মুক্তিযোদ্ধাকে পিটিয়ে যুবলীগের পদ হারিয়েছিলেন রাজীব

অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর যুবলীগ নেতা তারেকুজ্জামান রাজীব। ফুটপাতের সামান্য টং দোকানদার থেকে কাউন্সিলর হয়ে যাওয়া রাজিবকে গ্রেপ্তারের পর থেকে তার বিরুদ্ধে উঠে আসছে বিভিন্ন অভিযোগের তথ্য।

এলাকাবাসী জানান, সাবেক এক প্রতিমন্ত্রীর হাত ধরে মোহাম্মদপুরে যুবলীগের মাধ্যমে রাজনীতিতে হাতেখড়ি রাজিবের। রাজীব ২০১৪ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কাউন্সিলর পদে জয়লাভ করেন। এরপর থেকেই মূলত ভাগ্য আরও খুলে যায় তার। আর পিছু তাকাতে হয়নি তাকে।

জানা গেছে, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফাহিমকে পিটিয়ে যুবলীগ থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন রাজিব। কিন্তু কিছুদিন না যেতেই তিনি যুবলীগ ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হন। এ জন্য যুবলীগের কেন্দ্রীয় এক নেতাকে এক কোটি ২০ লাখ টাকা দিতে হয়েছে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতা পদ পেতে রাজীবের জন্য যুবলীগ চেয়ারম্যানকে একটি ডিও লেটারও দিয়েছেন।

জানা গেছে, টং দোকানদার থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়া রাজীবের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ, চন্দ্রিমা হাউজিং, সাত মসজিদ হাউজিং, ঢাকা উদ্যানসহ বিভিন্ন এলাকায় দখলবাজি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে প্রবাসীদের বাসাসহ এলাকার অনেকের জমি দখলের অভিযোগও রয়েছে।

র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম জানান, মোহাম্মদীয়া হাউজিংয়ের ১ নম্বর রোডে রাজীবের যে বাড়িটি রয়েছে সেটি খুবই রাজকীয়। এ বাড়িটির বাজারমূল্য ১০ কোটি টাকার বেশি। বাড়ির আসবাবপত্র থেকে শুরু করে প্রতিটা জিনিস তিনি বিদেশ থেকে আমদানি করেছেন।

র‌্যাব কর্মকর্তা সারওয়ার আলম বলেন, কাউন্সিলর হওয়ার পরপরই রাজীব ২০১৬ সালে তিনটি কোম্পানি খুলেছেন। এগুলো হল- সিলিকন, এক্কা এবং নাইমা এন্টারপ্রাইজ। দুঃখজনক হলেও এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের আড়ালে তিনি জমি দখল করেছেন।

কিছু কিছু জায়গায় লোকজনকে অত্যন্ত কম মূল্যে জমি বিক্রি করতে বাধ্য করেছেন। অপকর্ম করতে গিয়ে রাজীব আত্মীয় ও অনাত্মীয় যেসব লোকজনকে ব্যবহার করেছেন, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে গ্রেপ্তারের পর র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-১-এর ডিএডি মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ভাটারা থানায় কাউন্সিলর রাজীবের বিরুদ্ধে অস্ত্র এবং মাদক আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন।

এরপর তাকে প্রত্যেক মামলায় ১০ দিন করে রিমান্ড চেয়ে রাতেই ঢাকা মহানগর হাকিম ইয়াসমিন আরার আদালতে হাজির করে পুলিশ। শুনানি শেষে রোববার রাত ১২টা ১০ মিনিটে আদালত দুই মামলায় ৭ দিন করে ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

 

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on:

সর্বশেষ