লাইভে এসে স্বামীর আত্মহত্যা, ৪৪ মিনিট ধরে চুপচাপ দেখলেন স্ত্রী

স্ত্রীর পরকীয়ার জেরে চলছিল পারিবারিক অশান্তি। আর এরই জেরে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ইনস্টাগ্রামে লাইভ এসে আত্মহত্যা করেছেন এক ব্যক্তি। আত্মহত্যার আগে ওই ব্যক্তি তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগও করে গেছেন।

এছাড়া আত্মহত্যার আগে ৪৪ মিনিট ধরে স্বামীর লাইভ দেখেছেন অভিযুক্ত স্ত্রী। তবে তিনি কাউকে সতর্ক করেননি বা তার স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টাও করেননি। এই ঘটনায় পুলিশ ওই ব্যক্তির স্ত্রী ও তার শাশুড়িকে গ্রেফতার করেছে।

চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের মধ্যপ্রদেশে। গত শুক্রবার (২১ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, মধ্যপ্রদেশের রেওয়া জেলায় ২৬ বছর বয়সী এক ব্যক্তি ইনস্টাগ্রামে লাইভ স্ট্রিমিং করে আত্মহত্যা করেছেন। আর তার স্ত্রী কোনও ধরনের সাহায্য না করে এবং কাউকে সতর্ক না করে ৪৪ মিনিট ধরে নীরবে সেই লাইভ দেখেছেন। এই ঘটনার পর অভিযুক্ত স্ত্রী প্রিয়া শর্মা এবং তার মাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নিহত ওই ব্যক্তির নাম শিব প্রকাশ ত্রিপাঠি। নিজের বৈবাহিক জীবন নিয়ে তিনি লড়াই করছিলেন বলে জানা গেছে এবং আত্মহত্যার মতো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আগে তিনি তার স্ত্রীর সাথে পুনর্মিলনের জন্য একাধিকবার চেষ্টাও করেছিলেন।

ইন্ডিয়া টুডে বলছে, ত্রিপাঠি দুই বছর আগে প্রিয়া শর্মাকে বিয়ে করেছিলেন। প্রাথমিকভাবে তাদের সম্পর্ক ভালো থাকলেও কয়েক মাস পরই তিনি জানতে পারেন, তার স্ত্রী গোপনে অন্য কারও সাথে যোগাযোগ করছেন। তিনি এটি কথা অন্য কাউকে জানাননি এবং এর পরিবর্তে তিনি তার স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করার চেষ্টা করেন।

কিন্তু ত্রিপাঠি পরবর্তীতে দুর্ঘটনার শিকার হন যার ফলে তিনি চলাচলের জন্য ক্রাচের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। এই সময়ের মধ্যে তার স্ত্রী প্রিয়া শর্মা তাদের নবজাতক সন্তানকে নিয়ে তার বাবা-মায়ের বাড়িতে চলে যান। ত্রিপাঠি তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে একাধিকবার সেখানে গেলেও প্রিয়া ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানান। এছাড়া তাকে মারধর করার অভিযোগও রয়েছে।
ঘটনার দিন ত্রিপাঠি আবারও তার স্ত্রী প্রিয়া শর্মাকে বোঝাতে গিয়েছিলেন কিন্তু তাকে অপমানিত ও মারধর করা হয়েছিল বলে জানা গেছে। তিনি বাড়িতে ফিরে একটি ঘরে নিজেকে আটকে রাখেন। এর পরপরই তিনি ইনস্টাগ্রামে লাইভ ভিডিও শুরু করেন এবং গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। তার স্ত্রী প্রিয়া শর্মা ৪৪ মিনিট ধরে সেই লাইভ স্ট্রিম দেখেছিলেন কিন্তু কাউকে কিছু জানাননি।

পরিবারের সদস্যরা ঘটনাটি জানতে পেরে ও ভিডিওটি দেখে পুলিশকে জানান। সাব-ডিভিশনাল পুলিশ অফিসার উমেশ প্রজাপতি বলেন, তদন্তে প্রিয়া শর্মার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়া গেছে। পারিবারিক বিরোধ আত্মহত্যার কারণ বলে মনে করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

গ্রেফতারকৃত প্রিয়া শর্মা এবং তার মাকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রাখা হয়েছে। ঘটনার আরও তদন্ত চলছে। আরও প্রমাণ সংগ্রহের জন্য ত্রিপাঠির ফোন এবং সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে ইন্ডিয়া টুডে।  

এসএন 

Share this news on: