ওদের হাতের, ওদের কলমের কোনো সংস্কার আমরা সহজে মেনে নেব না বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, সংস্কার যদি করেন, আমরা কারেকশন (সংশোধন) করব। বিএনপি সেই কারেকশন অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মিলেমিশে ঠিক করে তা জাতির কাছে তুলে ধরবে।
রোববার (১৬ মার্চ) বিএনপি এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল শাখা আয়োজিত আলোচনাসভা ও ইফতার মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘ওই সব তথাকথিত বুদ্ধিজীবী, যাঁরা এ দেশের নাগরিক পর্যন্ত নন, তাঁদের দিয়ে আপনারা সংস্কার করবেন, এটা আমরা মেনে নেব না।’
বিশেষ কিছু দলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য সংস্কার চলছে বলে অভিযোগ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমরা চাই, নির্বাচনের জন্য যতটুকু সংস্কার দরকার, ততটুকু করে নির্বাচন দিন।
নির্বাচনের পর যে-ই ক্ষমতায় আসুক, তাকে আমরা সালাম দিয়ে মেনে নেব। কোনো অনির্বাচিত সরকারের, ব্যক্তির কোনো কথা আমরা মেনে নেব না।’
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আপনারা নির্বাচনী সংস্কার করুন। বাকি সংস্কার নির্বাচিত সরকার করবে।’
বিনা ভোটে দেশের মানুষকে পরিচালনার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘কয়েকজন তথাকথিত বুদ্ধিজীবীর পরামর্শে দয়া করে দেশকে অশান্তির দিকে ঠেলে দেবেন না। আমরা শান্তি চাই। এ দেশের মানুষ বহু জেল-জুলুম সহ্য করেছে। আমরাও বহু জেল খেটেছি। আর জেল খাটতে চাই না। দেশটাতে বহু বছর পর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও দেশের মানুষের কষ্টে শান্তি এসেছে। দয়া করে দেশটাকে অশান্তির দিকে ঠেলে দেবেন না।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে বহু কথা শুনেছি, কেউ বলছে নির্বাচন হবে, কেউ বলছে হবে না। আমরা বিশ্বাস রাখতে চাই, ড. ইউনূস যে কথা বলেছেন তিনি তাঁর কথা রাখবেন। আশা করছি, ডিসেম্বরের মধ্যে একটা নির্বাচন পাব। আমরা দেখছি, ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে একদল লোক বোকা পেয়েছে, যা খুশি বলে যাচ্ছে, করে যাচ্ছে। ওই লোকগুলো, যারা সংবিধান নতুন করে লিখতে চায়।’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আপনার ডান পাশে, বাঁ পাশে যাঁরা পরামর্শ দেন, তাঁরা কারা? তাঁদের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক কতটুকু? কয়েকজন তথাকথিত বুদ্ধিজীবীর পরামর্শে দেশকে অশান্তির দিকে ঠেলে দেবেন না।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সমন্বয়কদের একজন বলছে, ৫ আগস্টের আগে বিএনপি এক দফার পক্ষে ছিল না। তারা নাকি বিএনপি মহাসচিবের কাছে গেলে তিনি জানিয়েছেন, এক দফার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। আসলে বিএনপি ১৭ বছর আন্দোলন করেছে। একটাই দাবি ছিল, শেখ হাসিনার পতন, এটা মুখ ফুটে বলার দরকার নেই।’
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ডা. মিলন হলে আয়োজিত এই ইফতার মাহফিলে বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম, সদস্যসচিব তানভীর আহমেদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য দেন।
আরএইচ