জীবন বাঁচাতে নতুন খাদ্যাভাস

বদলে যাচ্ছে জলবায়ু। বদলে যাচ্ছে পৃথিবীর পরিবেশ। বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। পরিবর্তিত এই বিশ্বের সঙ্গে টিকে থাকতে প্রয়োজন মানুষের খাদ্যাভাস পরিবর্তন। এজন্য বিজ্ঞানীরা একটি নতুন খাদ্যাভাসের সুপারিশ করছেন, যা পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে টিকে থাকতে ও স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ করতে ভূমিকা রাখবে।

সম্প্রতি বিখ্যাত মেডিকেল জার্নাল ‘দ্য লেনসেট’এ প্রকাশিত আন্তর্জাতিক একটি গবেষণাদলের গবেষণা থেকে নতুন খাদ্যাভাসের সুপারিশ করা হয়েছে। নতুন এই খাদ্যাভাসে মাংস খাওয়া অর্ধেক কমিয়ে দিয়ে ফলমূল, শাকসবজি ও শস্যকণা জাতীয় খাদ্য বেশি করে খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন, জীববৈচিত্র্য ধ্বংস ও পরিবেশ দূষণের কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় তিন বিলিয়নেরও বেশি মানুষ অপুষ্টিতে ভুগছে। ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের জনসংখ্যা ১০ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে। আমাদের বর্তমান খাদ্যাভাস ও খাদ্য উৎপাদন প্রক্রিয়া ভবিষ্যতে এই বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য ভয়াবহ ঝুঁকি নিয়ে আসবে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন।

বিশ্বের এক বিলিয়ন লোক খাদ্যের অভাবে ভুগছেন এবং দুই বিলিয়ন লোক অস্বাস্থ্যকর খাদ্য খাচ্ছেন উল্লেখ করে দ্য লেনসেট জার্নালের প্রধান সম্পাদক ড. রিকার্ড হর্টন বলেন, বর্তমানে এই ঝুঁকিগুলো অত্যন্ত ব্যাপক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গবেষণাদলের প্রধান ড. ওয়াল্টার উইলেট বলেন, এই ঝুঁকি মোকাবেলা করতে তাদের এ গবেষণা এক নতুন খাদ্যাভাসের সুপারিশ করছে। যেখানে খাদ্যাভাস পরিবর্তন করতে ও বিশ্বকে বাঁচাতে পাঁচটি কৌশলের সুপারিশ করা হয়েছে।

এগুলো হলো- মানুষকে স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে উৎসাহিত করা, খাদ্যশস্য উৎপাদনে বৈচিত্র্য নিয়ে আসা, টেকসই কৃষি ত্বরান্বিত করা, মহাসাগর ও স্থলভূমির ব্যবহারে কঠোর নীতিমালা প্রণয়ন করা এবং খাদ্য অপচয় হ্রাস করা।

একই সঙ্গে একটি সুস্থ জনসমষ্টি গড়তে নতুন একটি খাদ্যাভাসের সুপারিশ করা হয়েছে এই প্রতিবেদনে। যেখানে শস্যদানা, শাকসবজি, ফলমূল, দুগ্ধজাত খাদ্য, প্রোটিন, চর্বি ও শর্করার সমন্বয়ে প্রতিদিন ২৫০০ কিলোক্যালোরি খাদ্য খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

নতুন এই খাদ্যতালিকায় যা যা থাকবে-
শাকসবজি ৩০০ গ্রাম, দুগ্ধজাত খাদ্য ২০০ গ্রাম, শস্যকণা ২৩২ গ্রাম, ফলমূল ২০০ গ্রাম, ডিম, পোলট্রি, সামুদ্রিক খাদ্য, উদ্ভিজ আমিষ ১৯৫ গ্রাম, চর্বি ৫১.৮ গ্রাম, শ্বেতসারবহুল শাকসবজি ৫০ গ্রাম, ও শর্করা ৩১ গ্রাম।

 

টাইমস/এএইচ/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ

img
এক বছর পর দীপাবলিতে মেয়ের ছবি শেয়ার করলেন দীপবীর Oct 21, 2025
img
শিক্ষকদের অবহেলা করে কোনো দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয় : মুজিবুর রহমান Oct 21, 2025
img

বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা

প্রশাসনের রদবদল আমার হাতে থাকবে, বেছে নেয়া হবে যোগ্যদের Oct 21, 2025
img
নৌপরিবহন ও জাহাজ নির্মাণ খাতের প্রতিনিধিদল আলজেরিয়ায় Oct 21, 2025
img
সমুদ্রপথে ইতালি পাড়ি জমানো অভিবাসীদের শীর্ষে আছেন বাংলাদেশিরা Oct 21, 2025
img
সালমান শাহ হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ৭ ডিসেম্বর Oct 21, 2025
img
কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ছাত্রদলের পদবঞ্চিতদের কাফন মিছিল Oct 21, 2025
img
৮৫০ কোটি ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর যুক্তরাষ্ট্র-অস্ট্রেলিয়ার Oct 21, 2025
img
দেবরের কারণেই ‘বেটা’ থেকে সরে যান শ্রীদেবী Oct 21, 2025
img
সঞ্জয়ের ৩০ হাজার কোটি সম্পত্তি নিয়ে কারিশ্মার আইনি লড়াই তুঙ্গে Oct 21, 2025
img
সারা দেশে পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার ১৭৪৮ জন Oct 21, 2025
img
অক্টোবরের ২০ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৭৮ কোটি ডলার Oct 21, 2025
img
গোলাম পরওয়ারের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাল এনসিপি Oct 21, 2025
img
আগামীকাল শুরু হচ্ছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্বাচনি প্রশিক্ষণ Oct 21, 2025
img
ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে ওয়াশিংটন যাচ্ছেন সৌদি যুবরাজ Oct 21, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসের দাম গত চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন Oct 21, 2025
img
ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিপক্ষে সুপার ওভারে ১ রানে হারলো বাংলাদেশ Oct 21, 2025
img
বিএনপির সময়ে ৫ ভাইসহ জেলে গিয়েছিলাম : চরমোনাই পীর Oct 21, 2025
img
বিমানবন্দরের আগুন ফ্যাসিস্ট হাসিনার নাশকতার অংশ: আমান Oct 21, 2025
img
'মহা জাদু'র তালে মঞ্চ মাতালেন তানজিন তিশা Oct 21, 2025