গার্লফ্রেন্ডের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ৩৮ বছর ধরে অপেক্ষা!

ছবির লোকটাকে দেখে প্রথমেই কী ধারণা আসছে আপনার মনে? রাস্তা থেকে ধরে ছবি তুলছি মনে হয়? নাকি প্রান্তিক শ্রেণির কর্মজীবী মনে হয়? নাকি অন্যকিছু? যদি মনে হয়ে থাকে তবে একটা চমক দেই আপনাকে। এখন ২০২০ সাল চলছে। ১৯৮২ থেকে ২০২০ কত বছর হয়? ৩৮ বছর।

ছবিতে আমি অধম যার পাশে দাড়িয়ে আছি সেই ভদ্রলোক (সরু ভাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। ১৯৮২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন কিন্তু কোন এক কারণে তারপর আর বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে যাননি,এখনো হলেই থাকেন। ৩৮ বছর ইজ নট আ জোক... আমাদের অনেকের বয়সই ৩৮ হয়নি এখনও।

থেকে যাওয়ার কারণ শুনলে আপনি একইসাথে আশ্চর্য,হতভম্ব কিংবা রাগান্বিতও হতে পারেন। ১৯৮২ সালে যখন তিনি ক্লাস শুরু করেন তখন বেলা আপুর সাথে ক্লাসমেট হিসেবে তার পরিচয় হয়। আস্তে আস্তে বন্ধুত্ব, ভালোলাগা থেকে শেষপর্যন্ত ভালোবাসা। খুব ভালোই কাটছিল তাদের দিনকাল। সময়ের সাথে সাথে পরিস্থিতি পরিবর্তিত হতে থাকে। বেলা আপুর বিয়ের সম্বন্ধ আসে এক প্রবাসী প্রকৌশলীর সাথে। প্রকৌশলী সাহেব আপুকে বিয়ে করে বিদেশ নিয়ে যাবেন এমন লোভনীয় ছিল সেটি। আপু বলেছিলেন ভাইকে "কিছু একটা" করতে কিন্তু অবস্থা, বাস্তবতা আর পরিবেশের কারণে সেই সময় কিছু করা উনার জন্য সম্ভব হয়নি। আপুর বিয়ের রাতে উনি দূর থেকে দেখে এসেছিলেন। একটা চিঠিও লিখেছিলেন কিন্তু দেওয়া সম্ভব হয়নি।

তারপর? তারপর ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই থেকে গেছেন। ১৯৮২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত তার ঠিকানা - শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ভাই হয়তো বিশ্বাস করেন তার প্রেমিকা কোনদিন ফিরে আসবে তাই ক্যাম্পাসেই থেকে গেছেন এখন পর্যন্ত। হাশিখুশি মানুষটাকে দেখলে বুঝার উপায় নাই যে, উনি কিসের ভেতর দিয়ে এত বছর ঘরবাড়ি ছেড়ে হলে কাটাইছেন! সবকিছু ছেড়ে দিয়ে শুধু একটা অনুভূতির জন্য নিজের জীবনের ৩৮ টা বছর কাটিয়ে দেয়া কী সহজ বিষয় বলে মনে হয়?

ওহ হ্যাঁ, আমাদের তো আবার প্রেম করতে গেলে স্মার্টনেস, সিকিউর ফিউচার লাগে। কয়েকমাস প্রেম করে খেলাধূলা করে সবকিছু পানসে লাগে। আমাদের সমাজে প্রেমিক তার বন্ধুদের দ্বারা প্রেমিকাকে ধর্ষণ করায়। ভালো জব কিংবা স্বার্থ শেষ হলে আমরা প্রেমিকদের ছেড়ে দেই অবলীলায়। আমরা হয়ত এই লোকটির ভালোবাসা ও আত্মত্যাগের মর্ম বুঝব না। অনেকেই তার পাগলামির জন্য কটু মন্তব্যও করতে পারে। তবে, বিবেকে আবরণ পড়ে না গেলে এটা হয়ত বুঝবেন ভালোবাসা আসলেই সত্যিকারের একটি অনুভূতির নাম যা পৃথিবীর কোনকিছু দিয়ে ওজন করা যায়না, কেনাও যায়না।

সত্যিকার ভালোবাসার অনুভূতিগুলো অমর হোক।

সূত্র: সামিউল হোসাইন ভূঁইয়া, আশিক বিল্লাহ‘র ফেসবুক পোস্ট থেকে।

ছবি: মাসুদ পারভেজ।

 

টাইমস/জেকে/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
মেহজাবীন চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগের শুনানি বৃহস্পতিবার Dec 17, 2025
img
২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপের রেকর্ড প্রাইজমানি ঘোষণা ফিফার Dec 17, 2025
img
নিজের বিকৃত ছবি ছড়িয়ে পড়ায় ক্ষুব্ধ শ্রীলীলা Dec 17, 2025
img
হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন, দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার Dec 17, 2025
img
হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন: প্রেস উইং Dec 17, 2025
img
ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করতে জানুয়ারিতে পাকিস্তানে ফেরার পরিকল্পনা দুই ছেলের Dec 17, 2025
img
পৃথক স্মরণসভা নিয়ে এবার মুখ খুললেন দেওল ঘনিষ্ঠ মনোজ দেশাই Dec 17, 2025
img
শিল্পা শেঠির রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ম্যানেজার Dec 17, 2025
img
চব্বিশের ডামি প্রার্থীরা যেন ভোটে অংশ নিতে না পারেন: ইসিকে লিগ্যাল নোটিশ Dec 17, 2025
img
ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল সৌদি আরব Dec 17, 2025
img
কৃষকের ১১৭টি আমগাছ কেটে নিল দুর্বৃত্তরা Dec 17, 2025
img
বিয়ের আগে ব্যাচেলর পার্টি করতে শ্রীলঙ্কায় রাশমিকা! Dec 17, 2025
img

আইপিএল নিলাম

দল পাওয়া নিয়ে নাটকীয়তা, সুযোগ পেয়ে বললেন ‘নতুন জীবন পেলাম’ Dec 17, 2025
img
প্রাক্তন স্ত্রীর কাছে বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণ চাইলেন কুমার শানু Dec 17, 2025
img
‘রাজাকার’ বয়ানে হাসিনার পতন, আবারও এই ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে: হেফাজত Dec 17, 2025
img
নিজের বিচার সরাসরি সম্প্রচারের দাবি ইনুর Dec 17, 2025
img
আমার গানের গলার ক্রেডিট শাবনূরকেই দিতে চাই : কনকচাঁপা Dec 17, 2025
img
মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ট্রাভেল পাস চাননি তারেক রহমান Dec 17, 2025
img
চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই সরে দাঁড়ালেন পাকিস্তানের প্রধান কোচ Dec 17, 2025
img
দেশ-বিদেশ ঘুরতে প্রস্তুত বাঁধনের থ্রিলার ঘরানার সিনেমা ‘মাস্টার’ Dec 17, 2025