রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি আলোচনা নিয়ে সৌদি আরবের জেদ্দায় মধ্যস্থতাকারীদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবারের বৈঠকে ইউক্রেন ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলেও, এর বাস্তবায়ন রাশিয়ার সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে। রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, ইউক্রেনের সম্মতির পর আজ বুধবার মস্কো জানায়, তারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেবে।
তবে রাশিয়ার একাধিক সূত্রের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এতে রাজি হতে না-ও পারেন বলে ধারণা করছে তারা।
ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে উদ্যোগী হন। কিন্তু গত মাসের শেষে হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের পর পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে মোড় নেয়। ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা স্থগিত করে ট্রাম্প প্রশাসন।তবে এখন ইউক্রেন যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ায় স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের পশ্চিমা মিত্ররা বলছে, বল এখন রাশিয়ার কোর্টে। মস্কো যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় কি না, সেটা দেখেই বোঝা যাবে, তারা শান্তি চায় কি না।
ইউক্রেনের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়া প্রসঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, ‘এটা এখন পুরোপুরি নির্ভর করছে রাশিয়ার ওপর।
তারা হ্যাঁ বলে কি না, সেটাই দেখার বিষয়। যদি রাশিয়া রাজি হয়, তাহলে সেটা হবে খুবই ভালো খবর। আর যদি রাশিয়া রাজি না হয়, তাহলে আমরা অবশ্যই সবকিছু ভেবে দেখব। বোঝার চেষ্টা করব, তারা কী চায়।’
জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ আজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স–এ দেওয়া পোস্টে বলেন, ‘৩০ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতির এ পরিকল্পনা ইউক্রেনে শান্তি ফেরানোর পথে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ।এখন এটা নির্ভর করছে পুতিনের ওপর।’
যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ইউক্রেনের প্রস্তাব নিয়ে গতকাল সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ। তিনি বলেন, ইউক্রেনের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতির বিস্তারিত যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানার অপেক্ষা করছেন তারা।
পেসকভ বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও এবং যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎজ আগামী দিনগুলোতে নানা মাধ্যমে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। চলমান আলোচনা ও আলোচনায় হওয়া সমঝোতার বিষয়ে আমাদের জানানো হবে।’ মস্কো একটি যুদ্ধবিরতিতে রাজি হবে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আপনি তো সময়ের আগেই এ প্রশ্নের উত্তর চাইছেন।’
এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ‘সৌদি আরবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের মধ্যে গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। সম্ভাব্য ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি যদি হয়ে যায়, তাহলে এই সময়ে বড় পরিসরে একটি শান্তিচুক্তির খসড়া তৈরির কাজ হতে পারে।’
এমআর/টিএ