গুলিস্তানের যাত্রীরা সদরঘাট যান ঘুমিয়ে!

রাজধানীর গুলিস্তান থেকে সদরঘাট পর্যন্ত মাত্র তিন কিলোমিটার পথ। আর এই পথের অনেক যাত্রী বাসে উঠেই ঘুমিয়ে পড়েন। এর কারণ জানতে চাইলে  যাত্রীরা জানায়, এই পথে যেতে কমপক্ষে পাঁচবার ট্রাফিক সিগন্যালে পড়তে হয়। আর এতেই কেটে যায় এক থেকে দেড় ঘণ্টা। তাই অনেকে এই সময়ে ঘুমিয়ে পড়ে।

আরমান  হেকিম নামে এক যাত্রী জানান, যে পথ হেঁটে পাড়ি দিতে সময় লাগে ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট। সেই পথ বাসে পাড়ি দিতে লাগে এক ঘণ্টার বেশি সময়। এই রুটে সবচেয়ে বেশি যানজট থাকে রোববার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত।

রোববার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সকালের দিকে গুলিস্তান থেকে বাহাদুর শাহ পার্ক এলাকা পর্যন্ত যাত্রীবাহী বাস পর্যাপ্ত পরিমাণে চলাচল করলেও তা ধীর গতিতে চলছে। আর এখানে সেখানে যানজট লেগেই আছে। দুপুর একটার পর থেকে রায়সাহেব বাজার মোড়, বাহাদুর শাহ পার্ক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে তিনটি ব্যারিকেড দিয়ে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করেছে পুলিশ।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এই পথেই চলাচল করেন। এছাড়া জজ কোর্ট ও সিএমএইচ কোর্ট রয়েছে এখানে। প্রতিদিন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ সদরঘাট দিয়ে লঞ্চে যাতায়াত করে। তীব্র যানজটে তাদের অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তাছাড়া রাস্তা দখল করে ট্রাক, কার্ভাড ভ্যান, লরি, রিকশা ও  ঠেলাগাড়ি রাখার কারণে সৃষ্টি হয় ভয়াবহ এ যানজটের।

আসাদুল হক নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বাংলাদেশ টাইমসকে বলেন, ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে বংশাল আলুবাজার পর্যন্ত সড়কের উভয় পাশে রয়েছে প্লাস্টিক, পাইপ, স্যানিটারিসহ বিভিন্ন পণ্যের পাইকারি দোকান। রয়েছে বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসের কার্যালয়। আলুবাজার থেকে তাঁতীবাজার মোড় পর্যন্ত আছে লোহা, ইস্পাত ও রড-সিমেন্টের পাইকারি দোকান। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত এসব দোকানের পণ্য আনা-নেওয়ার কাজে ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, লরিসহ নানা যানবাহন ব্যবহার করা হয়। রাস্তার উভয় পাশের সড়কের অর্ধেকের বেশি অংশ দখল করে রাখে এসব যানবাহন।

প্রতিদিনই গুলিস্তান থেকে সদরঘাট যাতায়াত করতে হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নবনীতাকে।

তিনি বাংলাদেশ টাইমসকে বলেন, ‘তীব্র যানজটের কারণে আমাদের সবার সময় নষ্ট হচ্ছে। আর গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য হাতে দুই-এক ঘণ্টা সময় বেশি নিয়ে বাসা থেকে বের হতে হয়। না হলে যথাসময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো যায় না।’

ঢাকা মহানগরীর ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগের কর্মকর্তা বিমান কুমার দাস বাংলাদেশ টাইমসকে বলেন, ‘এই রোডের মূল সমস্যাটা হচ্ছে রিকশা। এই রিকশার জন্যই আমাদের বিপদ বাড়ে। আর বঙ্গবাজার, পীর ইয়ামিনী মার্কেট, মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটসহ নানা মার্কেট রয়েছে।’

 

টাইমস/টিআর/এসআই

Share this news on: