রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহের উর রহমান বলেছেন, কাদের সিদ্দিকীর মতো মানুষ যদি বারবার রাজনৈতিক অবস্থান পাল্টে ফেলেন, ক্ষমতার কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য নানা বিপরীতমুখী বক্তব্য দেন, তাহলে তার রাজনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। এই রাজনৈতিক দ্বৈততা শুধু বিভ্রান্তিকর নয়, তরুণদের রাজনীতির প্রতি ঘৃণা জন্মানোর অন্যতম কারণ। এমন নেতারাই রাজনীতিকে ধান্দাবাজির জায়গায় পরিণত করেছেন।
সম্প্রতি কাদের সিদ্দিকীর বাড়িতে হামলার ঘটনা নিয়ে ইউটিউবে কথা বলেন জাহের উর রহমান।
ওই ভিডিওতে কাদের সিদ্দিকী প্রসঙ্গে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
ভিডিওতে তিনি বলেন, কাদের সিদ্দিকীর বাড়িতে হামলার খবর অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সংবাদমাধ্যমে যেভাবে এসেছে তাতে দেখা গেছে, কিছু ব্যক্তি তার বাড়ির সীমানা প্রাচীর ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে, ইটপাটকেল ছোড়ে, গাড়িতে ও বাড়িতে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। এ সময় কাদের সিদ্দিকী ঘুমাচ্ছিলেন।
অল্পের জন্য বড় বিপদ এড়ানো গেছে।
তিনি আরো বলেন, ২০২৩ সালে কাদের সিদ্দিকী বলেছিলেন, শেখ হাসিনার প্রয়োজনে আরো ১০ বছর ক্ষমতায় থাকা উচিত। অথচ এখন তিনি বলছেন, গত ১৬-১৭ বছর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ ভালো চলেনি, ৯০ ভাগ অন্যায়ের জন্য শেখ হাসিনাই দায়ী।
এ হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, রাজনৈতিক মতভেদ থাকলেও এরকম হামলা গ্রহণযোগ্য নয়।
এটা শুধু রাজনৈতিক শিষ্টাচার নয়, মানুষের নিরাপত্তার প্রশ্ন। কাদের সিদ্দিকী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নিঃসন্দেহে শ্রদ্ধার দাবিদার। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ের রাজনৈতিক অবস্থান ও বক্তব্যে তিনি বিভ্রান্তিকর ভূমিকা নিচ্ছেন। এক সময় শেখ হাসিনাকে ‘বোন’ ডেকে জীবন দিতে প্রস্তুত বলেছিলেন কাদের সিদ্দিকী। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগে যোগদানেরও চেষ্টা করেছিলেন।
কিন্তু দলে তাকে গ্রহণ করা হয়নি। এরপর তাকে জামায়াতের ইফতার পার্টিতে দেখা যায়, যেখানে আগে তিনি বলেছিলেন, জামায়াতের সাথে বেহেশতেও যেতে চাই না।
জাহেদ উর রহমান আরো বলেন, রাজনীতি থেকে যদি কেউ সত্যিকারের অবদান রাখতে না পারেন, তবে তার সরে যাওয়াই শ্রেয়। রাজনীতি মানে শুধু ক্ষমতা নয়, নীতির প্রশ্ন। কাদের সিদ্দিকীর মতো কেউ যখন নিজের অতীত ও বর্তমানের মধ্যে এত বৈপরীত্য দেখান, তখন সেটা রাজনীতির পরিবেশকে বিষাক্ত করে তোলে।
তিনি বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কাদের সিদ্দিকীর ভূমিকা আমাদের ইতিহাসে স্মরণীয় থাকবে। কিন্তু বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থানে তিনি যে দ্বৈত চরিত্র দেখাচ্ছেন, সেটি তরুণদের রাজনীতি বিমুখ করে তুলছে এবং এই ধারা আমাদের রাজনীতির জন্য ভয়ংকর।
ইএ/টিকে