গরমে খান লেবুর শরবত

লাগাতার গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা! কোনো কাজেই স্বস্তি পাচ্ছেন না? কি খাবেন কি খাবেন না সে বাছ-বিচারে অস্থিরতা আরো বাড়ছে? তাহলে ঝটপট এক গ্লাস ঠাণ্ডা লেবুর শরবত খেয়ে নিন। দেখবেন মাথা থেকে পায়ের তলা অবধি একটা ঠাণ্ডা অনুভূতি পাবেন। বুকের ভেতর এতক্ষণ ধরে যে আগ্নেয়গিরির লাভা ছড়াচ্ছে বলে মনে হচ্ছিল সেটি ঠাণ্ডা বরফে রূপ নিবে। একটা অন্যরকম সুগন্ধ আপনার গলা বেয়ে বাইরে আসবে। আপনি তৃপ্তির ঢেকুর তুলবেন। তবে হ্যাঁ- এজন্য লেবুটি হতে হবে শরবতি লেবু যাকে গোল সুগন্ধী লেবুও বলা হয়। তবে কলম্বো লেবু কিংবা কাগজি লেবুর শরবতও শরীরের এ চাহিদা পূরণে সক্ষম।   

অতিরিক্ত গরম আপনার শরীরে পানি শুন্যতা তৈরি করে। তাই ঘাটতি পূরণে ভিটামিন ও মিনারেলের  প্রয়োজন হয়। এ ঘাটতি পূরণে লেবুর শরবতের কোনো জুড়ি নেই। স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীদের তথ্য বলছে- মাত্র একটি মাঝারি আকৃতির লেবু থেকে চল্লিশ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি বা এসকরবিক অ্যাসিড পাওয়া যা একজন মানুষের দৈনিক চাহিদা পূরণের জন্য যথেষ্ট। ভিটামিন ‘সি’ দেহের রোগ প্রতিরোধকারী কোষগুলোর কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। তাই এই গরমে গ্লাস লেবুর শরবত যে আপনার অনেকখানি স্বস্তির উপকরণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

শুধু কি পানীয় হিসেবে লেবু ব্যবহার হয়? মোটেও তা নয়। শরীরের কোনো অংশ কেটে গেলে বা ক্ষত হলে দ্রুতগতিতে কোলাজেন কোষ উপাদান তৈরি করে ক্ষত নিরাময়েও সাহায্য করে এই ভিটামিন ‘সি’। লেবুতে পর্যাপ্ত পরিমাণ সাইট্রিক অ্যাসিড বিদ্যমান যা ক্যালসিয়াম নির্গমন হ্রাস করে পাথুরী রোগ প্রতিহত করতে পারে। লেবুর খোসার ভেতরের অংশে ‘রুটিন’ নামের বিশেষ ফ্ল্যাভানয়েড উপাদান আছে যা শিরা এবং রক্তজালিকার প্রাচীরকে যথেষ্ট শক্তিশালী এবং সুরক্ষা দেয়। ফলে স্বভাবতই হৃদরোগের ঝুঁকিও কমে। লেবুতে প্রাপ্ত ভিটামিন সি ত্বকের ভাঁজ পড়া কমায়। যারা বেশি ভিটামিন সি গ্রহণ করেন তাদের ত্বক দীর্ঘদিন পর্যন্ত তারুণ্য ধরে রাখতে পারে।

এছাড়া শরীরের অতিরিক্ত মেদ গলাতে লেবু কাজ করে টনিকের মতো। নিয়মিত লেবুর শরবত কিংবা ভাতের সঙ্গে খেলে আপনার ওজন কমাতে সহায়তা করবে লেবুর পলিফেনল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। আপনাকে করবে ঝরঝরে। সেইসঙ্গে ইনসুলিন প্রতিরোধেও লেবুর রয়েছে অসাধারণ ক্ষমতা।

এই গরমে আপনি লেবুর শরবত খাবেন সেটি নিয়ে কোনো প্রকার পরামর্শ দেওয়ার নেই। তবে হ্যাঁ, সাবধান থাকতে হবে নগরীর বিভিন্ন স্থানে যেসব মৌসুমি শরবত বিক্রেতাদের কাছ থেকে। কেননা যে শরবত খেয়ে আপনি এতোগুলো সমস্যার সমাধান করতে চান সেই পানি যদি ‘ওয়াসার পানির মতো শতভাগ পিওর’ হয় তবে অস্বস্তি থেকেই যায়। তাই চেষ্টা করবেন বাইরের যেখানে সেখানে লেবুর শরবত না খেয়ে বাসায় গিয়ে খেতে। এতে লেবুর শরবত নিয়ে নিশ্চিন্ত থাকতে পারবেন আপনি। এই শরবত আপনার পরিপাকতন্ত্রকে করবে আরো সক্রিয় আর এতে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড সতেজ-সবল রাখবে আপনার কিডনিও।

 

টাইমস/এমএস

 

 

Share this news on: