী’র পরিচালকের নামে মামলা Nov 19, 2025
img
অক্টোবরে সড়কে মৃত্যু বেড়েছে ৫.৭৫ শতাংশ: রোড সেফটি ফাউন্ডেশন Nov 19, 2025
img
মুশফিকের লম্বা ক্যারিয়ারের রহস্য নিয়ে মাহমুদউল্লাহর মন্তব্য Nov 19, 2025
img
রাফিয়ার পাশে দাঁড়িয়ে মুখ খুললেন ঢাবি শিক্ষিকা মোনামি Nov 19, 2025
img
কেউ ভোট হাইজ্যাক করতে চাইলে যুবক হয়ে বিস্ফোরিত হবো : জামায়াত আমির Nov 19, 2025
img
গণভোটের রূপরেখা দ্রুত চায় এনসিপি : নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী Nov 19, 2025
img
‘দাবাং ৪’ নিয়ে ইঙ্গিত দিলেন আরবাজ Nov 19, 2025
img
এপস্টেইন ফাইলস প্রকাশের অনুমতি মার্কিন কংগ্রেসের Nov 19, 2025
img
প্রচারে তারেক ও জিয়ার ছবি ব্যবহার করা যাবে না, ইসিকে এনসিপি Nov 19, 2025