ফেলানীর পরিবারের দায়িত্ব নিলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

১৪ বছর আগে কুড়িগ্রাম সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত কিশোরী ফেলানীর পরিবারের দায়িত্ব নিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

বুধবার দুপুরে জুলাই বিপ্লবের অন্যতম এই নায়কের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে একটি পোস্ট দিয়ে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সেখানে ফেলানীর মা-বাবা ও ভাইয়ের সঙ্গে আসিফের তোলা একটি ছবিও যুক্ত করা হয়েছে।

ফেসবুক পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘সীমান্তে হত্যা করে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রাখা ফেলানীর পরিবারের দেখাশোনার দায়িত্ব নিয়েছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।’

পোস্ট করা ছবিটির ওপরে লেখা রয়েছে, ‘ফেলানীর ভাই-বোনের পড়াশোনা কর্মসংসথানসহ পরিবারের দায়িত্ব নিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।’

পোস্টটি মাত্র এক ঘণ্টায় ১০ হাজারের বেশি নেটিজেন লাইক এবং লাভ রিঅ্যাক্ট দিয়েছেন। উপদেষ্টা আসিফ ফেলানীর পরিবারের দায়িত্ব নেওয়ায় তার এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন পাঁচ শতাধিক নেটজনতা।

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীর রামখানা অনন্তপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নির্মম হত্যার শিকার হয় কিশোরী ফেলানী। দীর্ঘ সাড়ে চার ঘণ্টা কাঁটাতারে ঝুলে ছিল তার মরদেহ। মঙ্গলবার ফেলানীর সেই নির্মম হত্যাকাণ্ডের ১৪ বছর পার হয়েছে।

সীমান্তে আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডে গণমাধ্যমসহ বিশ্বের মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিল ভারত। পরে বিএসএফের বিশেষ কোর্টে দুই দফায় বিচারিক রায়ে খালাস দেওয়া হয় অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে। এ রায় প্রত্যাখ্যান করে ভারতীয় মানবাধিকার সংগঠন মাসুমের সহযোগিতায় ভারতীয় সুপ্রিমকোর্টে রিট করে ফেলানীর পরিবার।

ঘটনার দিন ভোর ৬টায় ফুলবাড়ির অনন্তপুর সীমান্ত টপকে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে বিএসএফের গুলিতে বিদ্ধ হয়ে আধাঘণ্টা ধরে ছটফট করে নির্মমভাবে মৃত্যু হয় কিশোরী ফেলানীর।

এ ঘটনায় বিশ্বব্যাপী তোলপাড় শুরু হলে ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট ভারতের কোচবিহারে জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্সেস কোর্টে ফেলানী হত্যা মামলার বিচার শুরু হয়। বিএসএফের এ কোর্টে সাক্ষী দেন ফেলানীর বাবা নূর ইসলাম ও মামা হানিফ।

ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর আসামি অমিয় ঘোষকে খালাস দেয় বিএসএফের বিশেষ আদালত। পরে রায় প্রত্যাখ্যান করে পুনঃবিচারের দাবি জানায় ফেলানীর বাবা। ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পূর্নঃবিচার শুরু হলে ১৭ নভেম্বর আবারও আদালতে সাক্ষ্য দেন ফেলানীর বাবা।

২০১৫ সালের ২ জুলাই এ আদালত পুনরায় অমিয় ঘোষকে খালাস দেয়। রায়ের পরে একই বছর ১৪ জুলাই ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ ‘মাসুম’ ফেলানীর বাবার পক্ষে দেশটির সুপ্রীম কোর্টে রিট পিটিশন করে।

ওই বছর ৬ অক্টোবর রিট শুনানি শুরু হয়। ২০১৬ এবং ১৭ সালে কয়েক দফা শুনানি পিছিয়ে যায়। পরে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য হলেও শুনানি হয়নি। এরপর ২০১৯ এবং ২০২০ সালে কয়েকবার শুনানির তারিখ ধার্য হলেও সম্পন্ন হয়নি আজও।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা আজহারের রিভিউ শুনানি ২৩ জানুয়ারি Jan 09, 2025
img
বোলিং পরীক্ষায় আবারও ফেল সাকিব, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে শঙ্কা Jan 09, 2025
img
জুলাই গণঅভ্যুত্থান বিষয়ক বিশেষ সেল গঠন Jan 09, 2025
img
ইতিহাসের সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক দাবানলে পুড়ছে লস অ্যাঞ্জেলেস, নিহত ৫ Jan 09, 2025
img
সংসদের পাশাপাশি স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার Jan 09, 2025
img
সাভারে বাস-অ্যাম্বুলেন্স সংঘর্ষে আগুন, নিহত ৪ Jan 09, 2025
img
জেসিআই বরিশালের সাধারন সভা ২০২৪ অনুষ্ঠিত Jan 09, 2025
img
ঢাকা-১০ আসনের সাবেক এমপি শফিউল গ্রেপ্তার Jan 08, 2025
img
লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি হলেন খালেদা জিয়া Jan 08, 2025
img
ফেলানীর পরিবারের দায়িত্ব নিলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ Jan 08, 2025