পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় করতোয়া নদীতে তীর্থযাত্রীদের নৌকা ডুবির ঘটনায় আরও ২২ জনের লাশ উদ্ধারের পর মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৭ জনে। আর নিখোঁজের সংখ্যা ৩৭ জন।
সোমবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উপজেলার মারেয়া বামনহাট ইউনিয়ন পরিষদে খোলা তথ্যকেন্দ্র থেকে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪১ জনে দাঁড়িয়েছে নিশ্চিত করেছিলেন পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) ও তদন্ত কমিটির প্রধান দীপঙ্কর রায়।
তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন। দুর্ঘটনা তদন্তে আমরা কাজ শুরু করেছি।
এর আগে দীপঙ্কর রায় বলেছিলেন, নৌকাডুবির ঘটনায় মৃত ৩৯ জনের মধ্যে নারী ২১ জন, পুরুষ সাতজন ও ১১ শিশু রয়েছে। এ ঘটনায় আরও ৫১ জন নিখোঁজ।
নিহতদের মধ্যে পলি রানী (১৪), লক্ষ্মী রানী (২৫), অমল চন্দ্র (৩৫), শোভা রানী (২৭), দীপঙ্কর (৫), প্রিয়ান্তা রানী (৫), খুকি রানী (৩৫), প্রলিমা রানী (৫৫), তারা রানী (২৪), শোনেকা রানী (৬০), ফাল্গুনি রানী (৫৫), প্রমিলা রানী (৭০), ধনবালা (৪৭), সুমিত্রা রানী (৫৭), সফলতা রানী (৪০), শিমলা রানী (৩৫), নৌকার মাঝি হাসান আলী (৫২), উশোষী রানী (২), তনুশ্রি রানী (২), শ্রেয়শী রানী (২), বিমল চন্দ্র (৪৫), শ্যামলি রানী (৩৫), জোতিষ চন্দ্র (৫৫) রূপালি রানীর (৩৫) পরিচয় শনাক্ত হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী উপ-পরিচালক শেখ মো. মাহাবুবুল আলম জানান, পঞ্চগড়সহ আশপাশের জেলার ফায়ার সার্ভিসের আট ইউনিট উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। এছাড়া রংপুর, কুড়িগ্রাম ও রাজশাহী থেকে আসা তিনটি দলের ৯ ডুবুরি উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রোববার দুপুরে মহালয়া দেখতে আউলিয়া ঘাট থেকে বদশ্বেরী ঘাটে যাচ্ছিল নৌকাটি। নৌকায় ১০০ জনেরও বেশি যাত্রী ছিল। যাত্রার শুরুতেই নৌকাটি দুলতে থাকে। দুলতে দুলতে নদীর মাঝে গিয়ে নৌকাটি ডুবে যায়।
এ ঘটনায় পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রধান ও পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দীপঙ্কর রায় ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখন পর্যন্ত ৩৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
কয়েকজন বাদে বাকি সবার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গতকাল নিখোঁজ ছিল ৬৫ জন। আজ সকাল থেকে ১৪ জনের লাশ পাওয়া গেছে। নিখোঁজ বাকিদের উদ্ধারে কাজ চলছে।