যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনার জন্য প্রস্তুত ইরান

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনার জন্য প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে ইরান। সোমবার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেন, ‘পরোক্ষ আলোচনার পথ খোলা আছে।’

এর আগে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন পারমাণবিক চুক্তির জন্য আলোচনার আহ্বান জানান। তবে আরাগচি স্পষ্ট করেছেন যে, ‘ইসলামী প্রজাতন্ত্রের প্রতি অপর পক্ষের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত’ তেহরান সরাসরি আলোচনায় যাবে না।

এই শীর্ষ ইরানি কূটনীতিক আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের হুমকি ও ট্রাম্পের ‘সর্বোচ্চ চাপ’ নীতির মধ্যে ইরান কোনো সরাসরি আলোচনায় যাবে না।

ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার প্রথম মেয়াদে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি থেকে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন এবং তেহরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেন। ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত এই চুক্তির আওতায় ইরানকে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করার শর্তে নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।

পশ্চিমা দেশগুলো, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে ইরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির অভিযোগ করে আসছে।তবে তেহরান দাবি করে, তাদের সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম শুধু শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে। ৭ মার্চ ট্রাম্প জানান, তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির কাছে একটি চিঠি পাঠিয়ে পারমাণবিক আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন এবং তেহরান রাজি না হলে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

ইরানি সংবাদ সংস্থা ফার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১২ মার্চ সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা আনোয়ার গারগাশ চিঠিটি তেহরানে হস্তান্তর করেন। পরে শুক্রবার খামেনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের হুমকি ‘তাদের কোথাও নিয়ে যাবে না’।পাশাপাশি হুঁশিয়ারি দেন, ইরানের বিরুদ্ধে কোনো অকল্যাণকর পদক্ষেপ নেওয়া হলে তারা পাল্টা ব্যবস্থা নেবেন।
 
আরাগচি বৃহস্পতিবার বলেন, ট্রাম্পের চিঠিটির ‘বেশির ভাগই হুমকি’, তবে এটি কিছু সুযোগও সৃষ্টি করতে পারে এবং তেহরান শিগগিরই এর জবাব দেবে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভেন উইটকফ শুক্রবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ট্রাম্পের লক্ষ্য হলো সামরিক সংঘাত এড়ানো এবং ইরানের সঙ্গে আস্থা গড়ে তোলা। তিনি জোর দিয়ে বলেন, চিঠিটি হুমকি হিসেবে দেওয়া হয়নি।

১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের মাধ্যমে পশ্চিমা সমর্থিত শাহের পতনের পর থেকে তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন রয়েছে।
তার পর থেকে তেহরানে সুইস দূতাবাস দুই দেশের মধ্যে বার্তা আদান-প্রদানের মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে। পারস্য উপসাগরীয় রাষ্ট্র ওমান এর আগে ইরানের পারমাণবিক ইস্যুতে তথাকথিত ‘মাসকাট প্রক্রিয়া’র মাধ্যমে পরোক্ষ আলোচনার মধ্যস্থতা করেছিল, যা ‘এই মুহূর্তে স্থগিত রয়েছে’ বলে আরাগচি গত অক্টোবরে জানিয়েছিলেন।

এমআর/টিএ


Share this news on:

সর্বশেষ

img
ডিসেম্বরের মধ্যে জুলাই-আগস্টের হত্যাযজ্ঞের মাস্টারমাইন্ডের বিচার শেষ হবে: চিফ প্রসিকিউটর Jul 16, 2025
img
শিবিরের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য প্রচার করায় ঢাবি শিক্ষককে লিগ্যাল নোটিশ Jul 16, 2025
img
কান্নার দৃশ্যে গ্লিসারিন নয়, শুভশ্রীর চোখের জল নিজে থেকেই আসে Jul 16, 2025
img
গোপালগঞ্জে ১৪৪ ধারা জারি Jul 16, 2025
img
সৃজিতের সেলফি ঘিরে প্রশ্ন কে এই তরুণী Jul 16, 2025
img
একটি পক্ষ মুক্তিযুদ্ধ ভুলিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে: হাফিজ উদ্দিন Jul 16, 2025
img
পিএসসি সংস্কারের ১১ দফা দাবি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ Jul 16, 2025
img
সারাদেশে ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের Jul 16, 2025
img
এনসিপির সমাবেশে আওয়ামী লীগের হামলায় উদ্বেগ জানিয়ে ফখরুলের বিবৃতি Jul 16, 2025
img
বিশ্বে গ্রহণযোগ্য হবে এমন বিচার করতে চাই : আসিফ নজরুল Jul 16, 2025
img
আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে কেউ আটকাতে পারবে না : আব্দুস সালাম Jul 16, 2025
img
রাজবাড়ীতে এনসিপির পদযাত্রা আগামীকাল Jul 16, 2025
img
হাসনাত আব্দুল্লাহকে নিরাপদে সরিয়ে নিলো পুলিশ Jul 16, 2025
img
যদি বেঁচে ফিরি, মুজিববাদের কবর রচনা করেই ফিরব: সারজিস Jul 16, 2025
img
সমাবেশ শেষে ফেরার পথে এনসিপির গাড়িবহরে আবারও হামলা Jul 16, 2025
img
ঢাকার নাগরিক সেবার মান যাচাইয়ে দক্ষিণ সিটির বিশেষ কমিটি Jul 16, 2025
img
বহিষ্কৃত যুবদল নেতাকে পুলিশের হাতে তুলে দিলেন বিএনপি নেতা Jul 16, 2025
img
সারাদেশের মানুষকে গোপালগঞ্জে যাওয়ার আহ্বান সারজিস আলমের Jul 16, 2025
img
বাবার সঙ্গে অমিল ইব্রাহিমের! কোন বিষয়ে সাইফের তুলনায় ছেলেকে এগিয়ে রাখলেন কাজল? Jul 16, 2025
img
এনসিপির গাড়িবহরে হামলা, রণক্ষেত্রে পরিণত গোপালগঞ্জ Jul 16, 2025