আজ মহান শিক্ষা দিবস। ১৯৬২ সালের এই দিনে (১৭ সেপ্টেম্বর) পাকিস্তানি শাসন, জাতিগত নিপীড়ন, শোষণ ও শিক্ষা সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে শহীদ হন ওয়াজিউল্লাহ, গোলাম মোস্তফা, বাবুলসহ নাম না জানা আরও অনেকেই। তাদের স্মরণে এই দিনকে শিক্ষা দিবস হিসাবে পালন করা হয়।
১৯৬২ সালে পাকিস্তানের সামরিক শাসক জেনারেল আইয়ুব খানের চাপিয়ে দেওয়া অগণতান্ত্রিক ও ছাত্র স্বার্থবিরোধী এ শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্র সমাজ তীব্র আন্দোলন ও সংগ্রাম গড়ে তোলে।
গণবিরোধী শিক্ষানীতি বাতিল করে সবার জন্য শিক্ষার অধিকার ও সুযোগ প্রতিষ্ঠা এবং একটি গণমুখী বিজ্ঞানমনস্ক অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক সহজলভ্য আধুনিক শিক্ষানীতি ও শিক্ষা ব্যবস্থা অর্জনের লক্ষ্যে ছাত্র সমাজ আন্দোলন জোরদার করে।
ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনের পটভূমিতে আইয়ুবের শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আগস্ট থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘটসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ১৭ সেপ্টেম্বরের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়। ব্যাপক বিক্ষোভ ও আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্র সমাজের আন্দোলনের প্রতি সাধারণ জনগণের সহানুভূতি ও সমর্থন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে।
১৯৬২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ছাত্ররা শিক্ষাকে পণ্য করার ওই শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে মিছিল বের করলে হাইকোর্টের সামনে পুলিশ গুলি চালায়। এতে শহীদ হন মোস্তফা, বাবুল, ওয়াজীউল্লাহসহ অনেকে। সেই থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও ছাত্র সংগঠন প্রতিবছর এ দিনটিকে মহান শিক্ষা দিবস হিসাবে পালন করে আসছে। তৎকালীন প্রতিক্রিয়ায় ১৭ সেপ্টেম্বর দেশব্যাপী হরতাল কর্মসূচির পরে সারা দেশে জোর প্রতিক্রিয়া ঘটে।
স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের রোষানলে পড়েন ছাত্র ইউনিয়নসহ ছাত্র ও যুব নেতারা।
১৯৬৪ সালে হুলিয়া জারি হয় ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্রলীগের নয় ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে। তারা হলেন-রাশেদ খান মেনন, হায়দার আকবর খান রনো, সিরাজুল আলম খান, কেএম ওবায়দুর রহমান, বদরুল হায়দার চৌধুরী, শাহ মোয়াজ্জেম, রেজা আলী, গিয়াস কামাল চৌধুরী ও আইউব রেজা চৌধুরী।
উদ্যাপন ও কর্মসূচি
দিবসটি উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে গণ ছাত্র সমাবেশ, শিক্ষা অধিকার চত্বরে শিক্ষা আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনা সভা ও মিছিল।
পিএ/এসএন