রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও উপস্থাপক জিল্লুর রহমান বলেছেন, নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন এখনো বাস্তবে রূপ নেয়নি। বরং পুরনো অসুস্থ চর্চাগুলো নতুন নামে নতুন রূপে ফিরে আসছে। এই পরিস্থিতি বদলানোর জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরে মৌলিক সংস্কার প্রয়োজন। দলের ভেতরে গণতান্ত্রিক চর্চা, জবাবদিহিতা, নৈতিকতা এসব কিছুর বিকাশ ঘটাতে হবে।
না হলে নতুন বাংলাদেশ গড়বার স্বপ্ন ভেঙে যাবে। মানুষ এখনো আশা হারায়নি। ছাত্রজনতার অভ্যুত্থান প্রমাণ করেছে জনগণ চাইলেই কর্তৃত্ববাদী শাসন ভেঙে দিতে পারে। কিন্তু সেই আত্মত্যাগ বৃথা হয়ে যাবে যদি রাজনৈতিক দলগুলো কেবল ক্ষমতার ভাগাভাগিতে ব্যস্ত থাকে।
সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলের এক ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন।
জিল্লুর রহমান বলেন, ‘মানুষ ভেবেছিল কর্তৃত্ববাদী সরকারের পতনের পর অন্তত এইসব অসুস্থ চর্চা বন্ধ হবে। কিন্তু বাস্তবে তার কোনো লক্ষণ নেই। দখলবাজি, চাঁদাবাজি, রাষ্ট্রীয় সম্পদের লুট, মামলা বাণিজ্য, গ্রেপ্তার বাণিজ্য, আধিপত্য বিস্তারকেন্দ্রিক সহিংসতা এসব যেন রাজনীতির অংশ হয়ে গেছে।
নতুন রাজনৈতিক দলগুলো একই পথে হাঁটছে। ছাত্রদের আন্দোলনের মাধ্যমে যারা নতুন দল গঠন করেছে তারাও আজ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে। ফলে মানুষ দেখতে পাচ্ছে আসলে রাজনীতির চরিত্র বদল হয়নি।’
তিনি আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমলে যেমন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী দলীয়করণ হয়েছিল এখনো তারা নতুন ক্ষমতাবান গোষ্ঠীর সঙ্গে সক্ষতা গড়ে তুলেছে। এখানে প্রশাসনেরও বড় দায় আছে।
ফ্যাসিস্ট আমলে যারা ঘুষখোর ও দমনযন্ত্রের অংশ হয়ে কাজ করেছে তারা এখন অন্য কোনো দলের পরিচয়ে নিজেদের রক্ষা করছে।
সুযোগসন্ধানী রাজনৈতিক নেতারা তাদের ব্যবহার করছে। অথচ প্রকৃতভাবে আন্দোলনে অংশ নেওয়া মানুষেরা উপেক্ষিত হচ্ছে। প্রশাসনের এই দ্বিমুখী চরিত্র জনগণের হতাশা বাড়াচ্ছে।’
জিল্লুর আরো বলেন, ‘রাজনৈতিক সংস্কৃতির এই ব্যর্থতা গণমাধ্যম ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে প্রতিফলিত হচ্ছে। সাংবাদিক সমাজে বিভাজন তৈরি হয়েছে।অনেক সাংবাদিক যারা আন্দোলনের সময়ে কণ্ঠকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন তারাও এখন উপেক্ষিত। এতে জাতীয় ধারার মিডিয়া কর্মীদের মধ্যে হতাশা ছড়াচ্ছে।’
এমআর/এসএন