মোংলা বন্দরের আধুনিকায়নসহ ৭ থেকে ৮টি সমঝোতা সই হতে পারে প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে। এ সফরেই রোবট ফিজিওথেরাপি পুনর্বাসন কেন্দ্র এবং চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট স্থাপনসহ বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের ঘোষণা আসবে। এমনটাই জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়।
স্থানীয় কূটনীতিকরা বলছেন, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৬ থেকে ২৯ মার্চ চীন সফর করবেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি ২৬ মার্চ দুপুরে চীনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন। চীনের হাইনান প্রদেশে বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়ার-বি/এফ/এ সম্মেলনে যোগ দেবেন ড. ইউনূস।
সম্মেলনের উদ্বোধনী প্লেনারি সেশনে বক্তব্য দেয়ার পাশাপাশি চীন সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিক সাইড লাইন বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা। তবে সফরের মূল আকর্ষণ থাকবে চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ড. ইউনূসের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক।
২৮ মার্চ বেইজিংয়ের ‘গ্রেট হল অব দ্য পিপল’- প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করতে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা। একই দিনে হুয়াওয়ে কোম্পানির উচ্চ-প্রযুক্তিসম্পন্ন এন্টারপ্রাইজ পরিদর্শন করবেন তিনি। ২৯ মার্চ চীনের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় পিকিং ইউনিভার্সিটি তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করবে।
ঢাকা-বেইজিংয়ের কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, ড. ইউনূসের বেইজিং সফরে ১২ থেকে ১৫টি সমঝোতা সইয়ের প্রস্তাব দিয়েছে চীন। যার মধ্যে চীনের প্রেসিডেন্টের বৈশ্বিক উন্নয়ন উদ্যোগ- জি/ডি/আইও রয়েছে। তবে এখনই বেইজিং প্রস্তাবিত সব সমঝোতায় সই করতে চায় না ঢাকা। প্রধান উপদেষ্টার এ সফরে ৮টির মতো সমঝোতায় সই করতে সম্মত হয়েছে ঢাকা।
এর মধ্যে আছে মোংলা বন্দর আধুনিকায়ন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন সহায়তা, ষষ্ঠ চীন-মেত্রী সেতুর সংস্কার, বাংলাদেশ হাইওয়ে নেটওয়ার্ক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, প্রতি বছর দুই দেশের নির্বাচিত ৫০টি করে বই বাংলা-চাইনিজ ভাষায় অনুবাদ ও দুর্যোগ সহযোগিতা বিষয়ক প্রকল্প।
এ ছাড়া, চীনের সঙ্গে পানি সহযোগিতা সমঝোতা স্মারক নবায়ন নিয়েও কাজ করছেন সংশ্লিষ্টরা। মোংলা বন্দর আধুনিকায়ন প্রকল্পের ব্যয় ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি ধরা হলেও তাতে চীন দেবে ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি।
সফর সংশ্লিষ্ট এক কূটনীতিক জানান, প্রধান উপদেষ্টার বেইজিং সফর নিয়ে চলতি সপ্তাহের শুরুতেই আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে রাজনৈতিক সম্পর্ক, বাণিজ্য, স্বাস্থ্য, পানি, বৈদেশিক ঋণ, কৃষি, কানেক্টিভিটি, জ্বালানিসহ বিভিন্ন সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টার সফরে কোন কোন বিষয়গুলো তুলে ধরা যেতে পারে, সে বিষয়েও মতামত দেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে গত ১১ মার্চ চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, 'যারাই ক্ষমতায় থাকুক না কেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেবে চীন। প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন চীন সফর পারস্পরিক বোঝাপড়া জোরদার করবে। এটি দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় সফর হবে।'
আরএইচ/টিএ