ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে উঠেছে। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, বাংলাদেশে আটক প্রত্যেক ব্যক্তিকে যথাযথ আইনি সুযোগ দিতে হবে এবং মৌলিক স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের সঙ্গে আচরণ করতে হবে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মুখ্য উপ-মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল এই কথা বলেন।
ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর কথিত সহিংসতা নিয়ে যে উদ্বেগ তা সমাধান করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা তা জানতে চাওয়া হয়। জবাবে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, যেসব দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক রয়েছে তাদের কাছে সবসময় আমরা এটি স্পষ্ট বরেছি যে মৌলিক স্বাধীনতার প্রতি সম্মান দিতে হবে। ধর্মীয় স্বাধীনতা ও মৌলিক মানবাধিকারের প্রতি সম্মান থাকতে হবে। যেকোনো প্রতিবাদ শান্তিপূর্ণ হওয়া উচিত। যেকোনো ধরনের দমনমূলক কার্যকলাপ নয়, বরং সরকারগুলোকে আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে। এই প্রসঙ্গে মৌলিক মানবাধিকার রক্ষা করতে হবে। আমরা এটি বারবার গুরুত্ব দিয়ে বলব।
ইসকন নেতা চিন্ময় দাস নিয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই বিষয়ে আমার কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। তবে আবারও বলছি, আমরা সবসময় জোর দিয়ে বলি যে, যারা আটক রয়েছে তাদের যথাযথ আইন প্রতিনিধিত্ব পাওয়ার সুযোগ থাকা উচিত এবং তাদের মৌলিক স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের সঙ্গে আচরণ করা উচিত।
গত আগস্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর কথিত হামলার বিষয়ে একের পর এক বিবৃতি দিয়ে আসছে ভারত সরকার। এ নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে অতিরঞ্জিত করে বিভিন্ন খবরও প্রকাশ করা হচ্ছে। তবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার বরাবরই ভারতের এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। সরকার বলছে, সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে প্রচুর অপতথ্য বা ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (০৩ ডিসেম্বর) ইন্ডিয়া টুডে-এর সঙ্গে এক একান্ত সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, শফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশে হিন্দুরা বেশ সুরক্ষিত। তারা শেখ হাসিনার শাসনামলের চেয়ে এখন বেশি সুরক্ষিত। আমরা এখন ভারত থেকে ব্যাপক অপতথ্যের অপপ্রচার দেখতে পাচ্ছি।
তিনি জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে হিন্দুদের বিরুদ্ধে ব্যাপক নিপীড়ন চালানো হয়েছিল। তবে সেই সময় কোনো গণমাধ্যমে একটি রিপোর্টও প্রকাশিত হয়নি।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সময় এটা ঘটেছিল বলে ভারতীয় কোনো গণমাধ্যমে একটি রিপোর্টও প্রকাশিত হয়নি। কোনো প্রবাসী সংগঠন এ নিয়ে কথা বলেনি এবং ব্রিটিশ পার্লামেন্টেও এ বিষয়টি কেউ উত্থাপন করেনি।
ইসকনের ওপর দমন-পীড়নের অভিযোগ অস্বীকার করে শফিকুল আলম বলেন, সরকার বরং ওই ধর্মীয় সংগঠনের কেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তার জন্য সেনা পাঠিয়েছিল। আমরা নিশ্চিত করেছি যে হিন্দুরা দুর্গাপূজা উদযাপন করতে পারে। আমরা কি ইসকনকে নিষিদ্ধ করেছি? আমরা বরং তাদের মন্দিরের নিরাপত্তার জন্য সেনা পাঠিয়েছি।